লাভ গেমস্ - পর্ব ৩১

লাভ গেমস্ - পর্ব ৩১

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ৩১

সোমার পুরো শরীর থর থর করে কাঁপছে,হার্টবিটও বেড়ে গেছে,অজানা একটা ভয়ে ভেতর থেকে গ্রাস করে ফেলছে ওকে।রিসিভ করব কি করব না করতে করতেই কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা কানে ধরল সোমা,কিছু বলার আগেই শুনতে পেল...
সিজা: হ্যালো বাবু...তুমি কবে আসবা বলতো?খুব তো বলেছিলে ওই গাঁইয়াটার থেকে ডিভোর্স পেপারে সাইন করিয়ে নিয়েই চলে আসবে,তাহলে এখনও আসছো না কেন?আচ্ছা ওকি এখনও সাইন করেনি নাকি?তুমি না পারলে বল আমি নিজে সব ব্যবস্থা করে নিব,সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল কিভাবে বাঁকাতে হয় আমার জানা আছে...
(সিজার কথা শুনে সোমার যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে,মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না)
সিজা: বাবি তুমি যত তাড়াতাড়ি পারো চলে আসো,আমি আমাদের বিয়ের জন্য খুবই এক্সাইটেড।এংগেজমেন্টের সব ব্যবস্থা অলরেডি হয়ে গেছে,এখন শুধু তোমার আসার অপেক্ষা।কি হল জান তুমি কথা বলছো না কেন?হ্যালো হ্যালো...
সোমা ফোনটা নামিয়ে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে,ঠিক তখনই শোয়েব রুমে ঢুকলো।ওকে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে উঠলো,ছুটে চলে আসলো ওর দিকে...
শোয়েব: এই তোমার কি হয়েছে?এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?আশ্চর্য!কি হয়েছে বলবে তো...
সোমা চমকে উঠে শোয়েবের দিকে তাকালো তারপর হাতে থাকা ফোনটা আস্তে আস্তে ওর দিকে বাড়িয়ে ধরলো....
শোয়েব: (অবাক হয়ে)কি?ফোন দিচ্ছো কেন?কেউ কি ফোন করেছিল?
সোমা: হুম
শোয়েব: (ফোনটা হাতে নিয়ে)কে?
সোমা শোয়েবের কথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপচাপ গিয়ে সোফায় বসে পড়ল।শোয়েব একবার কললিস্টে চোখ বুলাতেই বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠল,যে ভয়টা পাচ্ছিলো তাই হয়ে গেছে।সিজা ফোন দিয়েছিল,কল ডিউরেশনটাও বেশ লম্বা,শোয়েব মনে মনে হিসেব কষছে,
"না জানি এই মেয়ে কত কি বলে দিয়েছে যে কারণে সোমা এমন নির্বাক? হয়ে আছে।সে যাই হোক সোমাকে আমি ম্যানেজ করে নিব কিন্তু ওদিকের ব্যাপারটাও তো দেখতে হবে,নাহলে যে সব প্ল্যান ভেস্তে যাবে..."
শোয়েব ঝটপট সিজার নাম্বারে ডায়াল করল...
সিজা: হ্যালো বাবু...তোমার কি হয়েছে?তখন কথা বলছিলে না কেন?
শোয়েব: ঐ মনে হয় নেটওয়ার্কের একটু  প্রবলেম ছিল তাই শোনা যাচ্ছিল না...
সিজা: আচ্ছা বাদ দাও,এবার বল সোমা কি ডিভোর্স পেপারে সাইন করেছে?
শোয়েব: না করে আর যাবে কোথায়?
সিজা: (খুশি হয়ে)সত্যি বলছো!এত ইজিলি সব মেনে নিল!
শোয়েব: এক ইজিলি কি কেউ মানে!অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে...
সিজা: যাই হোক সাইন করেছে এটাই বড় কথা,আমি আজকে অনেক অনেক খুশি...
শোয়েব: তুমি খুশি থাকলে আমিও খুশি
সিজা: তুমি তাহলে তাড়াতাড়ি চলে এসো,আমিতো এদিকে সবকিছু রেডি করে রেখেছি
শোয়েব: এইতো আর কয়েকদিন পরেই চলে আসবো,এদিকের কাজটা একটু গুছিয়ে নেই...
সিজা: ওকে ওকে টেক ইয়োর টাইম এন্ড লাভ ইউ...
শোয়েব: লাভ ইউ টু বেবি...
ফোনটা নামিয়ে রেখে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল শোয়েব,তারপর সোমার দিকে তাকালো কিন্তু একি ওতো সোফায় নেই।চারপাশে তাকাতেই দেখল ও বিছানায় শুয়ে আছে,আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে গেল শোয়েব।বেশ কয়েকবার ওর নাম ধরে ডাকলো কিন্তু কোন সাড়া-শব্দ নেই,এবার গায়ে হাত দিয়ে একটু নাড়া দিল আর তার সাথে নাম ধরে ডাকাডাকিতো আছেই কিন্তু কোন সাড়া-শব্দ নেই।তবে কি ও সত্যি সত্যিই ঘুমিয়ে পড়েছে?কিন্তু ওতো এমন হুট করে ঘুমানোর মত মেয়ে না,আর এমন ডাকাডাকি করলেতো এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার কথা!তাহলে কি সিজা ওকে উল্টো-পাল্টা কিছু বলেছে?ও কি আমাকে ভুল বুঝলো?ও কি তবে আমার সাথে এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে চাইছে না?এমন হাজারো প্রশ্ন শোয়েবের মনে উঁকি দিচ্ছে যার জবাব একমাত্র সোমাই দিতে পারবে...
(রাত ২টা)
শোয়েব এখনও সোমার মাথার কাছে বসে আছে,সোমা ঘুমাচ্ছে কিন্তু ঘুমটা ততটা গভীর নয়।মাঝে মাঝেই কেমন যেন উসখুস করছে মেয়েটা।সোমার দিকে তাকিয়ে শোয়েবের আরও খারাপ লাগছে,মন চাইছে এক্ষুণি ওকে ঘুম থেকে উঠিয়ে বলে...
"তুমি আমার সম্পর্কে যা কিছু ভাবছো সবই ভুল,আমি শুধুমাত্র তোমাকেই ভালোবাসি আর কাউকে না।তাই আমাকে ভুল বুঝে নিজেকে শুধু শুধু কষ্ট দিও না প্লিজ..তোমাকে কষ্ট পেতে দেখলে যে আমারো অনেক কষ্ট হয়..."
শোয়েবের ঘুম ভাঙল বেশ দেরি করে,ঘুম ভেঙে দেখল বালিশে মাথা দেয়া আর গায়ে পাতলা একটা চাদর।রাতে কখন ঘুমিয়েছে ঠিক মনে করতে পারছে না ও কিন্তু ঘুমানোর সময় যে বালিশ,চাদর কোনটাই ইউজ করেনি সেটা ঠিকই মনে আছে।তারমানে এ সবই সোমার কাজ,আনমনে মুচকি একটা হাসি দিল শোয়েব তারপর বিড়বিগ করে বলল...
শোয়েব: আমার পাগলি বউটা,বরটার উপর রাগ করে আছে তবুও তার যত্ন আত্তির কোন কমতি রাখেনি...
বিছানা থেকে উঠে বসল শোয়েব তারপর সোমাকে ডাকতে লাগল...
শোয়েব: সোমা...আমার মিষ্টি বউটা কই?
(ওদিক থেকে সোমার কোন জবাব আসলো না)
শোয়েব: সোমা...এই সোমা...কই তুমি?একবার এদিকে এসো প্লিজ...
তবুও কোন উত্তর মিলল না,শোয়েব এবার একটু চিন্তায় পড়ে গেল।বাথরুম,বারান্দা কোথাওই নেই মেয়েটা তাহলে কোথায় গেল?ঝটপট ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়ল শোয়েব,হোটেলের লবিতে বা রিসিপশনে কোথাওই সোমার কোন অস্তিত্ব নেই।এবার হোটেল স্টাফদেরকে সোমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে শুরু করল শোয়েব,সবার কাছে হতাশ হয়ে যখন হাল ছেড়ে দিয়েছে ঠিক তখনই একজন বলল সোমা নাকি সেই ভোরবেলায়ই হোটেল থেকে বেরিয়ে গেছে।ঠিক কোনদিকে গেছে ঠিক জানেনা,উনার কথা শুনে শোয়েবের মাথাটা রীতিমত খারাপ হয়ে গেল।এই অজানা অচেনা শহরে মেয়েটা একা একা কোথায় গেল?বুঝতে পারছি আমার উপর খুব অভিমান হয়েছে কিন্তু তাই বলে এমন একটা কাণ্ড করে বসবে!এখন আমি কি করি?কোথায় খুঁজি ওকে?আমি মনে হয় পাগল হয়ে যাব,এই পাঁজি মেয়েটা আমাকে পাগল করে ছাড়বে দেখছি!একটাবার শুধু পাই ওকে,তাহলেই বুঝবে আজকে ওর একদিন নাকি আমার একদিন...
মনে মনে মনে এসব বিড়বিড় করতে করতে সি-বীচের দিকে ছুটল শোয়েব...
পাতায়া সি-বীচের পাশেই ছোট্ট একটা পার্কে বসে আছে সোমা,শোয়েবের উপর রাগ করেই চলে এসেছে এখানে।রাতে শোয়েব সিজাকে যা যা বলছিল তার সবই শুনেছে ও,সিজার বলা কথাগুলো শুরুতে মিথ্যা মনে হলেও শোয়েবের কথায় ও বুঝতে পেরেছে যে মেয়েটা যা বলেছে সবই সত্যি।শোয়েবের সাথে যাতে এ ব্যাপারে কোন কথা না বলতে হয় সেজন্যেই ঘুমের ভান করেছিল,শোয়েব অনেকবার চেষ্টা করেছে ওর ঘুম ভাঙানোর কিন্তু জেগে থাকা ঘুম ভাঙানো কি এতই সহজ!
সে যাই হোক কোন রকমে রাতটা পার করে ভোর হতেই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়েছে,উদ্দেশ্য একটাই শোয়েবের সামনা-সামনি যাতে না পড়তে হয়...
হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রথমে সি-বীচের দিকেই গিয়েছিল সোমা,কিন্তু সকালের দিকে এদিকটায় একটু বেশিই যেন ভীড় মনে হচ্ছিল ওর কাছে আর এই মুহূর্তে ওর খুব নিরিবিলি একটা জায়গা দরকার ছিল,যেখানে বসে মন খুলে কান্না করা যাবে।তাই কোনকিছু না ভেবেই উদ্দেশ্যবিহীনভাবে হেঁটে যাচ্ছিল।বেশ কিছু্ক্ষণ হাঁটার পর হঠাৎ করেই এই পার্কটা চোখে পড়ল ওর,কোনকিছু না ভেবেই ঢুকে পড়ল এখানে...
সারারাতে জমানো কষ্টগুলো কান্না হয়ে ঝরতে লাগলো।সোমা কিছুতেই মানতে পারছে না যে শোয়েব আবারও ওর সাথে এমন ডাবল ক্রস করল!ওর দেয়া প্রথমবারের আঘাতগুলো ভুলে নতুন করে ওর প্রেমে পড়তে শুরু করেছিল কিন্তু ও...
একবার শোয়েবের উপর রাগ হচ্ছে আবার মনে হচ্ছে ওর কোথাও ভুল হচ্ছে,ও হয়তো শোয়েবকে ভুল বুঝছে।কিন্তু তা কি করে সম্ভব!এমন কিছু হলে ঐ মেয়েটা কি করে ওর এখানকার নাম্বার পেল?যেখানে আমি ওর ওয়াইফ হয়েও ওর নাম্বার জানিনা সেখানে ঐ মেয়েটা কি করে...
আর তাছাড়া ওকে বলা শোয়েবের ঐ কথাগুলো...আর কিছুই ভাবতে পারছে না সোমা,মাথাটা কেমন যেন ভারি ভারি লাগছে।একটু চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সেটাতো সম্ভব না তাই মাথা নিচু করে নিরবেই চোখের জল ফেলতে লাগল...
.
পার্কের এই পাশটাতে তেমন লোকজন নেই,সকালবেলা তাই মানুষ জনের আনাগোনা একেবারে নেই বললেই চলে।স্থানীয় কিছু বখাটে ছেলে অনেক্ষণ ধরেই খেয়াল করছে পার্কের কর্ণারের দিকের একটা বেঞ্চে একটা মেয়ে একা একা বসে আছে।অনেক্ষণ ধরেই মেয়েটার দিকে খেয়াল রেখেছে ওরা,নাহ্ এতক্ষণে কাউকেই ওর কাছে আসতে দেখা যায় নি।নিজেদের মধ্যে আরো কিছু কথা বলে ওরা ধীরে ধীরে মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেল...
-Hey baby,why are you sitting alone here?
সোমা: Excuse me...
-Give us a chance to accompany you...
-Believe us you will enjouy our company baby...
সোমা: Just leave me alone please...
-It's not possible sweetheart.Ok let's make a deal you should give us pleasure and we will please you...
সোমা: I don't need this,please let me go...
সোমা উঠে চলে যাওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু ছেলেগুলো ওকে যেতে দিচ্ছে না,ওর হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে।সোমা যতই ছাড়ানোর চেষ্টা করছে ওরা ততই আরো জোরে ওকে চেপে ধরছে...
.
সি-বীচে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সোমার কোন খোঁজ পেল না শোয়েব,ওকে না দেখতে পেয়ে পাগলের মত এদিক-সেদিক খুঁজতে লাগল।চারপাশে খুঁজতে খুঁজতে যখন হতাশ হয়ে একটা পার্কে এসে বসে পড়ল তখনই জিনিসটা ওর চোখে পড়ল।
চার-পাঁচটা ছেলে একটা মেয়েকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে,মেয়েটাকে স্পষ্ট দেখা না গেলেও আবছা ভাবে ওর ড্রেসাপ দেখে যেটুকু বুঝলো,মেয়েটা এদেশীয় না,মনে হচ্ছে কোন ট্যুরিস্ট।কিন্তু ট্যুরিস্ট হলে একা একা এমন নির্জন পার্কে কি করছে?আরেকটু খতিয়ে দেখার জন্যেই সামনের দিকে এগিয়ে গেল শোয়েব,মেয়েটাকে দেখেইতো ওর মনটা আনন্দে ভরে উঠলো।ওর সামমনে সোমা দাঁড়িয়ে আছে,মন থেকে আনন্দের রেশ কাটার আগেই দেখলো ছেলেগুলো সোমার হাত চেপে ধরেছে,ওর সাথে অসভ্যতামি শুরু করেছে।মাথায় রক্ত উঠে গেল শোয়েবের কিন্তু মনে মনে নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করল...
"এটা বিদেশ,শুধু ঝামেলায় জড়ানো ঠিক হবে না।মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করতে হবে..."
.
সোমা: What are you doing?I said leave me alone...
শোয়েব: বেবি তুমি এখানে?সেই কখন থেকে তোমাকে খুঁজছি,রাগ করে এমন কাণ্ড কেউ করে কখনও!
শোয়েবকে দেখে সোমার হারানো শক্তি ফিরে এলো,ঐ ছেলেগুলোও চমকে উঠে ওর দিকে তাকালো।সেই সুযোগে সোমা ছুটে গিয়ে শোয়েবকে জড়িয়ে ধরলো আর শোয়েবও পরম মমতায় ওকে নিজের সাথে আঁকড়ে ধরলো।সোমা কান্না করছে দেখে ওর চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বলল...
শোয়েব: ভয় পাচ্ছো কেন?আমিতো আছি তাইনা?
-Hey you,stay away from us
শোয়েব: No I won't.You should not done this to her...
-Who the hell are you?
শোয়েব: I am her husband
ছেলেগুলো শোয়েবের কথায় হকচকিয়ে গেল,কিছু বলতে যাবে তখনই পুলিশের গাড়ির হুইসেল শুনে ওখান থেকে ছুটে পালালো।ওরা চলে যাওয়ার পর শোয়েব নিজের ফোনটা বের করল তারপর রিংটোনটা অফ করে সোমার দিকে ফিরে তাকালো।সোমা তখনও শোয়েবকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।
.
শোয়েব আর কোন কথা না বলে সোমার হাত ধরে টানতে টানতে ওকে হোটেলে নিয়ে গেল,সোমাও কোন বাঁধা দিল না।রুমে ঢুকেই...
শোয়েব: এসব কি ছিল সোমা?হঠাৎ এমন কেন করলে?
সোমা:....
শোয়েব: কি হল কথা বলছো না কেন?আমিতো কিছু জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও...
সোমা: আমার ভাল লাগছে না আমি গেলাম
শোয়েব: (দাঁতে দাঁত চেপে)কোথাও যাবে না তুমি।আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দেবে তারপর যাবে...
সোমা কিছু না শোনার ভান করে ওখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল।শোয়েবের ধৈর্যের বাঁধ এবার ভেঙ্গে গেল,রাগের মাথায় ওকে চড় মেরে বসলো।সোমা অবাক হয়ে শোয়েবের দিকে তাকালো...
শোয়েব: সব সময়...সব সময় এক লাইন বেশি বোঝ তুমি।সেদিন সিজা আর রিশানের কন্সপিরেসি ধরতে পেরে কাউকে কিছু না বলেই বাড়ি ছেড়ে চলে এলে!কেন আমাকে সবকিছু খুলে বলতে পারতে না?তাহলে আমরা দুজনে মিলে কিছু একটা উপায় বের করতে পারতাম...
সোমা:...
শোয়েব: আর আজ কোনকিছু না বলেই এভাবে বেরিয়ে গেলে,আমি যদি ঠিক সময়ে ওখানে উপস্থিত না হতাম তাহলে তোমার কি অবস্থা হত একবার ভেবে দেখেছো?যদি খারাপ কিছু হয়ে যেত...
সোমা গালে হাত দিয়ে বসে পড়ল,তারপর মাথা নিচু করে নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো।ওকে কাঁদতে দেখে শোয়েবের চোখেও পানি চলে আসলো,ওর সামনে মেঝেতে পা ভাঁজ করে বসে ওর দুটো হাত ধরে বলতে শুরু করল...
"এমন কেন কর বলতো,তুমি কি বোঝ না তোমার জন্য কেউ একজন টেনশনে অস্থির হয়ে থাকে?আজ যদি তোমার কিছু একটা হয়ে যেত তাহলে আমার কি হত ভেবেছো?"
সোমা: (ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে)কিন্তু সিজা...
শোয়েব: সরি জান,সিজার ব্যাপারটা এখনই তোমাকে কিছু বলতে পারব না তবে তোমার কাছে একটাই রিকুয়েস্ট এতদিন যখন আমাকে বিশ্বাস করেছো,আর কয়েকটা দিন আমার উপর বিশ্বাস রাখো প্লিজ....
সোমা:...
শোয়েব: দেখো সোমা আগে আমি কেমন ছিলাম ততার সবই তুমি জানো।তোমার ভালোবাসা দিয়ে এই অমানুষটাকে মানুষ করে তুলেছো,বিশ্বাস করো আমি শুধুমাত্র তোমাকেই ভালোবাসি।তোমার জায়গাটা সিজা কেন আর কেউই কখনও নিতে পারবে না।একটা শেষ সুযোগ দাও আমাকে নিজেকে প্রমাণ করার।কি পারবে না শেষ বারের মত এই শেষ একটা কাজে আমার পাশে থেকে আমার হাতে হাত রেখে একসাথে এগিয়ে যেতে?

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ