জ্বীনের মেয়ের সাথে প্রেম

জ্বীনের মেয়ের সাথে প্রেম

(( রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরের, ছোট্ট একটি গ্রাম লক্ষীধর পাড়া। সেখানে নদীর পাড়ে ছোট্ট একটি ঘর। ভেতরে বসবাস করত, একজন বৃদ্ধ, উনার স্ত্রী এবং তাদের একমাত্র একটা ছেলে। বৃদ্ধ যৌবন কাল থেকে জিনদের নিয়ে কাজ করে এসেছে। উনার একটা স্বপ্ন, নিজের থেকেও শক্তিশালী কোন জ্বীন উনারা বস হয়ে থাকবে, মানে জ্বীনকে উনার কাছে হার মানাবে। উনার যখন 24 বছর, সেই বয়সেই তিনি বিয়ে করে ফেলেন। বউ খারাপ না, অনেক ভালো। দেখতে মাশাল্লাহ। রূপে গুণে সব দিক দিয়েই পারফেক্ট। সেই বৃদ্ধ এর নাম ছিল আব্দুল এবং তার বউ এর নাম, সাজেদা বেগম। আব্দুল মিয়া এসব নিয়ে কাজ করতে করতে শেষ বয়সে চলে এসেছে। কিন্তু তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। আজ পর্যন্ত কোনো শক্তিশালী জিনকে উনার বশে আনতে পারেননি। হ্যাঁ অবশ্যই অনেকদিন ধরেই এসব করছে, কিন্তু উনার লক্ষ্য ছিল জিনদের রাজাকে উনার বশের মধ্যে রাখবে। ওনার টার্গেট পূরণ করার জন্য যত সাধনা, যত কাজ, যত কিছু করার করে ফেলেছেন। কিন্তু উনি ওনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এইদিকে উনার ছেলে রিয়াজের যখন 12 বছর। তখন থেকে তিনি রিয়াজকে এই পথে আনবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমি যদি কোন সময় আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারি। তাহলে আমার ছেলে আমার স্বপ্ন পূরণ করবে। সে অনুযায়ী উনি ওনার ছেলেকে এসব নিয়ে কাজ করার জন্য সব সময় বলতেন। তিনি নিজে শেখাতেন, নিজে বোঝাতেন, নিজের হাতে দেখিয়ে দিতেন কিভাবে কি করতে হয়। রিয়াজের যখন ১০ বছর, সেই বয়সেই তিনি রিয়াজকে সন্ধ্যাবেলা জঙ্গলে রেখে চলে আসত এবং বলতো, ফজরের আজান হলে বাসায় ফিরে আসবি। অনেকেরই মনে অনেক প্রশ্ন ছিল। রিয়াজের বাবা এরকম কেন করত। কিন্তু উত্তরটা শুধুমাত্র আব্দুল এর কাছে এবং উনার স্ত্রীর কাছে ছিল। আব্দুল মিয়ার উদ্দেশ্য ছিল উনার ছেলের সাহস বাড়ানোর জন্য। রিয়াজের দিনে দিনে যেন সাহস হয়, দিনে দিনে যেন সেও জিনদের নিয়ে কাজ করতে পারে। কারণ উনি ভালো করেই জানেন, জিনদেরকে নিয়ে কাজ করতে হলে সাহস দরকার অনেক। ধীরে ধীরে রিয়াজ বড় হতে লাগল। এদিকে আব্দুল মিয়া কোনভাবে উনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছেন না। আজ 23 তারিখ, 4 মাস, 2019। রিয়াজের বয়স এখন ২৩ বছর। এইদিকে রিয়াজের বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কোন মতে কোন কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে সংসারের হাল তিনি রিয়াজের ওপর দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাহলে পাঠকগণ, শুরু করা যাক এইবার। আমাদের আসল গল্পে।)) --রিয়াজ.... বাবা কই তুই --হ্যাঁ বাবা আসছি....একটু পানি খেয়ে নি -- আমার জন্য একটু পানি আসিস -- ঠিক আছে... (( গ্লাসের মধ্যে পানি ভরে আমি আব্বুর কাছে গেলাম.... তারপর বললাম ....)) --এই যে আব্বু,পানি খেয়ে নিন। ((আব্বু পানির গ্লাসের মধ্যে হালকা চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল)) -- রিয়াজ ....আমি না হয় আর অল্প কদিনেই বাঁচবো .... বেশি দিন আর নেই ....তোর মনে আছে....? আমি তোকে ছোটবেলা থেকে কি শিক্ষা দিয়ে এসেছি ....? তুই আমার মুখ উজ্জ্বল করবি এলাকার সামনে.... সবাই জানে, তোর বাবা একদিন জ্বীনদের রাজা কে বশ করবে .... কিন্তু আমি সেটা পারেনি ....তুই আমার একমাত্র ছেলে ....তুই যেভাবেই হোক আমার কাজটা সম্পন্ন করবি। আজকে থেকে আমার জায়গায় তুই কাজ করবি। এলাকার মধ্যে কবিরাজি করে সংসারটা তুই চালিয়ে নেবি। তবে আমার যে লক্ষ ....সেটাই পালন করবি। --কিন্তু বাবা .... ( কথা শেষ না হতেই) --আমি জানি যে আজ তোর কাছে এটা অনেক বড় চাপ এর কাজ .... কিন্তু আমার আশা যদি পূরণ না হয় ....আমি যে মরেও শান্তি পাব না .... --এমন করে বলো না আব্বু .... আমি তোমার ইচ্ছে পূরণ করব ইনসাল্লাহ, আমাকে দোয়া করো .... --এইটা আর বলতে...? ((আমি আব্বুর বাহুডোরে জড়িয়ে ধরলাম। কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরার পরে আম্মু বলল)) -- রিয়াজ .... একটু বাজারে যাতো ....? --কেন মা ....কিছু আনতে হবে নাকি ....? --হ্যাঁ ....পেঁয়াজ শেষ হয়ে গিয়েছে ....বাজার থেকে 1 কেজি পেঁয়াজ নিয়ে আয় .... --ঠিক আছে আম্মু,আমি এক্ষুনি যাচ্ছি .... (( আম্মু কে বিদায় দিয়ে আমি বাসা থেকে বের হলাম.. বাজারে যাওয়ার পথটা, অনেকখানি মরুভূমির মতো .... একটা নদীর পাশ দিয়ে রাস্তা .... রাস্তার পাশে বিশাল বড় বড় গাছ এবং গাছের ওপারে জঙ্গল। সবকিছু কেমন একটা ভুতুড়ে পরিবেশ.... হ্যাঁ অবশ্য ছোটবেলা থেকে আমার ভয় পাওয়ার অভ্যাস নেই ....উল্টো এসব জায়গা দিয়ে গেলে কেমন যেন আনন্দ লাগে ....এসব জায়গা দিয়ে হেটে যেতে আমার অনুভূতি গুলো অনেক ফ্রেশ হয়ে যায় .... কিছু না ভেবে আমি রাস্তা দিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি ....কিছুদুর যাওয়ার পরে দেখলাম, নদীর মাঝখানে কেউ একজন নৌকা চালিয়ে আসতেছে। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এই সন্ধ্যা বেলা কেউ যদি নৌকা নিয়ে নদীতে বের হয়, তাহলে অবশ্য নৌকার মধ্যে আলো থাকে। কিন্তু উনার নৌকার মধ্যে কোন আলোর ব্যবস্থা নেই কেন ....? মনে প্রশ্ন জাগতেই আমি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম)) -- কি ব্যাপার মাঝি .... তোমার নৌকায় আলো নেই কেন .... এভাবে অন্ধকারে ভয় করে না নাকি .... ((উত্তরে মাঝি নৌকা থেকে বলল)) --বিপদ যদি আসে ....তাহলে আসবেই ....আগে থেকে এত প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার মনে করি না। (( মাঝির এমন ঘাড়তেড়া উত্তর দেখে আমার কি রকম যেন লাগলো .... মনে হল কোন বেয়াদব হবে হয়তো। এই সন্ধ্যা বেলা মাছ চুরি করতে এসে আমার সাথে দেখা। যত্তসব চোরের সাথেই দেখা হয় আমার। এরপর আরো দুই মিনিট হাঁটার পরে দেখলাম যে আমার বন্ধু রনি দাঁড়িয়ে আছে)) -- কিরে রনি ....?এই সন্ধ্যা বেলা নদীর পাড়ে কেন তুই .... -- তুই তো জানিস ....সন্ধ্যেবেলা নদীর পাড়ে বসে বসে সিগারেট খাওয়া একটা আর্ট .... --তোর এই আর্টের জ্বালায়, কোনদিন যে আমি প্রেন্টিং এ বসে যাই, উপরওয়ালা জানে। যাইহোক ....বাজরে যাচ্ছি .... কিছু সদাই কিনব বলে ....আমার সাথে যাবি ....? --যেতে পারি এক শর্তে ....আমাকে সিগারেট কিনে দেওয়া লাগবে .... --সেটা আর বলতে ....?আমি আগে থেকে জানি ....তোর সিগারেট ছাড়া ইঞ্জিল চলে না ....আমি সিগারেট কিনে দেবো চল .... ((রনিকে নিয়ে বাজারের উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছি। বাজারে পৌঁছে আমি বাড়ির জন্য এক কেজি পেঁয়াজ নিলাম। রনিকে তিনটা বেনসন সিগারেট কিনে দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হব, এমন সময় দেখলাম একটা দোকানের মধ্যে অনেক সুন্দর একটা বাশি দেখা যাচ্ছে .... বাঁশি টা দেখে আমার পছন্দ হয়েছে বটে, ভাবলাম বাঁশিটা নিয়ে নি। যদি কোন সময় মন খারাপ হয়ে যায় .... তাহলে বাজাতে মন ঠিক করতে পারবো। আর একদিকে এলাকার আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে আমি বাঁশি বাজানো শিখে নিয়েছি। তাই চার-পাচ না ভেবে দোকানে গিয়ে বাঁশিটা নিয়ে নিলাম। আমি এবং রনি আবারো হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির দিকে প্রায় চলে এসেছি। অর্ধেক রাস্তায় আসতেই রনি বলল)) --এখন তো বাসায় চলে যাবি। নদীর পাড়ে আর একটু বস। আমি একটা সিগারেট খাই। --এদিকে রাত হয়ে যাচ্ছে ....অন্ধকারে কিছু নাও দেখতে পারি। আমাকে তো যেতে হবে দোস্ত, --তুই এক কাজ কর ....তুই আমার পাশে বসে বসে বাশি বাজা ....আমার গ্যাস লাইটের আলো দিয়ে বাসায় চলে যাস পরে। আমাকে সকালে আবার ফেরত দিয়ে দিলেই হবে।। -- এত করে বলছিস ....?ঠিক আছে .... তোর যেটা ভাল লাগে। আমি তাহলে বসে বসে বাশি বাজাচ্ছি, তুই সিগারেট খা। (( ওর কথা মতো আমি আর রনি নদীর পাড়ে বসে বসে আড্ডা জমিয়েছি। আমি বাশির সুর তুলেছি। এদিকে রনি যেন আমার বাঁশির সুরে ভাসতে লাগলো। কিন্তু একটা ব্যাপার হচ্ছে, আমি যখন বাঁশি বাযাচ্ছিলাম। তখনই আবহাওয়াটা কেমন একটা চেঞ্জ হতে লাগলো। কেউ আমার বাশি ধরে টানছে। আমি যেন বাঁশি না বাজাই সেজন্য। ভাবলাম হয়তো মনের ভুল। কিন্তু ছোটবেলা থেকে আব্বু আমাকে যে শিক্ষা দিয়ে এসেছে, সে অনুযায়ী আমি আন্দাজ করতে পারছি আমার আশেপাশে কিছু একটা আছে। আমিও দেখতে চাই আমার আশেপাশে কি আছে। না থেমে আমি আরো জোরে জোরে বাজাতে লাগলাম বাঁশি। হঠাৎ দেখলাম নদীর মাঝ বরাবর কেউ একজন বসে আছে। তাও আবার পানির উপরে। দেখতে পুরো পরীর মত। অনেক সুন্দর চেহারা। টানা টানা চোখ। যে কেউ দেখলে প্রেমে পড়ে যাবে। কিন্তু বুঝতে বাকী নেই এটা তো অন্য জগতের। সত্যি সত্যি কোন পরী। কোন জিনের মেয়ে হবে হয়তো, কিন্তু উনি এখানে কেন। আমি বাশির সুর বন্ধ করার সাথে সাথে আবার গায়েব হয়ে গেল। ভাবলাম এখন অনেক কিছুই অজানা। এত বড় রিক্স নেওয়া চলবে না। এরপর রনি কে বিদায় দিয়ে ওর হাত থেকে লাইট টা নিলাম। তারপর বাড়ীর উদ্দেশে রওনা হচ্ছি। নদীর পাড়ের বাতাস গুলো অনেক জোরে বাইছে। পানি গুলো যেন নদী থেকেই রাস্তার উপরে উঠে যাচ্ছে। আমি অনুভব করতে লাগলাম যে কোন অস্বভাবিক কিছু ঘটতে চলেছে। আর তখনই ............ ধপাস করে কেউ আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো .... কোন জিনের মেয়ে হবে হয়তো, কিন্তু উনি এখানে কেন। আমি বাশির সুর বন্ধ করার সাথে সাথে আবার গায়েব হয়ে গেল। ভাবলাম এখন অনেক কিছুই অজানা। এত বড় রিক্স নেওয়া চলবে না। এরপর রনি কে বিদায় দিয়ে ওর হাত থেকে লাইট টা নিলাম। তারপর বাড়ীর উদ্দেশে রওনা হচ্ছি। নদীর পাড়ের বাতাস গুলো অনেক জোরে বাইছে। পানি গুলো যেন নদী থেকেই রাস্তার উপরে উঠে যাচ্ছে। আমি অনুভব করতে লাগলাম যে কোন অস্বভাবিক কিছু ঘটতে চলেছে। আর তখনই ............ ধপাস করে কেউ আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো .... দ্রুত মাথা ঘুরিয়ে পিছনের দিকে তাকাই আমি। দেখলাম আমার সামনে বাতাসের মতো কিছু একটা আছে, তখন আব্বুর বলা মন্ত্রটা পাঠ করা শুরু করলাম। এই মন্ত্র পাঠ করলে নাকি অদৃশ্য কিছু কে দেখা যায়। তখনই আমি আব্বুর শিক্ষা দেওয়া সে মন্ত্রটি পাঠ করতে লাগলাম। {উং তাগুর মালা। চন্দ্র জবে শিব শংকর। ও পলনী মোরে দেলে তরিবে। না দিলে মরিবে। সাত গাং সাজুরী। উং সো পো।।} তখনই দেখলাম আমার সামনে সাদা জামা পরা কেও। পিছনে দুটো ডানা, চুল গুলো অনেক বড় বড়, মুখটা দেখতে খুবই মায়াবী, আমার চোখের সামনে যেন সাত রঙের রংধনুর সৌন্দর্য কে হার মানিয়ে একটি চেহারা দেখতে পাচ্ছি। তখনই পরী টা আমার সামনে থেকে চোখের পলকেই বাতাসের সঙ্গে মিশে গিয়ে উপরে চলে গেছে। আমি মাটি থেকে তাড়াতাড়ি করে উঠে গেছি। কিন্তু আব্বু তো আমাকে এমন কোন মন্ত্র শিখায়নি,যে মন্ত্র পড়ে আমি উপরের দিকে উঠতে পারব। যাক,, কপাল আমার খারাপ, তো আর কি করার। একি..........!!!! পেঁয়াজগুলো সব মাটিতে পড়ে গেছে। বুদ্ধি করে আমি শার্ট খুলে, এর মধ্যে সবগুলো পেঁয়াজ কুড়িয়ে কুড়িয়ে নিয়ে বাদলাম। বাড়িতে আসতেই আম্মু বলল)) -- কিরে .... তোর গায়ের শার্ট দিয়ে পেঁয়াজ এনেছিস কেন .... দোকানদার পলিথিন দেয়নি....? -- দিয়েছিল আম্মু .... অর্ধেক রাস্তায় আসতেই পলিথিন ছিড়ে গিয়েছে .... সে জন্য শার্ট এ করে নিয়ে এসেছি। (( তখনই আব্বু বলল)) -- রিয়াজ .... .... মিথ্যা কথা বলিস কেন .... তোর আম্মুর সাথে সত্যিটা বলে ফেল .... (( হালার,আব্বুর চোখে ফাঁকি দেওয়া মোটেও সম্ভব না.... এই যে ....? আমার মিথ্যা কথাটা কিভাবে ধরে ফেলেছে... তারপর আব্বু আম্মুকে আমি সব কিছু বললাম। তখনই আব্বু বলল)) --একটা কথা বলব রিয়াজ ....? -- হ্যাঁ আব্বু বলো .... --আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য একটা রাস্তা দেখতে পেয়েছি... --কিসের রাস্তা বাবা ....? --রাস্তাটা হচ্ছে এরকম .... তুই সেই পরীর সঙ্গে প্রেম করবি .... সে পরীকে তোর প্রেমের ফাঁদে ফেলবি .... এরপরে সে পরিকে তুই বিয়ে করে ফেলবি, তারপরে তোকে কি করতে হবে সেটা আমি বলে দিব .... তবে আমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য, এটাই একমাত্র রাস্তা .... --এটা কি ঠিক হবে বাবা ....? আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য একজনের মন নিয়ে খেলা করা, একজনের বিশ্বাস ভাঙ্গা, এটা কি ঠিক হবে বাবা ....? --তুই কি তোর বাবার লক্ষ্য পূরণ করতে চাস না নাকি ....?সে মেয়ের কথা চিন্তা করতে চাস,নাকি আমার কথা। --তেমন কিছু না বাবা .... ঠিক আছে, আমি তোমার কথা মতোই করব সবকিছু .... ((বাঁশি টা হাতে নিয়ে আমি ঘর থেকে বাহিরে বের হয়ে গেলাম.... মনটা খারাপ .... আব্বুর লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাকে এরকম কিছু করতে হবে.... তবে করতে হলে আমি অবশ্যই করবো.... আমার আব্বু ছোটবেলা থেকে যে স্বপ্ন দেখে এসেছে,আমি সে স্বপ্ন অবশ্যই পূরণ করব। এদিকে আমি আব্বুকে কথা ও দিয়ে ফেলেছি। আমার স্বপ্ন আমাকে পূরণ করতেই হবে .... বিলের মাঝখানে বসে বাঁশি টা হাতে নিলাম. .... আলতো করে বাঁশির ছিদ্র নিজের ঠোঁট টা স্পর্শ করলাম। এরপরে ভিতর থেকে একটা অজানা সুর তুলে বাজাতে লাগলাম। আমি যখন বাঁশিতে ফুঁ দিলাম, তখনই আগের মতো বাতাসের পরিস্থিতি টা পাল্টে যায়। চারদিক কেমন যেনো উদাস হয়ে পড়ে। আবহাওয়া একবার গরম, একবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। এইরকম ৪-৫ মিনিট যাওয়ার পর আমার পিছনে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম। চমকে উঠি আমি। পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখি পরী .... 😈 চোখ বড় বড় করে আমাকে বলছে)) --বন্ধ করে তোর বাশির সুর, তোর এই বাঁশির সুরে আমি যে আর থাকতে পারিনা .... আর একবার যদি তুই এ বাঁশি বাজাস, আমি কিন্তু তোকে মেরে ফেলবো। ((আমি সেই পরীর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলাম... এ হাসির কারণ হচ্ছে, আমি এখন মন্ত্র পড়ে তাকে বশ করতে যাচ্ছি, বাবার বলা মন্ত্র পড়ে {মাং বাদশাহ, সব বাদশাহো কে সফেদ ঘোড়া, সফেদ পাখর জিসপর চড়ে জিন্নো কে বাদশাহ বরহ কোস আগাড়ী, বারহ কোস পিছাড়ী, জো কুছ কাম কহুঁ বজালাবে, মেরী ভক্তি গুরু কি শক্তি ফুরো মন্ত্র ঈশ্বরো বাচা।”} সাথে সাথে পরীটি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে গেছে.... পরী আমার দিকে তাকিয়ে বললো)) --আমাকে বন্দী করেছিস কেন .... আমাকে এক্ষুনি ছেড়ে দে .... নাহলে তোর অনেক খারাপ কিছু হবে। -- আপনি উত্তেজিত হবেন না প্লিজ .... আপনার সাথে আমার একটু কথা ছিল.... -- মানুষদের সাথে আমি কোন কথা বলতে চাই না .... আপনি আমাকে ছেড়ে দিন .... --ঠিক আছে, তাহলে কি আপনাকে বোতলের ভিতর ভরবো ....? -- এই না .... আপনি কি জিজ্ঞেস করবেন করুন.... -- তোমার নাম কি .... --আমার নাম মুমু .... --বাড়ি কোথায় ....? --প্রক্সিমা সেন্টারিতে -- এইটা আবার কোথায় .... --এইটা উপরে .... আমাদের দেশের নাম। -- ভালো কথা, তো সেদিন আমাকে ডিস্টার্ব করেছিলে কেন .... --কখন ....? -- আমি যখন বাঁশি বাজাচ্ছিলাম তখন। আমার বাসি ধরে টান দিয়েছো কেন তুমি ....? -- তুমি বাঁশি বাজালে আমি যে থাকতে পারি না .... তুমি বাঁশি বাজালে, তোমার বাঁশির সুর যেন আমাকে বিরক্ত করে। সেজন্য আমি বারবার তোমাকে বাধা দিয়েছি। -- 1 মিনিট .... আমি এই কথা বুঝতে পারলাম না, আমার বাঁশির সুর তোমাকে ডিস্টার্ব করবে কেন.... -- সেটা আমি জানি না .... কিন্তু তুমি বাঁশি বাজালে আমি আমার দেশ থেকে তোমার বাঁশির সুর শুনতে পাই। -- আমি যখন বাঁশি বাজাচ্ছিলাম তখন। আমার বাসি ধরে টান দিয়েছো কেন তুমি ....? -- তুমি বাঁশি বাজালে আমি যে থাকতে পারি না .... তুমি বাঁশি বাজালে, তোমার বাঁশির সুর যেন আমাকে বিরক্ত করে। সেজন্য আমি বারবার তোমাকে বাধা দিয়েছি। -- 1 মিনিট .... আমি এই কথা বুঝতে পারলাম না, আমার বাঁশির সুর তোমাকে ডিস্টার্ব করবে কেন.... -- সেটা আমি জানি না .... কিন্তু তুমি বাঁশি বাজালে আমি আমার দেশ থেকে তোমার বাঁশির সুর শুনতে পাই। ((মনে মনে একটু খটকা লাগল, আমি বাঁশি বাজালে মুমু সে দেশ থেকে শুনতে পাবে কেন...... আরো কত জ্বীনের মেয়েরা তো আছে, তারা তো শুনতে পাচ্ছে না। তাহলে এই মেয়ে শুনতে পাচ্ছে কেন। তখন আমি আবার মুমুকে জিজ্ঞেস করলাম)) --তুমি কখনো কারো কাছ থেকে জানতে চাও নি .....? যে আমার বাঁশির সুর তোমাকে মুগ্ধ করে কেন .....? -- আজকেই তো মাত্র তোমার বাশির সুর শুনলাম এর আগে তো কখনো শুনি নাই। তো আমি কিভাবে কাকে বলব। -- হ্যাঁ সেটা অবশ্য ঠিক ..... তো একটা কথা বলব .....? -- কি কথা .....? --আমাকে তোমাদের দেশে নিয়ে যাবে.....? প্রক্সিমা সেন্টরিতে .....? --আমার তেমন কোন শক্তি নেই, যে আমি তোমাকে আমার দেশে নিয়ে যাব.... এখন দয়া করে আমাকে ছেড়ে দিন ..... --ঠিক আছে.. (( আমি আবার মন্ত্র পড়া শুরু করলাম {কামরুদেশ কামাক্ষা দেবী তহা বসে ইস্মাইল যোগী ইস্মাইল যোগী নে দীন্থা বীড়া পহলা বীড়া আতো জাতী} তখনই মুমু জায়গা থেকে এক লাফ দিয়ে আমার গলা চেপে ধরে। আমি আমার হাত দিয়ে মুমুর হাতটা ধরে বললাম)) -- কি করছ ..... আমার গলা চেপে ধরেছে কেন। --এতক্ষণ তোর হাতে বন্দি ছিলাম বলে তুই আমাকে যা ইচ্ছা তা বলেছিস ..... এখন তুই আমার হাতে বন্দি। মেরে ফেলবো তোকে আমি ..... 😈 ((আমি মুমুর থেকে ছাড়ার জন্য জোরাজুরি করছি,মেয়েটার হাতে অনেক শক্তি।আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে ২ জনই নিচে পড়ে গেলাম। আমার উপর মুমু পড়ে আছে। মুমু আমার উপর থেকে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি অনুভব করছি, সে যে আমার গলা চেপে ধরেছিল,, সেই হাত দিয়ে গলার মধ্যে চাপ কমিয়ে দিয়েছে। তখনই আমি চোখ টিপ দিয়ে বললাম)) -- এভাবে তাকিয়ে আছ কেন ..... প্রেমে পড়ে যাবে যে.....!! (( এটা বলার সাথে সাথে মুমু আমার গলা আবার শক্ত করে ধরে ছুঁড়ে মারে। আমি 5-6 হাত উপরে উঠে বিলের ওপাশে ছিটকে পড়ে যাই। মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে দেখি সেখানে মুমু নেই। আনমনে কেমন একটা ভিতর থেকে হাসি পেল। এরপর সেখান থেকে মাথা চুলকাতে চুলকাতে সোজা বাসায় চলে আসলাম।)) --আম্মু ..... খিদা লেগেছে তো..... কিছু খেতে দেবে না নাকি ..... --এইতো হয়ে গেছে ..... তোর আব্বুর সাথে গিয়ে বস..... আমি খাবার নিয়ে আসছি..... (( আব্বুর কাছে যেতেই আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে।)) -- কি হলো ..... এভাবে হাসছো যে .....? আমাকে জুকার মনে হচ্ছে নাকি। --তোর শরীর থেকে আমি জিনদের গন্ধ পাচ্ছি ..... তার মানে কি আমার ছেলে কাজে লেগে গেছে .....? -- বলতে পারো হ্যাঁ ..... 🙊 --তা কি করেছিস ..... ((তখন আমি আব্বুকে পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম.. আব্বু বলল)) --তাদের দেশে তো তুই নিজেও যেতে পারবি। কিন্তু সেখানে যেতে হলে অনেক সাহস দরকার... যে সাহসটা আমার ভিতর ছিল না.... তবে আমার বিশ্বাস ..... তোর সেই সাহসটা আছে। সেখানে গেলে টিকতে পারবি তুই। -- কিন্তু আমি সেখানে যাব কিভাবে ..... --খাওয়া দাওয়া শেষ করে এখন শুয়ে পড়। আমি তোকে সময় হলে বলব। --আর কি করার ..... তুমি যেতে বলছ, তাহলে এটাই হোক। ((আম্মু খাবার নিয়ে এসেছে। আমরা সবাই খেতে বসলাম একসাথে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি আমার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।কখন চোখ লেগে এসেছে বলতেও পারব না। হঠাত কেউ যেন আমাকে ধাক্কা দিচ্ছে। আমি চোখ মেলে দেখি আব্বু আমাকে জাগিয়ে তুলছে।)) --কি হল আব্বু। এভাবে ঘুমের ডিস্টার্ব করছ কেন .....? -- ঘড়িতে কয়টা বাজে দেখছিস .....?? --কেন ..... এখনো তো দশটা বাজে নি ..... --আরে আমি সকাল 10 টার কথা বলছি না ..... রাত 2 টা 47 মিনিট বাজে এখন। -- তো কি হয়েছে আব্বু --উঠে পড়, আমি তোকে সব কিছু খুলে বলছি। ((আব্বু আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাসার বাহিরে নিয়ে গেলো। নিয়ে গিয়ে বিলের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে আমাকে বলল)) -- আমি এখন যে মন্ত্র বলব, সে মন্ত্রটা পড়ে তুই চোখ বন্ধ করে ফেলবি। এরপর অলৌকিক শক্তির ধারায় তুই তাদের দেশে চলে যেতে পারবি। তারপর সেখানে গিয়ে মুমুকে একটা সারপ্রাইজ দিয়ে চলে আসবি। তার মনের ভিতর তোর জন্য কিছু জায়গা জায়গা করে আসবি। বলতে গেলে তার মন চুরি করে আসবি। -- কি .....? --জ্বী .....!! --আমি আবার কিভাবে আসবো ..... -- যে মন্ত্র পড়ে তুই যাবি, আবার সেই মন্ত্র পড়লে তুই চলে আসতে পারবি।যদি সে মন্ত্র তুই সময় মত পাঠ না করতে পারিস। মানে মন্ত্র যদি ভুলে যাস, তাহলে কিন্তু তুই কখনো ফিরে আসতে পারবি না ..... --ঠিক আছে, মন্ত্র বলো। --মন্ত্র মন্ত্র টা হচ্ছে ..... {বিস্মিল্লাহী রহিমান রব্বে ইন্নী মঙ্গল ফন্তসীর।।”} এই মন্ত্রটা পড়ে তুই চোখ বন্ধ করবি। এবং মনে মনে বলবি। তুই জ্বীনরাজ্যে যেতে চাস, তারপর তুই সেখানে চলে যেতে পারবি। আবার ফিরে আসার সময় তুই এই মন্ত্র পাঠ করবি। তখন আবার তুই এখানে চলে আসতে পারবি। --তখনই আমি আব্বুর বলা মন্ত্রটা চোখ বন্ধ করে পাঠ করতে লাগলাম.. { বিস্মিল্লাহী রহিমান রব্বে ইন্নী মঙ্গল ফন্তসীর} ((এটা বলেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম...... সাথে সাথে খেয়াল করলাম, আমার পায়ের নিচে কিছু একটা আলো সৃষ্টি হচ্ছে ..... আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে ..... আলোটা বাড়তে বাড়তে হঠাৎ আমাকে উপরের দিকে ছুঁড়ে মারলো। আমি উপর দিকে উঠতে উঠতে কোথায় যাচ্ছি আমি নিজেও আন্দাজ করতে পারছি না। অর্ধেক উঠেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর চোখ খুলে দেখি আমি একটা রাজ্যের মধ্যে আছি। চারপাশে অনেক বড় বড় রাজমহল। কিন্তু মানুষ গুলো বড়ই অদ্ভুত। তারা কেউই মাটি স্পর্শ করে চলাফেরা করছেননা। এক হাত উপরে ভেসে ভেসে চলছে। সব মেয়েরা সাদা জামা পড়ে চলছে এবং ছেলেরা পাঞ্জাবী আর পাগড়ি পড়ে হাটছে। কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা আমি স্মরণ করলাম। তার মানে আমি জিনের দেশে চলে এসেছি .....? এমন সময় কেউ আমার ঘাড় চেপে ধরল। পিছনে তাকিয়ে দেখি বিশাল বড় একটা জ্বীন। আমার থেকেও প্রায় 10 ফুট লম্বা হবে। আমাকে জিজ্ঞেস করলো)) -- এই ..... এখানে কি করছিস .....? তুই তো মানুষ ..... আমাদের জ্বীনের রাজ্যে প্রবেশ করার সাহস কোথায় পেলি ..... -- আরে ব্যাটা রাখ তোর সাহসী ..... তুই এত বড় একটা জীন হয়ে আমার মত ছোট একটা মানুষকে এভাবে ভয় দেখিয়ে কথা বলছিস ..... তুই তো ব্যাটা জ্বীনই না ..... তুই জিন জাতির কলঙ্ক ..... এখানে এসেছি মেহমান হিসেবে ..... আগে কোথায় আপ্যায়ন করবি, তা না .....? উল্টো ঝাড়ি দিচ্ছিস ..... (( কপালে কি আছে জানিনা,এনারা কখন আমাকে মেরে তক্তা বানিয়ে দেয় বলা যায় না। তবে ভয় পেলে তো আরো ভয় দেখাবে।তাই একটু কাপুরুষ থুক্কু, বীরপুরুষ গিরি করতেছি।)) --আরে .....? তোর কথাবার্তা শুনে তো মনে হচ্ছে তুই কোন সাধারণ কেউ না ..... এত সাহস পেলি কোথায় ..... -- আরে মিয়া ..... এখনও আমার সাথে এভাবে খারাপ ভাবে কথা বলছেন .....? কিছু খাবারের ব্যবস্থা করেন ..... খিদে পেয়েছে। ((তখন দেখলাম আরেকটা জ্বীন এসে বড় জিনের সাথে কানের মধ্যে কি যেন বলছিল। আমার যতটুকু ধারনা, কানে কানে তারা বলাবলি করছিল, আমার উদ্দেশ্য কি ..... সেটা জানবে..... তারপর আমাকে মারবে। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে আমিও তাদের সাথে ডোল পিটিয়ে চলছি। বড় জ্বীন আমাকে আবার বলল।)) --কি খাবি তুই ..... --এভাবে কেউ জিজ্ঞেস করে .....? খাবারের তালিকা কই ..... সেখান থেকে আমি অর্ডার করবো ..... --তোর যেটা মন চায় সেটা বল, আমরা নিয়ে আসছি.. --কিন্তু ২ টা শর্ত আছে আমার। --কি শর্ত ..... -- তোদের কাছ থেকে আমি দুইটা জিনিস চাইবো ..... সে দুইটা জিনিস যদি আমাকে দিস ..... তারপর তোরা আমাকে যেটা ইচ্ছা সেটা করতে পারবি।তার আগে যদি আমাকে কিছু করিস, তাহলে আমি ভেবে নিব, জিন জাতির কলঙ্ক তোরা। --এই ..... 😡 তোকে তো আমি এক্ষুনি ..... ..... ((তখনই পাশের জ্বীনটা বলল)) --দাঁড়াও ..... এই মানুষকে এখন কিছু করা যাবে না ..... তার কথামত আমরা চলি। না হলে আমাদের জিন জাতির অকল্যাণ হবে। ((তখন আবার সেই বড় জ্বীনটা বলল)) -- ঠিক আছে বল তোর দুইটা শর্ত কি ..... --ওই যে বললাম .....? প্রথম শর্ত আমাকে খাবার দাও ..... দ্বিতীয় শর্ত আমি খাবারের পরে বলব। -- ঠিক আছে বল কি খাবি ..... --আমি বিরিয়ানি খাব ..... -- এই বিরিয়ানি কি আবার ..... --আরে বিরিয়ানি ছিনিস না .....? ঠিক আছে, আমাকে মুরগির মাংস রান্না করে এনে দাও। ( তখনই বড় জ্বীন চোখ বন্ধ করে কি সব বলার সাথে সাথেই আমার সামনে ভাসমান একটা প্লেট এবং তার উপর চিকেন এর ভাণ্ডার। আহা ..... যদি আমি এসব মন্ত্র জানতে পারতাম। তাহলে খাবারের কোন অভাব ছিল না। আর কি ..... ইচ্ছা মত কোপাতে লাগলাম। খাবারগুলো শেষে পানি চাইলাম। আবারো আমার সামনে হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে একটা গ্লাস চলে আসলো, ভিতরে পানি ভর্তি। পানি খাওয়ার পর একটু রেস্ট নিলাম, তারপর আবার বলল)) --বল তোর দ্বিতীয় শর্ত কি..........তারপর তোকে আমরা তির তির করে মারব ....... --আরে দাঁড়ান মিয়া, আমাকে আগে বলতে তো দিবেন ....... -- ঠিক আছে বল, -- আমি এই রাজ্যের, রাজার মেয়ের সাথে দেখা করতে চাই ....... ((এইটা বলার সাথে সাথেই আশেপাশে যত জ্বীন ছিল, সবাই ভয়ঙ্কর গর্জন তুলে আমার দিকে ছুটে আসতে লাগলো। তখনই বড় জিন হাতের ইশারা দেওয়ার সাথে সাথে সবাই আবার থেমে গেছে। এরপর বড় জিন বলল)) --তুই জানিস .......?তুই কত বড় কথা বলেছিস .......? আমরা রাজার সাথে কথা বলতে হলে অনেক অনুমতি নিয়ে যেতে হয় .......আর তুই সোজা তার মেয়ের সাথে দেখা করতে চেয়েছিস .......?জানিস? এর পরিণাম কি হতে পারে .......?? --আর যদি তোদের রাজা এটা জানে, একটা মানুষকে তোরা অবিচার করে মেরেছিস, তাহলে তোদের পরিণাম কি হতে পারে .......? ((তখনই ছোট জ্বীনটা বলল)) --এই ছেলেটা তো দেখি পুরাই উল্টো ভাবে কথা বলছে ....... (( বড় জ্বীন তাকে থামিয়ে, ভেবে বলল)) -- ঠিক আছে .......আমরা চুরি করে তোকে রাজার মেয়ের সাথে দেখা করতে নিয়ে যাব ....... কিন্তু 10 মিনিট এর বেশি একটুও থাকতে পারবিনা ....... তারপর তুই আমাদের হাতে এসে ধরা দেবি। -- ঠিক আছে .......আমি রাজী....... তাড়াতাড়ি নিয়ে চল ব্যটা,,,। (( তখন বড় জিন আমাকে হাতের মুঠোয় রেখে, রাজ্যের পেছনের জানালা দিয়ে উড়ে উড়ে মুমুর জানালার পাশে নিয়ে গেল। জানালার পাশে গিয়ে, আমাকে জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বলল)) --আমি বাহিরে 10 মিনিট অপেক্ষা করছি... তাড়াতাড়ি দেখা করে আমার হাতে এসে ধরা দিবি কিন্তু ....... -- ঠিক আছে, চিন্তা করিস না... আমি আসতেছি.. ((ভিতরে গিয়ে দেখি মুমু খাটের মধ্যে ঘুমাচ্ছে। এমন মায়াবী চেহারা, এ মেয়েকে আমি কিভাবে ঠকাই, আমার তো ইচ্ছে করছে তাকে নিয়ে জনম জনম বাঁচতে। তবে আমার তো কপাল খারাপ, আব্বুর কথা মতো আমাকে করতে হবে। মুমুর কানের কাছে গিয়ে আমি আস্তে বলে উঠলাম..)) --এই মুমু ....... (( মুমু চোখ মেলেই তার জাদু শক্তি দিয়ে আমার হাত শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে।)) -- আরে কি করছো কি ....... আমি এসেছি তোমার সাথে কথা বলার জন্য .......আর তুমি আমাকে এভাবে বাধছো .......? -- তুমি কিভাবে এসেছো এখানে ....... -- তোমার জন্য তো আমি সবকিছু করতে পারি ....... --মানে .......? --ভালোবাসি তোমাকে ....... ((এটা বলার সাথে সাথেই মুমু চোখ দুটো লাল করে তার হাতের মধ্যে বিশাল বড় একটা তলোয়ার ভাসমান করল। এরপর সেটা দিয়ে আমার গলায় যেই আঘাত করতে যাবে, তখনই আমি বললাম)) --এটাই কি তোমার ভালোবাসা মুমু .......? (( মুমু থেমে গিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল)) -- আমি তোমাকে ভালবাসি, কখন বললাম... --এই যে এখন বললে .......? --কি আজব .......আমি এখন কোথায় বললাম ....... -- তুমি যে আমাকে বললে, আমি তোমাকে ভালোবাসি কখন বললাম, তো সেখানে কখন বললাম বাদ দাও... তাহলে কি হয় .......?? --ফাজিল একটা ....... তোকে তো আমি চিবিয়ে খাব ....... -- ভালোবেসে যদি আমাকে চিবিয়ে খাও, তাহলে তাতে আমার কোন আপত্তি নেই... তবে শত্রু চোখে দেখো না কিন্তু .......!! ((আমার সাথে না পেরে, মুমু আমার হাতের শিকল খুলে দেয়। এরপর আমার সামনে হাত জোড় করে বলল)) -- দয়া করে তুমি এ রাজ্য ত্যাগ করো .......এখানে তুমি থাকলে তোমার মৃত্যু অনিবার্য। --আগে তুমি বলো আমাকে ভালোবাসো .......? -- আমি তোমার কাছে হাতজোড় করে বলছি, তুমি এখন এখান থেকে যাও ....... --তুমি না বলা পর্যন্ত আমি এখান থেকে কোথাও যাচ্ছি না ....... যদি আমার মৃত্যু হয়, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই .......কিন্তু তোমার মুখ থেকে আমি ভালোবাসি কথাটা শুনেই তারপর এ রাজ্য ত্যাগ করব। --দেখো .......তুমি এখন এখান থেকে যাও, না হলে কিন্তু আমিই তোমাকে মেরে ফেলব। ((তখনই দরজার ওপাশ থেকে কেউ দরজা নক করতে লাগল... দরজার ওপাশ থেকে আওয়াজ ভেসে আসছে, "" রাজকন্যা, আপনার খাবার এসে গেছে"" ও আমার দিকে আবার তাকিয়ে বলল)) --তুমি দয়া করে এখন এখান থেকে যাও,, আমি চাইনা তোমার কোন ক্ষতি হোক ....... --কেন ভালোবাসো নাকি আমাকে .......?? --সেটা আমি জানি না, আমি এতোটুকু জানি ....... তুমি এখন এ রাজ্য ত্যাগ করবে। --এই মেয়ে দেখি ঝরনার পানির মত,একই ভাবে চলতেছেই চলতেছে, বললাম তো .......!! ভালোবাসি বলার পর আমি এখান থেকে যাব,, তার আগে নয়। ((তখনই বাহির থেকে দরজা টা আরো জোরে নক করতে লাগলো... তখনই মুমু আমার দিকে তাকিয়ে বলল)) -- হ্যাঁ ভালোবাসি তোমাকে .......এবার তো তুমি রাজ্য ত্যাগ করো ....... --এই তুমি কি বললা .......?আবার বলো .......? -- ভালবাসি তোমাকে ....... -- শুনিনি শুনিনি,আবার ঠিক করে বলো, -- ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি ....... -- ওয় হয় ওয়....৷ মেরা তো দিল লাগগায়ি.... লটারি লেগে গেছে রে ....... ((মুমুর ডান হাতটা আমি ধরে জোরে টান দিয়ে আমার বুকের ভিতর লুকিয়ে নিলাম।)) -- এই কি করছ তুমি ....... --আমাকে ভালবাসো,তাই আদর করছি। --তোমাকে আমি এখন যেতে বলেছি ....... -- ঠিক আছে যাচ্ছি .......তবে খুব শীঘ্রই আবার দেখা হবে ....... ((এটা বলে আমি দৌড়ে জানালার পাশে গেলাম.. দেখলাম বাইরে সেই জ্বীন এখনো ভেসে আছে। আমি এক লাফ দিয়ে রাজ্য থেকে জ্বীনদের মহল্লায় চলে আসছি। আবার সেই জিনদের সামনে চলে আসলাম। এবার আমার কি হবে .......?? এরা তো এখন আমাকে চিকেন তান্দুরি বানিয়ে ছাড়বে ....... --কেন ভালোবাসো নাকি আমাকে .......?? --সেটা আমি জানি না, আমি এতোটুকু জানি ....... তুমি এখন এ রাজ্য ত্যাগ করবে। -- ওয় হয় ওয়....৷ মেরা তো দিল লাগগায়ি.... লটারি লেগে গেছে রে ....... ((মুমুর ডান হাতটা আমি ধরে জোরে টান দিয়ে আমার বুকের ভিতর লুকিয়ে নিলাম।)) -- এই কি করছ তুমি ....... --আমাকে ভালবাসো,তাই আদর করছি। --তোমাকে আমি এখন যেতে বলেছি ....... -- ঠিক আছে যাচ্ছি .......তবে খুব শীঘ্রই আবার দেখা হবে ....... ((এটা বলে আমি দৌড়ে জানালার পাশে গেলাম.. দেখলাম বাইরে সেই জ্বীন এখনো ভেসে আছে। আমি এক লাফ দিয়ে রাজ্য থেকে জ্বীনদের মহল্লায় চলে আসছি। আবার সেই জিনদের সামনে চলে আসলাম। এবার আমার কি হবে .......?? এরা তো এখন আমাকে চিকেন তান্দুরি বানিয়ে ছাড়বে ...... এরপর বড়় জ্বীন আমাকে বলল)) -- তোর সব আশা তো আমরা পূরণ করেছি। এইবার তোর মৃত্যুর সময় হয়ে গেছে। ((আমি বললাম)) -- আমার মৃত্যুর সময় হয়ে গেছে.....?? অথচ আমি নিজেই জানিনা .....?? --কেন "!তোকে তো আমরা আগেও বলেছি ..... তোর দুইটা শর্ত পূরণ করার পরে তোকে আমরা মেরে ফেলবো ..... -- আচ্ছা আর একটা কথা বলি .....? -- বল ..... --আমাকে তোমরা কিভাবে মারবে .....? -- আমাদের নখ দিয়ে তোর পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলবো। (( খাইছে রে,এরা জ্বীন নাকি ডাকাত। মনে সাহস এনে আবার বললাম)) --ঠিক আছে .....তাহলে আমার একটা কথা ..... --কি কথা .....? {বিস্মিল্লাহী রহিমান রব্বে ইন্নী মঙ্গল ফন্তসীর।।”} ((এইটা বলে তাদের দিকে তাকিয়ে একটা নূরানী ভেটকি মারলাম আমি। এরপর মনে মনে বললাম "" আমি এক্ষুনি আমার বাসার সামনে যেতে চাই "" আর সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম আমার হাত পাও কেমন ধোঁয়ায় পরিণত হতে লাগলো .....সব জ্বীনরা আমাকে ধরতে আসার আগেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। চোখ মেলে দেখি আমি আমার বাড়ির সামনে। যাক বাবা .....এদের হাত থেকে বাঁচা গেল ..... এখন আব্বুর সাথে গিয়ে কথা বলি। বাসায় গিয়ে দেখি আব্বু কি যেন সাধনা করছে। আমি আব্বুর কাছে গিয়ে বললাম)) -- আব্বু কি করছো এসব। ((আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে কোন উত্তর দিল না ..... উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে বসলো)) --কি করে আসলি ..... (( আমি আব্বুকে সব কথা খুলে বলার পর আব্বু বলল)) -- সাব্বাস বাঘের বাচ্চা,এই না হয় আমার ছেলে .....? -- ইসসস,তুমি তো মানুষ, নিজেকে নিজেই বাঘ বলতেছো .....? হিহিহি (( আব্বু লজ্জা পেয়েছে মনে হয়,তারপর বলল)) -- যাই হোক .....এখন সেই জ্বীনের মেয়ে তোর প্রতি দুর্বল হয়ে যাবে .....এখন সূর্য উঠে গেছে .....দিনের বেলায় তাকে ডাকিস না ..... সন্ধ্যা হোক, তারপর কি করতে হবে আমি তোকে বলে দিব ..... --ঠিক আছে বাবা .....আর আম্মু কোথায় .....? --রান্না ঘরে আছে ..... --ওই আম্মু গো......তাড়াতাড়ি খাবার দাওনা ..... আমার খিদে পেয়েছে ..... --ঠিক আছে, আসছি.. ((সকালের নাস্তা শেষ করে আমি বাড়ি থেকে বের হলাম ..... গিয়ে দেখলাম রনি নদীর পাড়ে বসে বসে সিগারেট খাচ্ছে) -- কিরে ..... একা একা বসে আছিস কেন .....?মন খারাপ .....?নাকি নদীর পাড়ে বসে সিগারেট খাওয়ার একটা আর্ট করছিস। --মন খারাপ রে ..... -- কেন কি হয়েছে ..... -- জরিনা আমাকে 420 ভোল্টেজ ⚡ এর চ্যাকা দিয়ে বাকা করে ফেলেছে রে .....আমার মনে অনেক দুঃখ রে ..... -- আহারে .....আর বলিস না, এখন আর কি করবি ..... এখানে বসে বসে সিগারেট টান ..... এটাই ভালো ..... --হ্যাঁ, সেটাই তো করছি, মাঝখানে তুইই তো এসে পানি ঢেলে দিলি। --আজোব,আমি আবার পানি ঢাললাম কখন ..... (( তখনই পিছন থেকে কেউ বলল)) --কি .....দুই বন্ধু মিলে আড্ডা হচ্ছে নাকি .....?? (( আমি পিছনে তাকাতেই অবাক হয়ে গেলাম....)) --আরে .....!! এভাবে তাকানোর কি হলো -- তুমি এখানে .....? -- তোমাদের সাথে বসতে বলবে না .....? -- হ্যাঁ আসো, বসো। ( রনি আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলল)) -- কি ব্যাপার রিয়াজ, ভাবি কখন জোগাড় করে ফেললি। --কালকে রাতে ..... --মানে .....??!!!!! -- না মানে, কালকে রাতে খাওয়া একটু বেশি খেয়েছি তো .....? পেট ব্যথা করছে ..... --আমি তোকে কি প্রশ্ন করলাম, আর আমাকে কি উত্তর দিলি,আমাকে কি বলবি .....ভাবি কে কোথা থেকে জোগাড় করলি .....?? (( তখন আমাকে আটকে দিয়ে মুমু বলল)) -- কেন .....? রিয়াজ তোমাকে কিছু বলে নি .....? -- না ভাবি,আপনি বলেন। -- আমাদের পাঁচ মাস থেকে প্রেমালাপ চলছে। --কি বলেন ভাবি .....রিয়াজ এত বড় বাটপারি করেছে আমার সাথে .....?এর শাস্তি তো তোকে আমি দিবই (( আমি বললাম)) --বুঝলাম না .....আমাকে কি তোরা গায়ের জামা কাপড় পেয়েছিস .....?? যার যে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করবি .....? (( তখন মুমু বলল)) --আচ্ছা এখন সবাই থামো। রিয়াজ একটু এদিকে আসো ..... তোমার সাথে আমার কথা আছে ..... --কি কথা, এখানে বলো। --একটু জরুরী। -- ঠিক আছে রনি .....?তুই এখন থাক .....মুমুর সাথে কথা বলে আসছি ..... ((হাত ধরে দুজনে নদীর অন্য পাড়ে চলে এলাম। শীতল বাতাসে মুমুর চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে ..... আমি আলতো করে মুমুর চুল গুলো তার মুখ থেকে সরিয়ে নিলাম। এরপর মাথার পিছনে হাত রেখে মুমুর কপালে ছোট একটা চুম্বন একে দিলাম। মুমু চোখ বন্ধ করে আছে, ধীরে ধীরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। যেন আমার এই চুম্বনের মধ্যে সে তার সারা জীবনের সুখ খুঁজে পেয়েছে ..... এরপর আমি দূর থেকে খেয়াল করলাম আব্বু আসতেছে আমাদের দিকে .....আমি আব্বুর দিকে তাকিয়ে ভেবে পাচ্ছি না কি করব .....এখন যদি মুমুকে তাড়িয়ে দিই, তাহলে আব্বু আমাকে ভুল বুঝবে ..... আর যদি মুমুকে এখানে রাখি, তাহলে মুমুকে বন্দী করে ফেলবে। মাথার মধ্যে কিছুই কাজ করছে না আমার। কি করবো কিছু বুঝতে না পেরে, আমি মুমুকে বললাম)) -- গায়েব হয়ে যাও জলদি ..... (( মুমু গায়েব হতে যাচ্ছে, কিন্তু গায়েব হতে পারছে না। আমি চোখে দেখতে পাচ্ছি, মুমুর শরীরের চারপাশে লাল কোন আলো দেখা যাচ্ছে। যার জন্য মুমু অদ্রশ্য হতে পারছে না। তার মানে কি আব্বু মন্ত্র পড়ে মুমুকে আটকে ফেলেছে .....? আব্বু কাছে আসার আগে আমি আবার মন্ত্র পড়া শুরু করলাম, {{যতই থাকুক মন্ত্র তন্ত্র, সরে যা এখন, লাল দেওয়ালে আঘাত করছি, করিস না কৃপণ}} সাথে সাথে মুমুর চারপাশ থেকে লাল দেওয়ালটা সরে গেল। গায়েব হয়ে গেছে মুমু। এদিকে আব্বু দৌড়ে আমার সামনে এসে বলল)) -- রিয়াজ .....? এটা কি করলি রে .....? আমার এতদিনের স্বপ্ন তুই এক মুহুর্তে ভেঙ্গে দিলি .....? আমি মেয়েটাকে আটকে তার বাবাকে বশ করতাম ..... কিন্তু তুই আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলি রিয়াজ .....? -- আব্বু, আমি তোমাকে একটা কথা বলি .....এই মেয়েকে দিয়ে আমরা রাজাকে বশ করব ঠিকই। কিন্তু এভাবে না, অন্য প্লেন আছে। আমি যদি এই মেয়েকে বিয়ে করে ফেলি, তাহলে ওর বাবা কিছু করতে পারবে না। তখন না হয় তুমি তার বাবাকে বশ করে ফেলবা। -- ও আচ্ছা .....?তুই তাহলে সত্যি সত্যি মুমুর প্রেমে পড়ে গেছিস .....? আমার থেকে তোর ভালবাসা বড় হয়ে গেল .....? --সেটা জানিনা, কিন্তু যার কোন দোষ নেই .....তাকে তো এভাবে শাস্তি দেওয়া ঠিক না বাবা .....? -- আমি তোর কোন কথা শুনতে চাই না ..... আজ রাত 10 টা পর্যন্ত তোকে সময় দিলাম ..... এর ভিতর তুই এই মেয়েকে আমার হাতে দিবি। আর না হয় আমাকে আর বাবা বলে ডাকবি না। (( এটা বলে আব্বু সেখান থেকে চলে গেলো.... খুব চিন্তিত হয়ে পড়লাম .....এটা কি বলে গেল আব্বু .....? উনি তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমাকে ত্যাগ করে দিল .....? ভেতরটা জ্বলে ছারখার হয়ে যাচ্ছে, মুহুর্তে সব এমন কেন হল .....? আমি এখন কি করবো, এদিকে আব্বুর স্বপ্ন পূরণের জন্য, আমাকে এত বড় একটা অন্যায় করতে হচ্ছে ..... অন্যদিকে মুমুকে ভালোবাসি কথাটা বাদ দিলাম, তার ওপর অন্যায় করা হচ্ছে ভেবে তো আমি বেইমানি করতে পারি না। তাহলে এখন কি করবো ..... না পারছি একূলে যেতে, না পারছি ওইকূলে যেতে। মন মরা হয়ে নদীর ধারে বসে পড়লাম। পাশ থেকে নিয়ে ডিল নিয়ে পানিতে মারছি, আর ভাবছি। আমার জীবনটা এই নদীর পানির মত। কখন কোন দিকে গড়িয়ে পড়ে, বলা মুশকিল। এভাবে চিন্তা করতে করতে সারাটা দিন কাটিয়ে দিলাম। দিন টা কখন চলে গেছে বুঝতে পারেনি।খাবারের তো কোন নাম গন্ধ এ নেই। এদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে .....আমি বাসার দিকে রওনা হচ্ছি .....রাস্তা দিয়ে হাটছি কিন্তু এখনো মাথার মধ্যে সবগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে .....হেঁটে হেঁটে বাড়ির সামনে এসে দেখি আব্বু দরজায় বসে আছে ..... এমন ভাবে বসে আছে, ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে পারবেনা। যদি প্রবেশ করতে হয় তাহলে আব্বুকে সরতে হয়। আমি দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম দেখলাম, আব্বু সরছেইনা, দরজার সামনে যেভাবে বসেছিল, ঠিক সেভাবেই বসে আছে। বুঝতে পেরেছি এখনো রেগে আছে .....আমাকে বাড়ীর ভেতরে ঢুকতে দেবে না ..... সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেছে। আবার বাড়ি ত্যাগ করে বিলের পাশে এসে বসলাম। এমন সময় কারো স্পর্শ অনুভব করলাম। সাথে সাথে হাতটা ধরে টান দিয়ে দেখলাম যে মুমুর হাত। আমার ঘাড়ের মধ্যে ছিল। হাত ধরে টান দিয়ে বুকের কাছে নিয়ে আসলাম।)) -- কি, লুকিয়ে লুকিয়ে পিছনে দাড়িয়ে দেখছে কি ..... -- তোমাকে খুব অস্থির দেখাচ্ছে .....সেজন্য পিছন থেকে অনুভব করতে চাচ্ছিলাম কি ভাবছো ..... -- আর বলো না, যে চিন্তায় আছি .....? --কেন কি হয়েছে ..... --আর বলো না, আসলে হয়েছে কি ..............................? --কি হলো .....থেমে গেলে কেন ..... -- না কিছু না .....কিছু হয়নি ..... --বলো তুমি আমার কাছে ..... তোমার কথাটা বললে তো কোন সমস্যা নেই ..... (( এমন সময় খেয়াল করলাম মুমুর চারপাশে আবারো লাল রঙের দেওয়ালটা ধীরে ধীরে ভাসমান হচ্ছে... তারমানে আব্বু লুকিয়ে লুকিয়ে মুমুকে বন্দি করতেছে। মাথা ঘুরিয়ে দেখলাম, আব্বু বিলের ওপাড় থেকে দৌড়ে দৌড়ে আসছে এবং মুখ দিয়ে মন্ত্র পড়ে যাচ্ছে। এদিকে মুমুও বুঝতে পেরে গেছে, ও আমার দিকে তাকিয়ে বলল)) -- এসব কি হচ্ছে রিয়াজ .....? --দাঁড়াও .....আমি এক্ষুনি মন্ত্র পড়ে তোমাকে বাহির করে দিচ্ছি ..... ((আমি যখনই মুখ দিয়ে মন্ত্র পাঠ করব, তখনই দেখলাম যে আমার মুখের শব্দ বন্ধ হয়ে গেছে। আমি বাগবন্দি হয়ে গেছি। মুখ দিয়ে কোন আওয়াজ বাহির হচ্ছে না। তার মানে আব্বু মন্ত্র পড়ে আমাকেও জবানবন্দি করে ফেলেছে .....? আব্বু দৌড়ে এসে কি যেন পড়ে মুমুকে বেঁধে ফেলেছে। মুমু শুধু মুখ দিয়ে জোরে একটা চিৎকার মারছে। এমন সময় দেখলাম আকাশ থেকে সাদা সাদা কি যেন নেমে আসছে, বুঝতে বাকি নেই এগুলো জ্বীন রাজ্য থেকে আসছে। সবগুলো জ্বীন তুফানের গতিতে ধপাস ধপাস করে ভূমির মধ্যে প্রবেশ করেছে। সব জ্বীন চোখ মুখ লাল করে আব্বুর দিকে তেড়ে আসছে। এদিকে আমাকে আব্বু বন্দি করে রেখেছে। একটা জ্বীন দৌড়ে এসে আব্বুকে সজোরে আঘাত করতে যাবে, তখনই আব্বু মন্ত্র পড়ে সেই জ্বীনটাকে বন্দী করে ফেলেছে একটা বোতলের ভিতর। তারপর বোতলটা উপরের দিকে তুলেই আব্বু কি যেন মন্ত্র পড়তে লাগল। তখন আব্বুর মাথা থেকে প্রায় 50 হাত উপরে অনেক বড় একটা অগ্নিকান্ডের গোলা সৃষ্টি হয়ে গেছে। সবগুলো জ্বীন হাউমাউ শুরু করে দিয়েছে। এদিকে আব্বুর তৈরি করা অগ্নিকাণ্ডের গোলা তুফানের গতিতে ঘুরতেছে এবং সব গুলো জ্বীন উড়ে উড়ে আব্বুর বোতলের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। কিন্তু একটা জিন পিছন থেকে আব্বুকে সজোরে আঘাত করে ফেললো। সাথে সাথে আব্বু ডিগবাজি খেয়ে সামনের বিলে পড়ে যায়। আব্বু পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে আব্বুর বলা মন্ত্র গুলো বরবাদ হয়ে গেছে। এদিকে আমিও বন্ধি থেকে মুক্তি পেয়েছি। যাত গুলো জ্বীন বোতলে বন্ধি ছিলো,সবাই আবার ছাড়া পেয়ে যায়। জ্বীন সব দাত বের করে আব্বুকে যখনই খেতে যাবে, তখনই মুমু তার শক্তি দিয়ে সবগুলো জিনকে জোরে আঘাত করে এবং জ্বীন গুলো ছড়িয়ে ছিটকে পড়ে যায়। জ্বীন সব উঠে বলে)) -- মহারানী .....আপনাকে এই মানুষ মারতে চেয়েছে .....আর আপনি তাকে বাঁচালেন .....? -- হ্যাঁ, আমি তাকে বাচাচ্ছি। কারণ উনি আমারও বাবা। ((আব্বু মাটি থেকেই উঠে দাড়ালেন।মুমুর এসব কান্ড দেখে চোখে পানি চলে আসলো আব্বুর। বুঝতে পেরেছেন তিনি, কত বড় ভুল করতে গিয়েছেন। তখনই সবগুলো জিন আবার চলে গেল উপরে। এদিকে আব্বু মুমুর পাশে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,)) --আমাকে ক্ষমা করে দিস মা ..... আমি অনেক বড় ভুল করতে গিয়েছি ..... -- এটা তেমন কিছু না আব্বুজান ..... (( এমন সময় আব্বু মুমুর হাতে একটা চিহ্ন দেখে বলেন)) -- আরে .....!! তুমিতো শাহজানের মেয়ে ..... -- আপনি আমার আব্বু কে কিভাবে চিনেন ..... --ছোট বেলা যখন তুমি অনেক অসুস্থ ছিলে ..... তখন তোমার আব্বু তোমাকে নিয়ে আমার কাছে এসেছিল ..... তোমার শরীরে মানুষের রক্তের প্রয়োজন ছিল ..... তখন রিয়াজের শরীর থেকে তোমার শরীরে আমি রক্ত দিয়েছিলাম, এবং যে যন্ত্র দ্বারা আমি তোমার শরীরে রক্ত দিয়েছি,সেই যন্ত্রের দাগ এখনো তোমার হাতে আছে। (( মুমু তার হাতের দিকে তাকিয়ে বলল)) --তার মানে এই দাগটা এ কারণে .....?? আমি তো অনেক জানার চেষ্টা করেছি এটা কিসের দাগ ..... ((তখন আমি বললাম)) --তার মানে আমি বাঁশি বাজালে তোমারে এজন্য কুতকুতি লাগে .....? 😁 ((এটা বলার সাথে সাথে সবাই হেসে উঠলো। এমন সময় অনেক বড় কোন তুপান রুপে মুমুর আব্বু আকাশ থেকে নেমে আসলো। মুমু তার আব্বুকে থামানোর জন্য এগিয়ে যায়। তার আগেই জ্বীন শাহজাহান তার মেয়ে মুমুকে জাদু শক্তি দিয়ে বেধে পেলে। আর বলল,)) -- মানুষের চলনায় তুই অন্ধ হয়ে গেছিস ..... আমি এদেরকে শেষ করে আসছি মুমু ..... (( এটা বলে মুমুর আব্বু অলৌকিক শক্তি দিয়ে একটা ধারালো অস্ত্র নিক্ষেপ করল, আমার আব্বুর দিকে। এটা দেখে আমি দৌড়ে আমার আব্বুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। সাথে সাথেই পরিবেশ নিস্তেজ হয়ে গেল। 😩 আশেপাশের গাছ থাকে পাখি গুলো হঠাৎ করে উড়ে চলে গেল 😩 নদীর শনশন আওয়াজটাও বন্ধ হয়ে গেছে 😩 সবাই এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে 😩 কিছুক্ষনের জন্য আমি যেন সব কিছুই অনেক ঠান্ডা অনুভব করছি 😩 এমন সময় নিঃশব্দ পরিবেশের বাঁধ ভেঙ্গে মুমু জোরে চিৎকার দিয়ে বলল)) ---- ..... রিয়াজ ...............😩 (( মুমু তার আব্বুর শক্তিকে ভেঙ্গে দৌড়ে এসে আমাকে ধরে ফেলেছে, আমি আমার বুকের দিকে তাকিয়ে দেখি মুমুর আব্বুর নিক্ষেপ করা সেই আস্রটা আমার বুকের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। অনেক রক্ত ঝরছে .....আমার রক্তে পুরো বীল যেন ভরে গেছে .....মুমু আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগল ..... আব্বু পিছন থেকে আমাকে ধরে মাটিতে শুয়ালো। এরপর কান্না স্বর বলল)) --এটা কি করতে গেলি রিয়াজ .....?আমার জন্য তুই কেন আমার সামনে আসলি ..... ((এটা বলে আব্বু আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগল .....আমি তাদের কান্না স্বরের কন্ঠটা কেমন যেন ধীরে ধীরে শুনতে পাচ্ছি .....তাদের কথাই স্পস্ট শুনতে পারছিনা। মুখ আর নাক দিয়ে কেমন একটা পানি বের হতে লাগলো ..... দুটি চোখ কেমন ঝাপসা হয়ে আসছে ..... চোখের মনি নাড়ার শক্তিটাও পাচ্ছিনা। আব্বু শাহজাহানের দিকে তাকিয়ে বলল)) -- এটা তুই কি করলি .....যে আমি তোর মেয়েকে বাচানোর জন্য আমার ছেলের রক্ত দিয়েছিলাম ..... আজ সেই তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেললি .....? (( শাহজাহান চোখ বড় করে বলল)) -- কি .....এইটা রিয়াজ ছিল .....????? ((তখন শাহজাহানের আব্বু এসে আমাকে ধরে অনেক মন্ত্র পড়তে লাগলো বাচানোর জন্য,,,,,,,,, তো পাঠকগণ, হ্যাঁ আপনাকেই বলছি ..... গল্পের শুরুতে আমি যেরকম বলেছি, তারপর থেকে আপনারা পুরো গল্পটি পড়েছেন .....তারপরে কি হয়েছে জানতে চান কি .....? হুম বলছি কি হয়েছে ..... তারপর মুমুর আব্বুর মন্ত্র পড়া শেষ হওয়ার আগেই রিয়াজ চিরদিনের জন্য পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ওপারে চলে যায় .....সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ..... রিয়াজের আত্মা, তার শরীর থেকে বের হয়ে পরকালে পাড়ি জমায়। রিয়াজের আব্বু আম্মু কান্না করে অনেক। শেষে রিয়াজের দাফন শেষ হয়ে যায় .....এদিকে মুমু কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে যায় ..... এভাবেই কেটে যায় ২ বছর। দুই বছর যাওয়ার পরে জ্বীন শাহজাহান একটা জ্বীনের কাছে বিয়ে দিয়ে ফেলে মুমুকে। অন্যদিকে রিয়াজের আত্মা উপর থেকে মুচকি হাসি হেসে বলছে,, ""সত্যিই,, পৃথিবীর মায়া অনেক বেশি .....এখানে মানুষ নিজের ইচ্ছায় কিছুই পায় না .....যখন কোন কিছু পরিপূর্ণ হতে যাবে .....ঠিক তখনই বাধার ব্যাঘাত ঘটে ..... তখনই মানুষ হারিয়ে ফেলে জীবনের সব থেকে মূল্যবান জিনিসগুলো ..... যেভাবে আমি হারিয়েছি মুমুকে, আব্বুকে, আম্মুকে। তেমনই তারা হারিয়েছে আমাকে ..... ভালো থাকুক কাছের মানুষ গুলো, আমি না হয় অন্ধকারেই রয়ে গেলাম। এটাই তো নিয়তি।"" ******************************সমাপ্ত ********************
Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)