লাভ গেমস্ - পর্ব ৩২

লাভ গেমস্ - পর্ব ৩২

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ৩২

শোয়েবদের বাড়িটায় আজকে সাজ সাজ রব,হবে নাই বা কেন বাড়ির একমাত্র ছেলের এংগেজমেন্ট বলে কথা।বাড়ির সব কাজের লোকদের চোখে দুদিন ধরে ঘুম নেই,শোয়েব ফিরে আসলেই যে এংগেজমেন্ট পর্বটা সেরে ফেলতে হবে তাই ওর বাবা এই কয়দিন একজনকেও শান্তিতে থাকতে দেয়নি।এমনকি শোয়েবের বন্ধুদের চোখেও ঘুম নেই।পিয়াল,জিসান,সামি ওরা সবাই নিজ দ্বায়িত্বে ডেকোরেশনের তদারকি করছে তবে সবচেয়ে অদ্ভূত ব্যাপার হল বিয়ের পাত্র নিজেই সব দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে দুলে নিয়েছে।কি শুনতে আশ্চর্য লাগছে তাইতো?
আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি,আজ ভোরেই শোয়েব দেশে ফিরেছে আর ফিরে এসেই যাবতীয় দায়-দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।ডেকোরেশন,খাবারের মেন্যু,কালচারাল ইভেন্ট,লাইটিং সবকিছুই স্ট্রিক্টলি তদারকি করছে।সবাই ওকে বার বার করে রেস্ট করার জন্য বললেও ও কারোর কোন কথাই শোনেনি,যা ইচ্ছে করছে সবকিছু নিজে থেকেই করে যাচ্ছে...
শোয়েব: কি আশ্চর্য!এখানে এসব কোথা থেকে এলো?বার বার করে বলে দিলাম গোলাপ ফুল দিয়ে কোন ডেকোরেশন হবে না,বিয়ের কনের গোলাপে এ্যালর্জি আছে।আর এই যে লাইটিংতো এখনও শুরুই হয়নি!এরা যে কি করে না,সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হবে কিন্তু এখনও কোন কাজই ঠিকমত হয়নি!আমি যে কি করি এখন...
বাবা: শোয়েব বাবা,তুই একটু শান্ত হ তো,সব টাইমলি হয়ে যাবে...
শোয়েব: কিভাবে হবে?দেখছো না কি অবস্থা!
জিসান: দোস্ত তোর ফোন,সিজা...
(শোয়েব ফোনটা হাতে নিয়ে একটু সাইডে সরে আসলো)
শোয়েব: হ্যালো
সিজা: হ্যালি বাবু..কি কর তুমি?
শোয়েব: এইতো ডেকোরেশনের সবকিছু দেখছি আরকি
সিজা: কেন?সার্ভেন্টরা তো আছেই তাহলে তুমি কেন?
শোয়েব: আরে বাবা নিজের বিয়ের এংগেজমেন্ট বলে কথা,সবকিছু কি সার্ভেন্টদের হাতে ছেড়ে দেয়া যায়?
সিজা: সো...সুইট।আচ্ছা শোন তোমাকে একটা জিনিস বলার ছিল
শোয়েব: তাহলে বল
সিজা: আমি না ড্রেস সিলেক্ট করতে পারছি না।পাপা কয়েকটা ড্রেস নিয়ে এসেছে,আমি বুঝতে পারছি না কোনটা পরব
শোয়েব: যেকোন একটা পরলেইতো হল।আমি জানি তুমি যেই ড্রেস পরবে সেটাতেই তোমাকে মানিয়ে যাবে
সিজা: তবুও একটা কালার সিলেক্ট কর।রেড,ব্ল্যাক,ব্লু নাকি হোয়াইট?
শোয়েব: (একটু ভেবে)ব্ল্যাক
সিজা: কেন?তোমার না ব্লু পছন্দ...
শোয়েব: শোন স্পেশাল অকেশন তাই স্পেশাল কিছু করা উচিত।সবাইতো এ্যাভারেজে ওসব কালারই পরে,ব্ল্যাক কেউ পরে না তাই তুমিই পরবে
সিজা: ওকে জান তাই হবে।লাভ ইউ উম্মা...
শোয়েব ফোনটা রেখে দিয়ে আবারও নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল...
.
দোতলা বাড়ির নিচ তলার পুরোটাই হল রুমের মত করে সাজানো হয়েছে,গেস্টরাও সবাই চলে এসেছে।শোয়েবের বাবা সবার সাথে আলাপচারিতায় ব্যস্ত,শোয়েব নিজের রুমে রেডি হচ্ছে,বেশ কিছু্ক্ষণ আগে সিজার ফোন এসেছিল বলেছে ওরাও আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে।
শোয়েব ঝটপট রেডি হয়ে নিচে নামতেই সিজা ছুটে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল
সিজা: হাই হ্যাণ্ডসাম লুকিং হট...
শোয়েব: আরে আরে কি করছ কি করছ!সবাই দেখছে তো...
সিজা: দেখুক,আর কিছু্ক্ষণ পরেইতো আমাদের এংগেজমেন্ট সো কেউ কিছু মনে করবে না
শোয়েব: সিজা প্লিজ...
সিজা: ওকে ওকে এবারের মত ছেড়ে দিচ্ছি,নেক্সট টাইম কিন্তু ছাড়ব না বলে দিচ্ছি...
(ঠিক তখনই মাইক্রোফোনে শোয়েবের বাবার গলা শোনা গেল)
বাবা: Ladies and gentleman,May I have your attention please...
(সবার মনোযোগ এখন স্টজের দিকে)
বাবা: আপনারা সবাই জানেন আজকে আপনাদের সবাইকে এখানে কেন ইনভাইট করা হয়েছে।আজ আমার একমাত্র সন্তান শোয়েব আহমেদ মির্জার এংগেজমেন্ট...
(সবাই হাত তালি দিয়ে উঠল)
বাবা: সাইলেন্স প্লিজ..আমার আরো  কিছু বলার আছে
(সবাই আবারও মনযোগ দিল)
বাবা: অামি অনেক ভেবে তারপর একটা ডিসিশন নিয়েছি।ভেবে দেখলাম শুধু এংগেজমেন্ট কেন একেবারে বিয়েটা দিয়ে দিলে কেমন হয়?
(সবার মাঝে একটা গুঞ্জন উঠল,সিজা অবাক হয়ে শোয়েবের দিকে তাকালো তারপর ফিস ফিস করে বলল)
সিজা: রিয়েলি!আঙ্কেল কি এসব ঠিক বলছে?
শোয়েব: আই হ্যাভ নো আইডিয়া তবে বলছে যখন ঠিকই বলছে
সিজা: ও..আই এ্যাম সো এক্সাইডেড,ওয়াও বিয়ে!অল মাই ড্রিমস ইজ এবাউট টু কাম ট্রু।ইট'স এ লাকি ডে ফর মি...
শোয়েব: (বিড় বিড় করে)কতটা লাকি তা সময় হলেই বুঝতে পারবে
সিজা: কিছু বললে?
শোয়েব: উহু,বাবা কি বলছে শোন...
বাবা: আপনারা ভাবছেন আমি ফান করছি?জ্বি না আই এ্যাম সিরিয়াস।আজ ওদের এংগেজমেন্ট হবে এন্ড ঠিক দুদিন পর মানে আগামী পরশুই ওদের বিয়ে।আপনারা সবাই আমন্ত্রিত,আশা করি আজকের মত সেদিনও সবাই আমার পরিবারের এই আনন্দ আয়োজনে শরিক হবেন...
(সবাই জোরে হাততালি দিয়ে উঠল)
বাবা: আমার বয়স হয়েছে তাই ভাবছি ওদের বিয়েটা দিয়ে কোম্পানির যাবতীয় দায়-দ্বায়িত্ব সবকিছু ওদের দুজনের হাতেই তুলে দিব।আশা করি আপনারা আমাকে যেভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন,ওদেরকেও ঠিক সেভাবেই সাপোর্ট করবেন সবসময়...
আচ্ছা এখন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মুল অনুষ্ঠান শুরু করা যাক কি বলেন?
(সবাই সমস্বরে সম্মতি জানালো)
বাবা: শুরুতেই আমি স্টেজে ডেকে নেব আমার পুত্র আর ভাবি পুত্রবধূকে।Please give a round of applause for my son Shoyeb Ahmed Mirza...
(শোয়েব মঞ্চে উঠে বাবার পাশে দাঁড়ালো,সবাই জোরে হাততালি দিয়ে উঠল)
বাবা: And now my beautiful daughter-in-law...wait wait wait ভাবছি এভাবে না ডেকে তার ইন্ট্রোডাকশনটা একটু অন্যভাবে করলে কেমন হয়?
(সিজা মঞ্চে উঠতে যাচ্ছিল,হঠাৎ এই কথা শুনে থমকে দাঁড়ালো...)
বাবা: লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান,সবাই একটু রুমের বামপাশের প্রজেক্টরের দিকে তাকাবেন প্লিজ...
সবাই প্রজেক্টরের দিকে তাকালো,রুমের সব লাইট বন্ধ তারমধ্যেই বড় পর্দায় ভেসে উঠা একটা ছবিতে সবার চোখ আটকে গেল।সবাই উৎসুক হয়ে কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো...
স্কিনে দেখা যাচ্ছে সিজা আর রিশান একটা কফিশপে বসে আছে,দুজনে কোন একটা ব্যাপার নিয়ে কথা কাটাকাটি করছে।সবাই একেবারে নিরব হয়ে গেল,কেউ একজন সাউন্ডটা আরো একটু বাড়িয়ে দিল এখন স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।
রিশান: তোমার জন্য শুধুমাত্র তোমার জন্য ঐ ইনোসেন্ট মেয়েটা কি যেন নামটা ও হ্যাঁ সোমা ওকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার প্ল্যানিং করেছিলাম।প্ল্যানটা সাকসেসফুল হয়েই যেত যদি না ঠিক সময়ে ঐ শোয়েবটা চলে আসতো...
সিজা: ওহ্ হ্যালো প্ল্যানিং শুধু তুমিই করনি,আমিওতো ওকে মেরে ফেলার জন্যই পানিতে ফেলে দিয়েছিলাম শুধুমাত্র ঐ আরহামটার জন্য...
রিশান: লিসেন সিজা,তুমি যদি ঐ লুজারটার জন্য আমার প্রস্তাবে রাজি না হও তাহলে আমি ঐ শোয়েবকেও নিজের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হব...
ভিডিওটা এখানেই থেমে গেল,চারিদিকে শুনশান নিরবতা এর মধ্যেই সিজা আড়চোখে শোয়েবের দিকে তাকালো।শোয়েব মুচকি হেসে জিসান আর পিয়ালের দিকে থামসআপ দেখালো।সিজার আর বুঝতে বাঁকি থাকলো না এসব কে বা কারা করেছে।চারিদিকে সবাই ওকে আড়চোখে দেখছে,ওর বাবা অলরেডি ওখান থেকে মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেছে।সবাই ওরদিকে তাচ্ছিল্য ভরে তাকাচ্ছে আর ফিস ফিস করে গালি-গালাজ আর কটু কথা বলছে।সিজা রেগে মেগে শোয়েবের দিকে এগিয়ে যেতে নিয়েও পারলো না,দুজন মহিলা কন্সটেবল ওকে ধরে ফেলেছে
বাবা: ইন্সপেক্টর আপনি প্রুফ চেয়েছিলেন না?প্রুফ আপনার সামনেই আছে সো এ্যারেস্ট হার...
শোয়েব: বাবা একটু ওয়েট কর প্লিজ...
বাবা: কি রে আবার কি হল?
শোয়েব: ওর সাথে আমার কিছু কথা আছে বাবা
বাবা: হুম
শোয়েব: মিস সিজা,কি ভেবেছিলে?তোমার মত একটা মেয়ের জন্য আমি সোমার মত একটা মেয়ের হাত ছেড়ে দিব?
সিজা: ইউ...
শোয়েব: লিসেন সিজা,সোমার অনেক ক্ষতি করার চেষ্টা করেছো তুমি কিন্তু আর না।ওর দিকে চোখ তুলে তাকানোর আগে মনে রাখবে ওর হাজবেণ্ড এখনও বেঁচে আছে,আমি বেঁচে থাকতে ওর কোন ক্ষতি কেউ করতে পারবে না।যে চেষ্টা করবে তার হাত আমি উপড়ে ফেলে দিব...
সিজা: (দাঁতে দাঁত চেপে)কাজটা কিন্তু ভাল করলে না শোয়েব,এর ফল তোমাকে হাতে-নাতে পেতে হবে
শোয়েব: আরে যাও যাও আগে নিজেকে তো বাঁচাও তারপর আমাদের ক্ষতি করার কথা চিন্তা করবে...
সিজা: (চিৎকার করে)আমি তোকে দেখে নিব স্কাউণ্ড্রেল
শোয়েব: শাট আপ আর একটা বাজে কথা বললে না...
বাবা: বাবা তুই থাম,ইন্সপেক্টর নিয়ে যান ওকে
শোয়েব: না বাবা,ও আর একটু থাক
বাবা: কিন্তু...
শোয়েব: বাবা আমি চাই ওর চোখের সামনেই ওর সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাক।আমি চাই যাওয়ার আগে ও দেখে যাক আমার বিয়েটা কার সাথে হচ্ছে...
বাবা: হোয়াই নট?ওকে নাউ লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান,আজকের প্রধাণ আকর্ষণ আমার একমাত্র পুত্রবধূকে কি আমরা সবাই স্বাগতম জানাতে পারি?
(সবাই সমস্বরে চিৎকার দিয়ে উঠল)
বাবা: Here she comes please give her a round applause...
সিজা চোখ বড় বড় করে দেখল নীল শাড়ি পরে সোমা ওর সামনে দিয়ে স্টেজের দিকে চলে গেল,শোয়েব হাত বাড়িয়ে ওকে মঞ্চে তুলে নিল।সবাই খুব জোরে হাততালি দিয়ে উঠল।ওর চোখের সামনে ওরা দুজনে আংটি বদল করল,সিজা আর সহ্য করতে না পেরে একজন কন্সটেবলের কোমড়ে গুঁজে রাখা পিস্তল বের করে সোমাকে তাক করে গুলি ছুড়ল।জিনিসটা শোয়েবের নজর এড়াতে পারল না,ও এক ঝটকায় সোমাকে ধাক্কা দিয়ে সারিয়ে দিল।
সোমা তাল সামলাতে না পেরে একটু দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ল।একটা আহত চিৎকার শুনে শুনে চোখ তুলে তাকাতেই দেখল শোয়েব স্টেজের উপরে পড়ে আছে।ওর পুরো জামা রক্তে ভিজে গেছে আর ও যন্ত্রণায় ছটফট করছে।সোমা কোন রকমে ওর কাছে ছুটে চলে গেল,ওর পাশে বসে ওর মাথাটা নিজের কোলের উপর তুলে নিল।শোয়েব সোমার দিকে একবার তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিল তারপর চোখ বন্ধ করে ফেলল,সোমা খুব জোরে একটা চিৎকার দিল তারপর নিজেও জ্ঞান হারিয়ে ফেলল...
.
হসপিটালের করিডোরে দাঁড়িয়ে অাছে তুহিন,দুহাতে প্রোমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।খবরটা শোনার পর থেকেই কেঁদে কেঁটে অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে।শুধু তুহিন আর প্রোমাই না এখানে উপস্থিত সবারই মনের অবস্থা বেশ খারাপ।শোয়েবের বাবার অবস্থা আরো বেশি খারাপ,একমাত্র ছেলে আর আদরের বৌমার এই অবস্থা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না।তিনি করিডোরের এক কোণে একটা চেয়ারে বসে আছেন,শোয়েবের বন্ধুরা তাকে শান্ত্বনা দিচ্ছে।ডক্টর এহসানও আছেন এখানে,বন্ধুকে যতটা সম্ভব সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন...
শোয়েবকে ওটিতে নেয়া প্রায় দুই ঘণ্টা হয়ে গেল,এখনও ভেতর থেকে কেউ বাইরে আসেনি।ভেতরে কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই জানতে পারছে না ওরা,সময় যত গড়াচ্ছে উদ্বিগ্নতা যেন ততই বেড়ে যাচ্ছে।সোমার অবস্থাও খুব একটা ভাল না,তখন এত ঝামেলার মধ্যে কেউ খেয়ালই করেনি যে মেয়েটার কপালে অনেকখানি কেটে গেছে।হসপিটালে আনার পর সবাই খেয়াল করেছে,কাটা জায়গায় বেশ কয়েকটা সেলাইও দিতে হয়েছে।এই নিয়ে চারবার সেন্সলেস হয়ে গেছে মেয়েটা,প্রতিবার জ্ঞান ফেরার পর পরই শোয়েবের নাম ধরে চিৎকার করে উঠছে।তারপর কিছু্ক্ষণ পাগলের মত ওকে খুঁজছে আর না পেয়ে আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।নিরুপায় হয়ে ডক্টররা ওকে কড়া ডোজের একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছে তাই এখন ও ঘুমাচ্ছে,জাফির ওর কেবিনে ওর পাশে বসে আছে ওর দিকে খেয়াল রাখার জন্য...
সিজাকে তখনই এ্যারেস্ট করা হয়েছে,রিশানকেও ওর বাসা থেকে পুলিশ কাস্টডিতে নিয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে ওদের করা অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হবে কিন্তু বিনা অপরাধে সোমা আর শোয়েব যে শাস্তি পাচ্ছে তার বিচার কে করবে?
সবার এত টেনশনের মাঝে হঠাৎ করেই ওটির দরজাটা খুলে গেল।সবাই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর ডক্টরের কাছে ছুটে গেল...
বাবা: ডক্টর আমার ছেলেটা এখন কেমন আছে?
প্রোমা: হ্যাঁ ডক্টর চাচা বলেন না দুলাভাই কেমন আছে,উনার কিছু হবে নাতো?উনার কিছু হলে আমার আপুটার কি হবে?
তুহিন: তুমড একটু শান্ত্ব হও প্লিজ,আমি কথা বলছি।ডক্টর আপনি প্লিজ একটু খুলে বলুন উনি কেমন আছেন
ডক্টর: আসলে কিভাবে বলব ঠিক বুঝতে পারছি না..
বাবা: মানে?এহসান তুই একটু দেখনা উনি এসব কি বলছেন?
এহসান: তুই একটু শান্ত্ব হ প্লিজ,ব্যাপারটা আমি দেখছি...
ডক্টর পারভেজ আপনি একটু আমার সাথ আসুন তো
ডক্টর: জ্বি স্যার
ডক্টর এহসান ডক্টর পারভেজকে নিয়ে একটু সাইডে সরে গেলেন,ওরা কি বলছে কেউ শুনতে পাচ্ছে না কিন্তু ওদের কেন যেন মনে হচ্ছে অবস্থা খুব একটা ভাল না
বাবা: ওরা ওদিকে কেন গেল?তবে কি আমার ছেলেটার কিছু হয়ে গেল?
তুহিন: আঙ্কেল আপনি একটু শান্ত হোন প্লিজ,দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে...
বাবা: কিন্তু তাহলে ডক্টররা সাফ সাফ কোনকিছু বলছে না কেন?
জিসান: বলবে আঙ্কেল,আপনি একটু শক্ত হোন প্লিজ...
(তখনই ডক্টর এহসান ফিরে আসলো)
বাবা: কি রে উনি কি বললেন?শোয়েব ভাল আছে তো?
এহসান: তুই একটু শান্ত হ তো
বাবা: কি করে শান্ত হব বলতে পারিস?আমার একমাত্র ছেলে আর ছেলের বৌ দুজনেরই এই অবস্থা।আজ যদি শোয়েবের কিছু একটা হয়ে যায় আমার কি হবে বলতে পারিস?আর ঐ নিষ্পাপ মেয়েটা,যার সাথে শোয়েবের জীবনটা জড়িয়ে আছে কি জবাব দিব ওকে?সবাইতো শুধু আমাকে শান্ত হতে বলছিস,আমার জায়গায় থাকলে কি তোরা শান্ত থাকতে পারতি?
(ডক্টর এহসান মাথা নিচু করে ফেললেন)
বাবা: দোস্ত কিছু মনে করিস না আসলে আমার মাথার ঠিক নেই,এখন বলনা আমার ছেলেটা কেমন আছে?প্লিজ কিছু একটা তো বল আমি যে আর পারছি না...
এহসান: আমার কথাটা ঠাণ্ডা মাথায় শোন,শোয়েবের অবস্থা খুব একটা ভাল না।গুলিটা বুকের বাঁপাশে লেগেছে।লাকিলি হার্টের কোন ক্ষতি হয়নি,একটু উপরের দিকে লেগেছে তাই একটা চান্স আছে।কিন্তু হার্টের মাংশপেশীতে বেশ আঘাত লেগেছে,যাই হোক গুলিটা বের করা হয়েছে এখন দেখা যাক কি হয়...
বাবা: না এ হতে পারে না,আর দেখা যাক কি হয় মানে কি?
এহসান: এখন আল্লাহকে ডাক,উনিই একমাত্র কিছু করতে পারেন।২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি জ্ঞান ফিরে আসে তাহলেতো ভাল নাহলে হয়তো আমরা ওকে....

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ