অধিকার নেই পার্ট:02

অধিকার নেই পার্ট:02

স্টোরি:অধিকার নেই
W; আফসানা মিমি
পার্ট:02
নীড়; এখন আমার যেতে হবে।
অর্ক:আমি সাথে আসি ।একা ছাড়তে চাচ্ছি না।গেইট পর্যন্ত যাবো।
নীড়:কেও দেখেফেললে
অর্ক:ফেলবে না আসা রাখি অনেক রাত হয়ে গেছে এখন কারো চোখে পড়বে না আসা করি।
নীড়:হুমম
অর্ক:ঐযে লাল নীল বাতি জ্বালানো ঐটা তোমাদের বাসা
নীড়:হুমমম
অর্ক:জানো আমি না তোমার মত খুব একটা অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলি না।একটু রিজার্ভ টাইপের বলতে পারো।আর বিশেষ করে মেয়েদের সাথে কথা বলতে গেলে একদম বকলম।কিন্তু তোমার সাথে সামনা সামনি এতো ফ্রীলি কথা বলতে পারবো জানা ছিল না।কারণ আমরা ফোনে তিন দিন কথা বলেছি রোজ খুব বেশি হলে 6,7 মিনিট।তাই না
নীড়;হুমম আচ্ছা আপনার gf ছিল না?
অর্ক;gf রাখার সময় সুযোগ মন পেলাম কৈ
নীড়; কেনো আপনার জীবন কি খুব দৌড়ানি মূলক ।
অর্ক:বাবা ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের হেড পড়া নিয়ে খুব সিরিয়াস থাকতে হতো।ssc পর ঢাকা পারি দেই।সেখানে অবশ্য কোচিং এর এক মেয়েকে ভালো লাগতো।কিন্তু কখনো মনের ভাবের আদান প্রদান করা হয়নি।আমি সাহস পায়নি বলতে।এ ভালো লাগা নিয়ে hsc শেষ করি।বাবা স্টক করে ঘরে বসে পরে।বড় ভাই সঙ্গ দোষে খারাপ হয়ে বাজে নেশায় পরে।বিয়ে করে নিজের পছন্দে বউ করে ঘড়ে তুলে দুই বছরের মধ্যে ধর্য বাঁধ ভেঙ্গে ভাবি বাড়ি ফিরে যান।hsc শেষ করে সংসার এর হাল ধরতে মামার কাছে ফ্রীল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসায় চলে যাই।দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর কাল বাড়ি ফিরি ।কারণ বাবা শরীর ভালো যাচ্ছে না।তার সব স্বপ্ন এখন আমায় ঘিরে।তাই মাকে বলি এক মাসের মধ্যে মেয়ে খুঁজো।বিয়ে করতে আসছি একমাসের জন্য।এতো দিন কোন মেয়ে পায়নি ফাইনালি আমি আসার এক সপ্তাহ আগে পেয়েছে।চার দিন আগে তুমাকে দেখে সব ঠিক করে যায়।তিন দিন আমরা প্রায়  7,8মিনিট করে কথা বলি।কাল বাংলাদেশে এসে শপিং করি বিয়ের আজ তোমাকে দেখতে আসি। আর কাল আমাদের বিয়ে।
নীড় একটু লজ্জ্বা পেল ওর চাহনি আর হাঁসি টা দেখে।
অর্ক:বাই দা ওয়ে তোমার bf ছিল না
নীড়; সে সুযোগ বাবা রাখেনি।
;;;;কেনো
:বড় ভাই বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে দূর সম্পর্কে খালাতো বোন কে বিয়ে করে ইতালিতে সেঁটেল আছে ।বড় বোন  পালিয়ে যায় সেও দেশের বাইরে এখন ছোট একটা মেয়ে হয়েছে।বড় ভাবীর সাত মাস চলে।এ সব কারণে বাবা আমাকে নিয়ে একটু বেশি ইনসেকুড়িটিতে ভোগে।আসলে বড় দুইটা বাবাকে কষ্ট দিয়েছে তাই আমাকে নিয়ে সে বেশি মাথা ঘামায়।আর বাবা অনেক পাজি ভয় করে বাবাকে।আর বাবাকে ফাঁকি দিয়ে কিছু করার সাহস পাই না।কারণ বড় দুইটা কষ্ট দিয়েছে বলে বাবা আমার দিকে দুর্বল হয়েছে।আগে এতটা আদর করত না।এখন আম্মা জান ছাড়া আমার সাথে কথা বলে না।তাই সাহস করে প্রেম করিনি।বাবাকে কথা দিয়েছি আমি তার ইচ্ছের বাইরে এমন কিছু করবো না।(বলবো নাকি আমিও গত চার বছর পর বাংলাদেশ আসছি।সে ক্লাস নাইনে ফাইনাল দিয়ে দেশ ছেড়েছি।প্রায় আট মাস ধরে আসছি,নাহ থাক বলার দরকার নেই।নাহ বলি )
অর্ক:প্রায় চলেই এলাম
হুমমম
::::আমার শার্ট খুলে দেও
কেনো
;;;;,আমি পরে যাই'তুমি তো এখন বাসায় চলে যাবে ,কেও দেখবে না তোমাকে
:::(নীড় শার্ট খুলে দিল।অর্ক দেখলো শার্ট এর পিছনে রক্ত লেগে আছে।)
;একটা কথা বলি
;;;বলো
;আপনি দাড়ি রাখেন না কেনো এটা কেমন ,ছিলা মুর্গীদের মত লাগে।
::::,আজ সেভ করেছি তাই এমন লাগছে।কেনো তোমার দাড়ি পছন্দ
;খোঁচা খোঁচা দাড়ি পছন্দ  ।আর আপনার ফর্সা মুখে বেশি আকর্ষণীয় লাগবে।চাঁদ কিন্তু অন্ধকারে সুন্দর আলোতে না।
অর্ক;এভাবে কেও কখনো বলেনি তাই হয়তো রাখিনী।
::::আজতো কেও বললো।এখন আসি তাহলে
;হুমম যাও,কিন্তু কিভাবে যাবে
;;;;দেখেন কিভাবে যাই।
;মেইন গেট এটা তুমি বাড়ির পাশে যাচ্ছ কেনো?
;;;কারণ আমি চোরে মত এসেছিলাম তাই এখন চোরের মত যাচ্ছি।
;তখন ও দেওয়াল টপকে এসেছিলে
;;;নাহ মেইন গেট দিয়ে সবার থেকে লুকিয়ে।কিন্তু এখন তা সম্ভব না গেটে তালা লেগে গেছে।
(নীড় বাড়ির পাশে বড় আম গাছের কাছে গেল।সেই আম গাছের কাছে একটা ছোট মই রাখা ছিল ঐটা দিয়ে উঠে ওয়ালে বসে।অর্ক সাহায্যে মই ওই পারে দিয়ে মই বেয়ে নেমে যায়।নীড় জানালায় একটা ঢিল ছুড়ে।সেই শব্দে একটা মেয়ে দৌড়ে বান্দায় আসে আবার দৌড়ে চলে যায়।পাঁচমিনিট পর নীড় ওই মেয়ে সমেত বারান্দায় দাঁড়িয়ে অর্ককে বিদায় জানায়।অর্ক হাঁসি মুখে বাড়ি ফিরে।)
(ওদের বিয়ে পরিবার পরিজন আর কাছের কিছু বন্ধু,সমাজের কিছু লোক নিয়ে হচ্ছে।বড় করে বিয়ে দিবে অর্ক এবার গিয়ে ফিরলে সাথে নীড়ের ভাই ,বোন আসলে।)
বিকেল 3,45
নীড় সেজে বসে আছে।ভয়ে বুক ধক ধক করছে।পাশে কেও নেই সবাই বরযাত্রী নিয়ে ব্যস্ত।
উফফ ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।মনে হয় আমার বুকের ধুক বুকানির শব্দ বাইরে পর্যন্ত সোনা যাচ্ছে।সত্যি আজ আমার বিয়ে।
সত্যি বিশ্বাস করতে পারছি না।বাইরে এত হইহুল্লোড় আমার বিয়ে উপলক্ষে।
আজ এই আসরের মধ্যেমনি আমি আর আমার বর নিজে বলে নিজেই লজ্জা পাচ্ছি।
সত্যি আজ থেকে আমার নতুন জীবন শুরু
সত্যি আমিও আজ থেকে কারো বউ হতে যাচ্ছি।
সত্যি আজ আমি কারো হবো
একলা দিনের সময় আজ ইতি টানবে আজ  দোকলা হবার প্রহর
বর যাত্রী এসেছে
সবাই গেট ধরা হাত ধুয়া ইত্যাদি মজা নিয়ে ব্যস্ত জামাইর সাথে।
সন্ধ্যার দিকে
       বিয়ে পড়ানো শুরু হলো
  সাইন করার সময় হাত থর থর করে কাঁপছিলো।নীড়ের মনে কি পরিমাণ ভয়ের তুফান উঠেছে তা কেও আন্দাজ করতে পারবে না।
বিয়ে পড়ানোর পর ।
নীড় কে বাইরে আনা হলো।
নীড় চাদরের এ পারে অর্ক ওই পারে শুধু এ চাদরের পার্থক্য দুজনের মধ্যে।ভিডিও করার পর পর্দা সরিয়ে দেওয়া হলো।কিন্তু অর্ক নীড় কে দেখতে পেলো না।নীড় ঘোমটা টেনে আছে।
মালা বদল এর পালা শেষ।
এখন আয়না দেখার পালা।দুইজনের প্রথম দেখা বর বধূ সাজে।
আয়না দেখা।বা দুই জনের প্রথম দর্শন।
আয়নায় নীড় কে দেখে অর্ক সব গুলি দাঁত বের হয়ে যায়
পিছনে থেকে বলে ভাই কি দেখলেন
অর্ক,আমার জান্নাত(আস্তে করে বলে শুধু নীড় শুনে)
কি দেখলেন ভাই ভুত না পরী
অর্ক,পরী
নীড়,লজ্জ্বায় টমেটোর মত লাল হয়ে গেছে।
ভাবি আপনি কি দেখেন ?রাজকুমার না হিরো আলম
নীড়,মাথা নিচু করে হাঁসছে
বলেন ভাবি বলেন ?
হ্যাঁ নীড় বল,নীড় লজ্জায় হেঁসে যাচ্ছে।
পাশে থেকে কেউ একজন,ঐই বউ লজ্জা পাইসে
অর্ক,থাক আমার কানে কানে বলো,
মাহিন অর্ক ফ্রেন্ড,হে হে তাই বলেন ভাবি
নীড়,রাজকুমার
অর্ক হাঁসল
নীড়,হিরো আলম also
অর্ক,নীড় এর  দিকে কেমন আজব দৃষ্টিতে তাকালো
পাস থেকে বলো ভাই কি হিরো আলম বলসে না কি?
অর্ক,না নাহ রাজকুমারই বলসে
নীড় মুচকি হাঁসে
অর্ক হাত বাড়িয়ে দেয় নীড় হাতে হাত রাখে।অর্ক শক্ত করে হাত ধরে মুচকি হেসে তৃপ্তিময় দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে নীড়ের চোখের দিকে।
নীড়রের দাদা,বাবা সাথে কিছু লোক আসে।সবার সামনে খুব চিন্তিত, নীড়ের বাবা ফর্সা মানুষ রেগে লাল হয়ে আছে ।ঘেঁমে ভিজে গেছে আকাশি রঙ্গের পাঞ্জাবি।নীড়ের বাবা অর্কর কলার চেপে ধরে সবার সামনে।অর্ক নীড়ের হাত ছেড়ে দেয়
বাবা ;তোর এতো বড় সাহস হয় কি করে?আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করার হক কে দিয়েছে তোকে?আজ আমি তোকে মেরেই ফেলবো
নীড়ের দাদা আর কিছু লোক মিলে ফিরাতে চেষ্টা করে।
নীড় সহ বাকি সবাই খুব অবাক।নীড় এমন দেখে ভয়ে থর থর করে কাঁপছে।
নীড়ের বড় চাচী জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে এমন কেনো করছে?নতুন জামাইর সাথে।
বাবা; এ ছেলের চরিত্র ভালো না ।এ ছেলের অবৈধ সম্পর্ক আছে তার বড় ভাবীর সাথে ।
এ কথা বলে অর্ককে টেনে বাইরে নিয়ে গেল নীড়দের বাসার বড়রা।এরপর কি হয় নীড় কিছুই জানে না।কারণ সেই মুহূর্তে সে অজ্ঞান হয়ে পরে।ওই মুহূর্তে ওর পাশে কেও ছিল না।সবাই তামাশা দেখতে ব্যস্ত।
অর্ককে  আর পরিবারের সবাইকে অপমান করে বের করে দেয়।নীড়দের বাড়ির কেও অৰ্কদের কথা শুনতে ও প্রস্তুত না।অর্ক যেতে যেতে একবার পিছনে ফিরে দেখে নীড়কে না দেখতে পেয়ে চলে যায়।কিন্তু অর্কর মামা বলে আমাদের ছেলে কেমন একটু যাচাই করে বলবেন?আর যার চরিত্রে দাক দিচ্ছেন সে আমাদের বাড়ির বউ মানে আমাদের বাড়ির সম্মান।জানি না কোথায় থেকে কি শুনে এসে এমন অমানবিক আচরণ করলেন?আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ রইলো যা হবার হলো আপনারা আবার একবার খোঁজ নিয়ে দেখেন।তারপর পারিবারিক ভাবে একটা বৈঠকে বসেন।
প্রায় আড়াই মাস পর।জানুয়ারি প্রথম দিকে।ইতালিতে বেশ ঠান্ডা পরেছে।
অর্ক হাঁটছে রাস্তার পাস দিয়ে ।
চলবে,,,

#অধিকার_নেই গল্পের সব পার্ট ⇩

অধিকার নেই পার্ট:01
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/01.html
অধিকার নেই পার্ট:02
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/02.html
অধিকার নেই পার্ট,03
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/03.html
অধিকার নেই পার্ট,04
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/04.html
অধিকার নেই পার্ট,05
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/05.html
অধিকার নেই পার্ট,06
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/06.html
অধিকার নেই পার্ট,07(সমাপ্তি)
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/07.html
Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ