অধিকার নেই পার্ট,05

অধিকার নেই পার্ট,05

অধিকার নেই
W:আফসানা মিমি
পার্ট,05
অর্ক(কেন থাকুক না আমার কোলে ।আমার বুকে মাথা দিয়ে চুপটি করে।নামাবো কেন এটা আমার বউ যা চিকিৎসা করার আমার কোলে করাও আমি নামাবো না না না।)
রনি;বেড়ে শুয়ে দেও
অর্ক শুয়ে দেয়।নীড়ের ভাই না আসা পর্যন্ত পাশেই ছিল ওর ভাই এলে চলে যায়।
দুই দিন পর।
নীড় খোঁড়াতে খোঁড়াতে হাতে বেগ নিয়ে  হাঁটছে।
অর্ক ;ঐ
নীড় হাটতে থাকে থামে না।অর্ক সাথে হাটে।
অর্ক;এমন অবস্থায় বের হয়েছিলে কেনো?
নীড়:বেগটা ধরতে পারো।নেও
এক পর্যায়ে জোড় করে অর্কর হাতে বেগ দিয়ে দিল।
অর্ক;বেগতো হালকা।
নীড়; কাপড় ধুতে দিয়েছিল তাই নিয়ে এলাম।
অর্ক;তুমি এ অবস্থায় কেনো এলে আর কেও ছিল না
নীড়:ভাবি ছিল ভাবীকে পাঠাতাম।
অর্ক;হ্যাঁ
নীড়:ভাবী প্রেগনেন্ট ।
অর্ক;ওওও হ্যাঁ
নীড়; সব তোমার দোষ জানো আমার কত কষ্ট হচ্ছে ।হাঁটতে ,কাজ করতে সব কিছুতেই ।সব তোমার দোষ
অর্ক;আমার দোষ
নীড়; হ্যাঁ তোমার দোষ তুমি আমাকে ফেলে যাচ্ছিলে বলেই আমার এমন অবস্থায় হয়েছে। কোথায় যত্ন করবে তা না।দুই দিন কোন খোঁজ নেই আজ হাজির হয়েছে।
অর্ক;তুমি আমার হুড়ি পরে আছো সেটা নিতে এসেছি।খুলে দেও
নীড়; দেওয়া যাবে না
অর্ক:কেনো
নীড়:আমি তিন দিন ধরে এটাই পরে আছি ।ময়লা হয়ে গেছে।
অর্ক:ধুয়ে নিব তুমি দেও
নীড়:দেব না বললাম না।
অর্ক;আচ্ছা রাখো এই নেও তোমার বেগ আমি আসি।
নীড়; কোথায় যাও আমাকে বাসায় দিয়ে এসো।
অর্ক;কেনো
নীড়;তোমার জন্য আজ আমি হাত পা ভেঙ্গে বসে আছি।সো আমাকে সেবা করার দায়িত্ব তোমার।ফাঁকিবাজি চলবে না চলো।
(ঠিক ওই মুহূর্তে একটি বাইক আর একটি কালো গাড়ি পরস্পরকে সংঘর্ষ করে।এতে বাইকে থাকা ছেলেটি ছিটকে পড়ে ছটফট করতে থাকে নীড় তা দেখে ভয়ে ঐখানেই দাঁত লেগে পরে যায়।অর্ক ওকে তুলে বাসায় আনে।ভাবীকে সব বলে।ভাবি জানে না অর্ক ওর হাসবেন্ড শুধু একজন সুসময়ের পথিকের পরিচয় পেয়ে বাসায় আসতে পারে।তার উপর বাঙ্গালি।অর্ক আরো জানতে পারে নীড় খুব বেশি ভীত প্রকৃতির মানুষ,রক্ত দেখতে পারে না ফোবিয়া আছে।কিছু ক্ষণ পর নীড়ের হোস ফিরে।ভাবি পরিবেশ ও নীড়কে স্বাভাবিক করতে বলে।কিরে মেহমান এসেছে চা নাস্তা নিয়ে আয় ।নাকি আমি যাবো?
নীড় ;মুচকি হেঁসে চা করতে যায়।প্রথমে ভয় পেলেও ভাবীর মুখ দেখে বুঝতে পারে ভাবি অর্ককে চিন্তে পারেনি।অর্ক অনেক না করে কিছু করতে ।নীড় জোড় করে চা,নাগেটস, চকলেট বান নিয়ে আসে।অর্ক সাথে ভাবি অনেক গল্প করে একটা সময় অর্ক চলে যায়।নীড়ের মন খারাপ হয়ে যায়।)
রাত প্রায় বারোটা।
নীড় রূমে ঢুকে লাইট না জ্বালিয়ে দরজার বন্ধ করে নীচে বসে হিঁচকি পেরে কান্না করতে থাকে ।একটা সময় ডান হাতে ব্যথা সেই হাতে বার বার নিজের হাঁটুতে আঘাত করতে থাকে।একটা সময় হাতটা কেও ধরে ফেলে।নীড় চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে অর্ক।কান্না করতে করতে বলে।রনির সাথে নাকি আমার বিয়ে দিবে।
অর্ক;আমি জানি
নীড়; কিভাবে
অর্ক;পরশু যখন তোমার হোস ছিলনা তখন রনি আমাকে বলে সে তোমার ফিয়োন্সে।
নীড়; আমি আজ জানলাম।আমি জীবনে ও ওকে বিয়ে করবো না।
হাসান;নীড় দরজা খোল ।নীড় আমার কথা শোন
অর্ক;,কথা বলো আমি আসি।
নীড়; দরজা খুলে বসে পরে।
হাসান;আমার কথা শোন
নীড়; ভাইয়া আমার তালাক হয়নি যে তোমরা আমার বিয়ে ঠিক করছো।আমি রনিকে বিয়ে করতে পারবো না।আমার পক্ষে কখনো সম্ভব না।
হাসান:পরে দেখা যাবে ।আমি এ বিষয়ে এখন কথা বলতে চাই না।এখানে এসেছিস ঘুড়ে বেড়া ,নিজের যত্ন নে।পরেরটা পরে দেখা যাবে।চল খাবি
::::নাহ খাবো না
;একটা থাপ্পড় দিব অবস্থা হয়েছি কি তোর চল উঠ আমি খাবার আনছি এখন খাবি।
ভাইয়া খাইয়ে চলে গেল।আবার একটা রাত নির্ঘুম কেটে গেল।
একদিন অর্ক আসেনি।নীড় অপেক্ষায় বারান্ধায় বসেছিল এই তীব্র শীতে।যদি অর্ক আসে।নাকি আসা করা বোকামি।একদিন এসেছে বলে পরের দিন বারান্দা দিয়ে আসবে নাকি?
পরের দিন রনির সাথে ভাবি জোড় করে পিজ্জা খেতে পাঠায়।বলে আমার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে তোরা খেয়ে আমার জন্য নিয়ে আয়।যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না তবুও যদি রাস্তায় অর্ক দেখা মিলে সেই লোভে যায়।
ওরা পিজ্জা হাটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
নীড়;আমরা ভেতরে যাচ্ছি না কেনো
রনি;ওয়েট কেও আসবে তাই
নীড় দেখলো অর্ক রাস্তা পার হয়ে এলো।নীড়ের মুখে হাঁসি ফুটে উঠে।
অর্ক;আই গেইস বেশি দেরি করাইনি
রনি;নাহ চলো।
ওরা পিজ্জা খেয়ে বের হবার পর ।রনি জোড় করে একটা ডিস্কে যাবার জন্য পেসার দেয়।নীড় অর্ককে আরো একটু বেশি চোখের সামনে দেখতে পাবে সেই লোভে রাজি হয়।ওরা ডিস্কে খুঁজে না পেয়ে পাবে যায়।নীড় পাবে গিয়ে অবাক ওর ধারণা ছিল না পাব এমন হবে।ও খুব বিরক্ত হচ্ছে।কিন্তু অর্ক ওকে সামনে আর একটু দেখার জন্য ঐখানে থাকে।রনি গিয়ে নিজের জন্য মদ অর্ডার করে।রনি নীড়কে বলে তোমার জন্য সফ্ট ড্রিংকস অর্ডার করবো ।অর্ক রনির সাথে যায়।রনি ইচ্ছা করে রেডবুল বলে ওকে বিস্কি ধরিয়ে দেয়।অর্ক মানা করে  এমন না করতে রনি বলে আরে শিখতে দেও আমার বউ হলে এসব আস্তে আস্তে খাওয়া শিখে যাবে।তাই এখন থেকে খাওয়া শুরু করুক।পরে জেনে খাবে এখন না জেনে।আর বিস্কিতে নেশা হয় না।এটা প্রাথমিক লেভেলের জিনিস পরে আস্তে আস্তে সব শিখিয়ে নিব।অর্ক ওর কথা শুনে রীতিমতো রেগে খালি ফুলছে।ইচ্ছে হচ্ছিল ওর মাথায় বোতল ভাঙ্গতে।নীড়ের সামনে যখন স্বার্ব করা হলো।নীড় আসে পাশে তাকিয়ে অর্ক দিকে তাকালো ওর চোখ শুধু অর্ক কে দেখতে চায় অবাধ্য চোখ।অর্ক এ বার নীড়ের চোখে চোখ রাখে।নীড়কে ইসারা বোঝায় ওই ড্রিংকস না
খেতে।রনি বার বার জোড় দিচ্ছে।অর্ক বিস্কি পান করছিল।ও নেশা করে না।নীড় কখনো সফ্ট ড্রিংকস ছাড়া কিছু খায়নি।অর্ক ইচ্ছে করে রনির ড্রিংকস ফেলে দেয়।রনি উঠে পরিস্কার করতে যায়।অর্ক তাড়াতাড়ি নীড়ের সামনে এসে ওর ড্রিংকস নিজে খেয়ে সামান্য একটু নীড়ের স্কার্ফ এ ফেলে বলে।
অর্ক;তোমাকে আস্ক করলে বলবে তুমি খেয়েছো ।আর কিছু অংশ পরে গেছে।
নীড়; কেনো
অর্ক;কারণ সে তোমাকে রেডবুল বলে (সাথে সাথে রনি চলে আসে)
অর্ক কথা মত নীড় তাই রনিকে বলে।ওরা মেট্রোতে যাবার সময় নীড় বলে।
নীড়; আহ কি খেলাম মাথা এমন করছে কেনো বলে অর্ক কাঁধে মাথা রাখে।অর্ক মনে মনে হেঁসে নীড়ের কানের কাছে গিয়ে বলে।ওভার একটিং করো না ঐটা মদ ছিল না।নীড় লজ্জা পেয়ে মাথা তুলে নেয় ।বাসায় চলে যায়।নীড়ের মনটা আবার খারাপ হয়ে যায়।
পরের দিন।রাতে ভাবীর বেবি নড়ে না বলে অনুমান করছেন তাই ভাইয়া dr কাছে নিয়ে যায় ।ভাইয়া ফোন দিয়ে বলে আজ ভাবীকে অবজারভেশন এ রাখবে।বেবি ঠিক আছে।নীড়কে ঠিকমতো থাকতে বলে।
নীড় দোড় বেলের আওয়াজ শুনে খুলতে যায়।ওর একটু সময় লাগে হাঁটতে পা এখনো ভালো হয়নি হাতও না প্লাস্টার করা।নীড় নিজের বেড়ে থেকে নেমে যেতে গেলে পিছনে থেকে কেউ মুখ চেপে ধরে বাহাতের কোনায় ধরে।নীড় অর্ক কে অনুভব করে।আবার দোড় বেল বাজে।অর্ক নীড়ের কানের কাছে গিয়ে বলে।
;দোড় খুলে ওকে কোন বাহানায় বাইরে পাঠাবে।আর বলবে গেট যেনো বাইরে থেকে তালা মেরে যায় তুমি উঠে খুলতে পারবে না।তোমার হাঁটতে কষ্ট হয় ।এখন যাও গেট খুলে এসো।নীড়কে ছেড়ে দেয়।নীর একবার অর্ক দিকে তাকিয়ে আবার যায়।রনিকে অর্ক কথামতো বলে সকালের জন্য ব্রেড আনতে আর বাইরে থেকে তালা মেরে যেতে।বলে রূমে আসে।
অর্ক; বলেছো
;;;হুমমম
;আমি এভাবে এসে পিছনে থেকে ধরলাম তুমি চিল্লানি দিলা না কেনো
;;;;আমিতো জানি তুমি এসেছো কেনো চিল্লানি দিবো?
;এ রূমে তুমি থাকো
;;;;হুমম,এক কাপ চা করে আনি
;কফি নিয়ে এসো রনি ফেরার আগে।
;;;-নীড় দুইমিনিটে কফি নিয়ে ফিরে ।এসে দেখে অর্ক যেখানে বসেছিল ঐখানে আধাঁ শোয়া অবস্থায় ঘুম নীড় যেনো মুগ্ধ হয়ে দেখছে।ও আর ডাকলো না।উঠেইতো চলে যাবে কি দরকার ডাকার থাকনা আজ একটু মন ভরে দেখি।
রনি ফিরে দেখে নীড়ের রুমের লাইট অফ।দুবার নক করে।কিন্তু সারা পায়না হয়তো ঘুমিয়েছে।নীড় জেগে আছে আজ তার ঘুম নেই।আজ তার অর্ক তার পাশে কি করে ঘুম আসে।এ যেনো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।নীড় যখন ব্ল্যাংকেট টা টেনে অর্ক গাঁয়ে দেয় অর্ক যেনো নড়ে চড়ে আরাম করে ঘুমায়।ব্ল্যাংকেট টা দিয়ে নাক অব্দি ঢেকে নেয় অর্ক।নীড় শুধু চোখ দেখেই মন জুড়াচ্ছে।
অর্ক(আমি জেগে আছি ঘুমায়নি।কি করে তোমাকে আমি রনির সাথে এ বাসায় একা থাকতে দেই?।আমি জানি রনি ভালো না।রনির থেকেই জেনেছি আজ বাসা খালি থাকবে তাই তোমাকে একা রাখতে ভয় পেয়ে চলে এলাম ।এখন একটু ঘুমাও আমাকেও তোমাকে দেখার একটা সুযোগ দেও।আর তুমি কেনো বেডের পাশে সোফা লাগিয়ে শুয়ে আছো?তোমার ব্ল্যাংকেট এ তোমার ঘ্রান মেখে আছে আমার নেশা লাগছে এ ঘ্রানে।
চলবে;;;

#অধিকার_নেই গল্পের সব পার্ট ⇩

অধিকার নেই পার্ট:01
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/01.html
অধিকার নেই পার্ট:02
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/02.html
অধিকার নেই পার্ট,03
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/03.html
অধিকার নেই পার্ট,04
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/04.html
অধিকার নেই পার্ট,05
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/05.html
অধিকার নেই পার্ট,06
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/06.html
অধিকার নেই পার্ট,07(সমাপ্তি)
https://wonderfulstoryandletter.blogspot.com/2020/07/07.html
Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ