ছোয়ার স্পর্শ
-মেয়েদের প্রতি আমার কোন ফিলিংস নাই।মেয়েরা ছলনাময়ী। সেটা আমি বিশ্বাস করেছি তানহাকে ভালোবেসে, সরল মনে বিশ্বাস করে ধোকা খেয়ে।
-
তবুও আজ কোন মেয়েকে বিয়ে করতে হলো মা- বাবাকে খুশি করতে গিয়ে।
ভাবিরা জুর করে বাসর ঘরে ডুকিয়ে দিল।
-
----
এই শুনুন??? আপনাকে আমি বিয়ে করতে চাইনি মা- বাবার ইচ্ছা পুরনের জন্য আপনিকে বিয়ে করা।( ছোয়া চুপ করে সব শুনছে বাট কোন কথা বলছেনা)
-
ইসসস,,,কি ভাব??? তাইতো বলি মেয়েরা ছলনাময়ী ও অহংকারী।
বলতেই বউ আমার ঘুমটা খুলে এই কিসের মেয়েরা ছলনাময়ী? ?
আর কয়টা মেয়ে আপনের সাথে ছলনা করছে বলেন হ্যাঁ???
কয়টা মেয়েকে চিনেন আপনি??সুতরাং সব মেয়েদের বলার কোন অধিকারও নেই আপনার।
-- আমি অন্য কোন মেয়ে না আমি আপনার বিয়ে করা বউ,বুঝলেন।
-
নতুন বউয়ে মুখে এমন কথা শুনে পুরই বিচলিত হয়ে গেলাম আমি।
---- এটা কি বউ নাকি নির্লজ্জহীন কোন মেয়ে নাকি পাগলি বুঝতে পাচ্ছিনা।
-
আবার ছোয়ার কথায় আমার হুস ফিরলো।
কোন মেয়ে আপনার সাথে কি করছে আমি জানতে চাই না বাট আমার পরে আর কোন মেয়ে আপনার জীবনে আসতে পারবে না।
---- দেখ তুমি যাই বলনা কেন আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবো না।( আমাকে ধোকা দিয়ে আবার অন্য ছেলেকে,,,,,,,,
এই এই কি? আমি অন্য ছেলেকে কি??
-
না,, কিছুনা আমি ঘুমাবো সর এখান থেকে সারা দিনের দখলে ক্লান্ত হয়ে গেছি।
-
আপনি ক্লান্ত আর আমি কি??
- ওকে এত কথা বাদ দেন এখন আমার অনেক খিদে পেয়েছে আমি খাবো আমাকে খেতে দেন।
-
এই মেয়ে আমি তোমাকে খাবার দিতে যাবো কেন?? আমার কি দায় পরেছে?
-
প্লিজ সারাদিন বিয়ের জামেলায় আর সবাইকে ছেড়ে আসার কষ্টে কিছু খেতে পারিনি? ( কাঁদো কাঁদো কণ্ঠ বলছে)
-
কোন উপায় না পেয়ে খাবার ঘর থেকে কিছু খাবার নিয়ে এলাম।( এই নাও খাও আর আমাকে ঘুমাতে দেও)
-
কেন??? আপনি খাবেন না? আমি জানি আপনিও খেতে পারেননি আমাদের বাসায় কি সব খাবার আবারও লজ্জায়।
আপনি এখন আমার সাথে খাবেন,,,
এই বলে জুর করে আমার মুখে খাবার তোলে দিতে চাইতেই,,,,,,
বললামতো খাবো না (খেতে হবে নইলে আমি এখন চিৎকার করবো চিল্লাবো)
-
উপায় না পেয়ে নিজের হাতে একটু খেয়ে নিলাম( কি?? রকম মেয়ে,,রে বাবা মনে হচ্ছে দজ্জাল বউ)
-
চুপ করে ঘুমিয়ে পরলাম, আর ছোয়া নামায পড়ে পরে ঘুমাল কি না জানি না।
-
সকালে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে অফিসে যাবো এমন সময় ছোয়া বললো দাড়াঁও আপনের ট্রাইটা আমি বেধে দেই।
আমি পারবো কাউকে বাধতে হবে না।
একদম চুপ আমি জানি আপনি পারবেন তবুও আজ থেকে আমি বেধে নিবো। ট্রাইটা বেধে দিলো।। ( মন চাচ্ছিল কানে নিচে লাগিয়ে দেই দুইটা কিন্তু যেই পাগলি আবার যদি কান্না করে)
যেই চলে যাবো আসি বলে দরজার কাছে এসে গেলাম( কি ব্যাপার আপনি আমাকে কিছু দিবেন না???? জানি দিবেন না দাড়াঁন আমিই দিচ্ছি এই বলে একটা ছোট্ট টুল এনে আমার কপালে একটা ঠোটে স্পর্শ দিয়ে দিল। এই প্রথম কোন মেয়ের এমন স্পর্শ পেলাম।-( আমি ছোয়ার চেয়ে লম্বা তাই নাগাল না পেয়ে টুলে দাড়িয়ে নিল))
কি হলো এটা???
কিছুনা এখন আপনি আসেন ( আমার স্বামীকে যা ইচ্ছা তা করবো আপনের কি?)
--- মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল অফিসে যাবো তাই কিছু বললাম না। ( এগুলো করে ছোয়া কোন দিন আমার মনে জায়গা করে নিতে পারবেনা)
----- তানহাওতো আমার মনে এমন করে জায়গা করে নিয়েছিল।কিন্তু আমি কোন দিনও তার হাতটাও ধরি নাই।
অনেক ভালোবাসতাম আমি তানহাকে।
কিন্তু সব ছিল তা অভিনয়,( নইলে কি আমাকে কাদিয়ে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পরতো?))
আমার আফিসের কলিকের সাথে আমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে।
আমাকে ফাকি দিয়ে ওকে ভালোবাসতে পারতো না।
-
ভাবতে ভাবতে অফিসে চলে এলাম। আমি ব্যাংকে চাকরি করি।
-
অফিস শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।
রাতের খাবার খাওয়ার জন্য খাবার টেবিলে গেলাম।
আমি খাচ্ছি আর দেখি ছোয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে।
কি গো?? তুমি একাই খাবে খাবে আমাকে একবার জিজ্ঞাস করবানা আমি খাবো কিনা??(এতো দেখছি আপনি থেকে তুমিতে পরিনত হয়েছে প্রমশন বাড়ছে দেখি)
এখন আমাকে খাইয়ে দিবা কি না বল??
নইলে আমি চেচিয়ে কান্না করে সবাইকে এখানে আনবো।
ইসসস, কি আজিব মেয়েরে বাবা যা বলে তাই করতে হয়।
কোন উপায় না পেয়ে ছোয়াকে খাইয়ে দিলাম( জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে খাইয়ে দিলাম)
- রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে শুয়ে পরলাম। ছোয়ার দিবে আমার কোন নজরই নাই । - মাঝ রাতে কারো কান্নার শব্দ শুনে আমার ঘুমটা ভেঙে যায়।তাকিয়ে দেখি ছোয়া বিছানায় শুয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আমি আবার কারো কান্না সহ্য করতে পারি না। -----কি ব্যাপার এত রাতে কান্না করছো কেন??? ( আমাকে কি একটু শান্তিতে ঘুমাতেও দিবা না) - --- ঘুমাও আমিতো ঘুমাতে নিষেদ করি নাই। আমার ঘুম আসছেনা তাই কান্না পাচ্ছে বাড়ির সবাইকে খুব মন পরছে বিশেষ করে ছোট বোন রিদির কথা। --- ও আচ্ছা তো আর কেদো না।এখন ঘুমাও আমাকেও ঘুমাতে দাও। কেমন কে ঘুমাবো আমাকে কেউ ঝড়িয়ে না ধরলে আমার ঘুম আসে না???? সব সময় রিদি আমাকে ঝড়িয়ে ধরে ঘুমাতো( বলেই আরো বেশী করে কান্না করতে লাগলো) আমি কি বলবো আর ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না। এমন সময় ছোয়া বলবো একটু সর আমি তোমার সাথে ঘুমাবো। তুমি আমাকে ঝড়িয়ে ধরে ঘুমাবে। --- কি আমি??? এই মেয়ে নিজেকে কি মনে করো?? তোমার বউ আর কিছু না( এই বলে আমার বুকের মাঝে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।) -- কেন জানি ছোয়া পাগলিটাকে বাধা দিতে পারলাম না। তবে ছোয়ার স্পর্শে আমি জানি কেমন শীতল হয়ে গেলাম।( সত্যি একটা পাগলি কেমন বাচ্চা মানুষের মত আমাকে ঝড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।) - সকালে অফিসে চলে যাবো ট্রাই বেধে আমার কপালে একটা কিস করে দিল। তবে আজ কিছু বললাম না কেন জানি ইচ্ছা করছিল ছোয়া যদি আমাকে একটু ঝড়িয়ে ধরতো। কি কাজ করতে হবে মনে করে দৌড় দিল ছোয়া। এমনি হুচুত খেয়ে পড়ে গেল ছোয়া। পরে কান্না করতে লাগলো। দৌড়ে কাছে গিয়ে বললাম কোথায় লেগেছে। পায়ে লেগেছে মনে হয় পা টা ভেঙে গেছে। দাড়াঁতে পারছিনা,, ( কেমন স্বামী গো তুমি আমি ফ্লোরে পরে আছি একটু কোলে করেতো খাটে বসাতেও পারো) ---- হা ,,, করে কি দেখছো আমাকে কোলে নাও। নইলে সারাদিনেও আমি এখান থেকে ওঠবো না। - পায়ে ব্যথা পেয়েছে ভেবে --- তাই কোলে দিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে বললাম দেখি কোথায় লেগেছে। -- -- বলতেই খাট থেকে নেমেই দৌড় দিয়ে দরজার কাছে গিয়ে বললো আমার কোথাও লাগে নাই।( বলতে বলতে চলে গেল আমাকে বোকা বানিয়ে) - ---- অফিসের কাজে মনটা বসতে পারছিনা আজ। কেন জানি ছোয়ার কথা খুব মনে পরছে।তবে কি আমি ছোয়াকে,,, ,,,,, - - এমন সময় ফোনটা বেজে ওঠলো হাতে নিয়ে দেখি ছোয়া। ভালোই লাগছিল তবুও রাগানিত হয়ে বললাম। ----- কি হলো আমাকে কি অফিসে শান্তিতে কাজও করতে দিবা না????? ---- ---- হ্যাঁ কাজ কর তবে বাসায় একটু তাড়াতাড়ি এসো কোথাও দেবি করো না। - --- কেন তাড়াতাড়ি কেন???? -- আসলেই দেখবে??( বলেই কলটা কেটে দিল) - প্রায় সন্ধ্যা বাসায় গেলাম ছোয়া দরজা খুলে দিল। ছোয়াকে দেখেতো আমি পুরাই অভাক ছোয়া আজ সেজেছে। নীল শাড়ি মেসিগ করা সব নীল পরেছে। ছোয়াকে অনেক সুন্দর লাগছিল যদিও নীল রং আমার পছন্দ না।( আল্লাহই জানে ছোয়া আবার আজ কি প্লান করছে) - ফ্রেস হয়ে রুমে ফোন টিপছি এমন সময় ছোয়া আমাকে জুর করে ধরে ছাদে নিয়ে গেল। গিয়ে দেখি ছাদে মহা আয়োজন। - কি ব্যাপার আজ কি হয়েছে ছোয়ার কাছে জানতে চাইলাম। এমন সময় আড়াল থেকে এসে আমার বাথডের শুভেচ্ছা জানালো। - ইসসস,,বিয়ের আয়োজনে আমি আমার জন্মদিনটা ভুলে গেছিলাম। - আর জানতে পারলাম আজকের এই প্নান ও আয়োজন ছোয়া সব নিজের হাতে করেছে।আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। আজ আমি অনেক খুশি সবার ভালোবাসা দেখে। চোখে পানিও এসে গেছে।( সত্যি পাগলিটা জানে কি করে মানুষকে আপন করে নিতে হয়) কেক কেটে সবাইকে খাইয়ে অনুষ্ঠান শেষ করে রুমে এসে শুয়ে পরবো।। - তখনি ছোয়া বললো কি গো তোমার জন্মদিনে আমাকে কিছু গিফট দিবা না? - ---- আমি কেন গিফট দিবো গিফটতো দিবে তুমি??? --- আমি এত কিছু জানি না এখন তুমি আমাকে গিফট দিবে?? ---ওকে কি চাও বল?? সত্যি তুমি দেবে???? হ্যাঁ বল??? ---- আমি এখন ফুচকা খাবো আমাকে এখন বাহিরে নিয়ে ফুচকা খাওয়াতে হবে?? --- কি এত রাতে তা কেমন করে সম্ভব?? --- আমি জানি না আমাকে এখন নিয়ে যেতে হবে,( বলে বাচ্চাদের মত কাদতে লাগলো) এই কান্না করো না এত রাতে বলে মুখে ধরে ফেরলাম। কি আর করা পাগরিটাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। - রিকসায় যাচ্ছি জোসনার রাত ছোয়াকে অস্থির সুন্দর লাগছিল। ইচ্ছা করছিল ছোয়ার হাতটা একটু ধরি। ভাবতেই দেখি ছোয়া আমার হাতটা শক্ত করে ধরে ফেলল। তার পর দুই জনে মিলে ফুসকা খেয়ে বাসার ফেরার সময় বলল কি গো আমার হাতটা একটু ধরো। আমি কারো হাত ধরতে পারবো না। একবার ধরে দেখনা সারা জীবনে আর ছাড়বোনা।( বলেই আমাকে ঝড়িয়ে ধরলো আর আমার বুকে মাথা রেখে বলতে লাগলো,, - --- আমি সারা জীবন তোমার এই বুকে থাকতে চাই। ---- আমি জানি তুমি তানহাকে ভালোবেসে অনেক কষ্ট পেয়েছো । কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমাকে কোন দিন কষ্ট দিবো না আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমার অনেক আশা আমার সব ভালোবাসা আমার স্বামীকে দিবো। - --- ছোয়ার কথা গুলো শুনে আমার চোখে পানি ধরে রাখতে পারলাম না। ছোয়াকে শক্ত করে ঝড়িয়ে ধরে বললাম আমিও ভালোবাসি পাগলি তোকে।
------ সমাপ্ত-------
এক জনের পাওয়া আঘাত কখনোই অন্য কাউকে দিবেন না
0 মন্তব্যসমূহ