লাভ গেমস্
লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu
পর্বঃ ২৭
ধানমণ্ডি ৩২ নং এ একটা ছোটখাট কফিশপে বসে আছে শোয়েব আর ওর বাবা,দুজনের সামনেই এক মগ করে ধোঁয়া উঠা কফি রাখা কিন্তু দুজনের কেউই একবারের জন্যেও কফিতে চুমুক দেয়নি।
বাবা: তুই আমাকে এখানে নিয়ে আসলি কেন?যা বলার বাসায়ইতো বলতে পারতি...
শোয়েব: না পারতাম না আর সেজন্যেই এখানে নিয়ে এসেছি...
বাবা: তাহলে এভাবে বসে আছিস কেন?যা বলার বলে ফেল...
শোয়েব: আর একটু ওয়েট কর,সব উত্তর পেয়ে যাবে...
বেশ খানিক্ষণ বাদে ওখানে আরেকটা ছেলে আসলো,শোয়েবের হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিয়েই আবার চলে গেল।শোয়েব ওর বাবার দিকে খামটা বাড়িয়ে দিল আর উনি সেটা খুলে ভেতরের জিনিসগুলো এক পলক দেখেই শোয়েবের দিকে ফিরিয়ে দিলেন তারপর মুচকি হেসে নিজের ব্যাগ থেকে একটা ফাইল বের করে শোয়েবের দিকে বাড়িয়ে দিলেন।
শোয়েব: (হাত বাড়িয়ে ফাইলটা নিতে নিতে)এটা কি বাবা?
বাবা: খুলে দেখ,তাহলেই বুঝতে পারবি...
(শোয়েব ঝটপট ফাইলটা খুলে ফেলল,তারপর অবাক হয়ে বাবাকে বলল)
শোয়েব: বা..বাবা এটাতো...
বাবা: আমাদের ইতালি ব্রাঞ্চের স্টাফ ফাইল
শোয়েব: আর এটা...
বাবা: (মুচকি হেসে)হুম যা ভাবছিস তাই...
কফিশপটার ঠিক উল্টোদিকে রাস্তার ওপারে একটা রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলা থেকে একজোড়া চোখ আর একটা বাইনোকুলার অনেক্ষণ ধরেই সামনের কফিশপটার উপর নজর রেখে যাচ্ছে।একটা মেয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে ছেলেটার কাছে আসলো।এতক্ষণে নিশ্চয় সবাই বুঝে গেছেন যে ছেলেটা হল রিশান আর মেয়েটা সিজা...
সিজা: কিছু জানতে পারলে?
রিশান: কিভাবে জানবো?আমি চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে ওদের দেখতে তো পাচ্ছি কিন্তু কথা কিভাবে শুনব?
সিজা: ওহ্ শিট আগে জানলে শোয়েবের জামায় একটা মাউথপিস লাগিয়ে দিতাম...
রিশান: আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না তুমি হঠাৎ আঙ্কেলের পেছনে লাগতে গেলে কেন?উনাকে এত সিরিয়াসলি নেয়ার কি আছে?
সিজা: তুমি উনাকে ঠিকমত চেনো না তাই...চিনলে আর একথা বলতে না...
রিশান: একটা বয়স্ক মানুষ তোমার কিই বা ক্ষতি করতে পারবে?
সিজা: ঐ বুইড়াকে তুমি চিনো না।উনি চাইলে এক মুহুর্তে আমাদের সব প্ল্যানিং ভেস্তে দিতে পারে
রিশান: আরে বেবি,এত টেনশন নিও নাতো।যে আগুন লাগিয়েছি,এতো ইজিলি নিভবে না...আগে আগুনতো নিভাক তারপর নাহয় বাঁকি প্ল্যানিং করবে...
সিজা: সেটা অবশ্য ঠিকই বলেছো...
রিশান: আর দরকার পড়লে এটাকেও রাস্তা থেকো সরিয়ে দিব কি বল?
সিজা: রাইট...
(দুদিন পর)
সিজা হন্ত দন্ত হয়ে শোয়েবের দিকে ছুটে আসলো
সিজা: কি ব্যাপার আমাকে হঠাৎ এভাবে ডাকলে যে...কি হয়েছে?
শোয়েব: বেবি বেবি বেবি এবটা গুড নিউজ আছে
সিজা: গুডনিউজ!কিসের গুডনিউজ?
(শোয়েব পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে সিজার দিকে বাড়িয়ে ধরল)
শোয়েব: এটা ধরো
সিজা: এটা কি?
শোয়েব: নিজেই পড়ে দেখো
সিজা: (কাগজটা খুলে এক পলক দেখেই)এ..এটাতো...
শোয়েব: ডিভোর্স এগ্রিমেন্ট...
সিজা: তুত...তুমি তারমানে...
শোয়েব: সোমাকে ডিভোর্স দিচ্ছি...
(সিজা খুশিতে শোয়েবকে জড়িয়ে ধরল)
সিজা: I knew that jaan.ঐ গাঁইয়াটার জন্যে তুমি আমাকে ছাড়বে!দিস ইজ জাস্ট ইম্পসিবল love yo so..much...
শোয়েব: আচ্ছা শোন আমাকে এক্ষুণি যেতে হবে
সিজা: কেন?আমিতো ভেবেছিলাম একসাথে লাঞ্চ করবে...
শোয়েব: ওটা অন্যদিন হবে,আজ যেতেই হবে...
সিজা: কিন্তু কেন?
শোয়েব: সন্ধ্যায় আমার ফ্লাইট...
সিজা: ফ্লাইট!কেন কোথায় যাবে তুমি?আমাকেতো আগে বলনি?
শোয়েব: ও আমি ইতালি যাব,শিওর ছিলাম না তাই তোমাকে জানানো হয়নি।সরি বেবি...
সিজা: কিন্তু হঠাৎ করে ইতালি কেন?
শোয়েব: ইতালি না গেলে যে আমাদের বিয়েটাই হবে না তাই...
সিজা: মানে?
শোয়েব: মানে..সোমা এখন ইতালিতে আর ডিভোর্সটার জন্য আমার ওর সিগনেচার লাগবে
সিজা: কিন্তু সোমা ইতালিতে কি করছে?
শোয়েব: কি আবার করবে,আরহাম ওখানে থাকে তাই ওখানেই চলে গেছে
সিজা: Are you sure ও ওখানেই আছে?
শোয়েব: অফকোর্স শিউর...
সিজা: (মনে মনে)আমরাতো শুধু আন্দাজে তীর ছুড়েছিলাম,এখনতো দেখছি ওটাই সত্যি হতে চলেছে।হোক একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে,পথের কাঁটাটা চীরতরে দূর হয়ে গেছে....
শোয়েব: হ্যালো...কি হল কি ভাবছো?
সিজা: (চমকে উঠে)কিক..কিছুনা...
শোয়েব: তাহলে আমি গেলাম
সিজা: ওকে বেবি আর শোন...
শোয়েব: হুম?
সিজা: তোমার ফ্লাইট কখন জানিয়ো কিন্তু,আমি টেক অফ করতে যাব..
শোয়েব: আচ্ছা ঠিক আছে তাই হবে...
.
হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল সোমার,একটা খুব বাজে দুঃস্বপ্ন দেখেছে আর তারপরই ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে।অনেক্ষণ বিছানায় এপাশ ওপাশ করেও আর ঘুম আসেনি তাই ছাদে চলে এসেছে,চারিদিকে শুনসান নিরবতা,পুরো শহরটাই ঘুমিয়ে আছে শুধু ওর চোখে ঘুম নেই।জীবনটাই যেখানে পুরোপুরি বদলে গেছে,আপন মানুষ গুলোই যেখানে দূরে সরে গেছে,না আসাটাইতো স্বাভাবিক।এই শহরটাতে আপন বলে ওর কেউই নেই আর যে শহরে ওর আপন মানুষগুলো আছে সেই শহরটাই আজ ওর কাছে নেই।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো সোমা...
আরহাম: কি ম্যাডাম,একা একা এই মাঝরাতে ছাদে কি করছেন?ভূত-পেত্নীর সাথে যোগাযোগ আছে নাকি আপনার?
সোমা: (চমকে উঠে)আ..আপনি ঘুমান নপ?
আরহাম: ঘুমাব না কেন?আপনার মত তো আর আমি রাতজাগা পাখি না তাইনা?
সোমা: না মানে আমি...
আরহাম: আরে ইয়ার জাস্ট চিল,আই ওয়াজ জাস্ট কিডিং।আসলে ঘুম ভেঙ্গে দেখলাম আপনার রুম খোলা,ভাবলাম একটু গল্প করব কিন্তু আপনিতো এখানে তাই...
সোমা: সরি ঘুম আসছিল না তাই..
আরহাম: ইট'স ওকে,বুঝতে পারছি সবার থেকে এত দূরে আছেন তাই হয়ত ঘুম আসছে না আই ক্যান আন্ডারস্ট্যাণ্ড...
সোমা:...
আরহাম: আচ্ছা আপনি হঠাৎ এভাবে চলে আসলেন,কারণটাতো বললেন না...
সোমা: সেটা না হয় অন্য একদিন শুনবেন...
আরহাম: আচ্ছা ঠিক আছে,আপনার যখন ইচ্ছে হবে বলবেন।
সোমা: ওকে
আরহাম: আর শুনুন অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ুন।গুড নাইট...
সোমা: গুড নাইট...
(রাত ৯ টা)
শাহজাজাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছে শোয়েব,আর কিছু্ক্ষণ পরেই ওর ফ্লাইট।সিজার আসার কথা তাই এখনও চেক ইন করেনি,একটু পরেই সিজা আসলো আর এসেই ছুটে এসে শোয়েবকে জড়িয়ে ধরল।
শোয়েব: What happened Shija?
সিজা: কিছু না,তুমি এত ইম্পর্টেন্ট একটা কাজে যাচ্ছো তাই All the best...
শোয়েব: থ্যাঙ্কস বেবি
সিজা: নাউ বাই...
শোয়েব: শোন...
সিজা: কি?
শোয়েব: গেট রেডি...
সিজা: ফর হোয়াট?
শোয়েব: এটা দেখ পছন্দ হয় কিনা
সিজা: এটা কি?
শোয়েব: আমাদের এংগেজমেন্ট রিং
সিজা: (খুশি হয়ে)রিয়েলি!!!
শোয়েব: হুম,ইতালি থেকে এসেই অামি অফিশিয়ালি আমাদের এংগেজমেন্ট এ্যানাউন্স করব আর বিয়েটা ডিভোর্সের ফর্মালিটিজ শেষ হওয়ার পর ওকে?
সিজা: (শোয়েবকে জড়িয়ে ধরে)লাভ ইউ বেবি লাভ ইউ সো মাচ...
শোয়েব: ওকে নাউ বাই...
সিজা: বাই জান...
(রাত ১০টা)
অনেক্ষণ ধরে রিশান কফিশপে বসে আছে কিন্তু সিজার আসার কোন নামই নেই।আরো কিছু্ক্ষণ পর সিজা আসলো...
রিশান: সিজা লেটস গো...
সিজা: রিশান রিশান রিশান আই এ্যাম সো সো সো হ্যাপি...
রিশান: বাট হোয়াই?হঠাৎ কি এমন হল যে ম্যাডাম এত্ত খুশি হয়ে গেলেন?
সিজা: ইউ নো হোয়াট,শোয়েব আজকে আমাকে বিয়ের জন্য প্রপোজ করেছে
রিশান: হোয়াট!আর তুমি কি বললে?
সিজা: আমি আবার কি বলব?এতদিন ধরেতো আমি এই দিনটার জন্যই ওয়েট করেছি।ফাইনালি যা চেয়েছি আজ তা পেয়েও গেছি আই এ্যাম জাস্ট ওয়েটিং ফর দ্য ডে যেদিন আমাদের বিয়ে হবে...
রিশান: (রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)হোয়াট ইজ দিস ইয়ার?হাউ ক্যান ইউ ডু দিস টু মি?
সিজা: তুমি কি বলছো আমিতো কিছু বুঝতেই পারছি না...
রিশান: বুঝতে পারছো না মানে?এই মেয়ে তুমি শোয়েবকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ কিভাবে বলতে পারো?
সিজা: কেন করব না?ওকে পাওয়ার জন্যেইতো আমি এতকিছু করলাম...
রিশান: আর আমি যা করেছি তার কি কোন দামই নেই তোমার কাছে?
সিজা: মানে?
রিশান: তোমার জন্য আমি কি কি করেছি একবার ভেবে দেখেছো?তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য ঐ ইনোসেন্ট মেয়েটাকে দুই দুইবার মার্ডার এ্যাটেম্পট করেছি তুমি কি সবই ভুলে গেছো?
সিজা: ও হ্যালো শুধু তুমি একাই এসব করনি বুঝেছো?প্রথমবার সোমাকে পানিতে ডুবিয়ে মারার পুরো প্ল্যানিংটাতো আমারই ছিল ভুলে গেছো?
রিশান: ভুলব কেন?প্ল্যানিংটা তোমার হলেও সেটা এক্সিকিউটতো আমিই করেছি তাইনা?আর সেকেন্ড টাইম ওর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পুরো প্ল্যানিংটা কার ছিল হুম?
সিজা: তোমার বাট সোমা আর শোয়েবের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি আর এতসব কিছুতো আমি ওকে পাওয়ার জন্যেই করেছি তাইনা?
রিশান: Why don't you understand Shija?I love you damn it...
সিজা: হোয়াট!You are just a good friend to me Rishan.Nothing more than that...
রিশান: জাস্ট এ ফ্রেণ্ড!আর ইউ ম্যাড অর হোয়াট?
সিজা: যাই ভাব না কেন আমি তোমাকে শুধুমাত্র একটা ফ্রেণ্ড ছাড়া কিছুই ভাবিনি কখনও,আই জাস্ট লাভ শোয়েব আন্ডারস্ট্যাণ্ড?
শোয়েব: লিসেন সিজা প্লিজ ট্রাই টু আণ্ডারস্ট্যাণ্ড...ঐ শোয়েব তোমার জন্য মোটেও ঠিক না...
সিজা: জাস্ট শাট আপ রিশান,তোমাকে খুব ভাল ফ্রেণ্ড ভাবতাম বাট তুমিতো...
রিশান: সিজা প্লিজ...
সিজা: আমার নাম মুখেও আনবে না বুঝেছো আর কক্ষণো আমার সামনে আসবা না বুঝেছো?
রিশান: তোমার মত থার্ডক্লাস মেয়ের পেছনে ঘুরতে আমার বয়েই গেছে,জাস্ট গো টু হেল...
(রিশান রেগে মেগে চলে গেল)
.
শোয়েব: Excuse me...
- Yes?
শোয়েব: I wanna meet Mr.Arham
-Oh you please wait here I am going to tell him about you
(শোয়েব এসেছে আরহামের অফিসে,পাঁচ মিনিট পরেই রিসিপশনিস্ট মেয়েটা ফেরত আসলো)
-I am sorry sir I couldn't recognize you.please go inside...
(শোয়েব আরহামের রুমে ঢুকল কিন্তু দশ মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে আসল তারপর সোজা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল)
সোমা সবেমাত্র শাওয়ার নিয়েছে,বাথট্যাব থেকে উঠে টাওয়েলটা গায়ে জড়িয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরোতেই চমকে উঠল।ঐ জায়গাতেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো...
ওর অবস্থা দেখে শোয়েব উঠে দাঁড়ালো তারপর মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।যাওয়ার আগে বলল...
শোয়েব: যা করার তাড়াতাড়ি করে ফেল,অনেক হিসেব নিকেশ বাঁকি আছে তোমার সাথে সো কুইক...
সোমা ঝটপট ড্রেস চেঞ্জ করেই বেরিয়ে আসলো তারপর রেগে মেগে শোয়েবের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো...
সোমা: হাু ডেয়ার ইউ টু ইন্টার মাই রুম লাইক দ্যাট?
শোয়েব: আই এ্যাম ইয়োর হাজবেন্ড সোমা সো...
সোমা: হাজবেণ্ড মাই ফুট...কেন এসেছো এখানে?
শোয়েব: কেন এসেছি মানে?আমার বাবার যাবতীয় সম্পত্তি হাতিয়ে এখানে পালিয়ে এসেছো আবার বড় বড় কথা!
সোমা: শাট আপ শোয়েব
শোয়েব: ইউ শাট আপ...
সোমা: বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে
শোয়েব: বাহ্ কি সুন্দর!আসতে না আসতেই এই বাড়িটাও তোমার হয়ে গেছে!ছেলেদের কিভাবে পটাতে হয় সেটাতো তোমার থেকেই শেখা উচিত দেখছি...
সোমা: শাট আপ,বের হও বলছি...
শোয়েব: বের কো আমি হবই আগে এইখানে একটা সাইন কর...
সোমা: কিসের সাইন আর এটা কিসের এগ্রিমেন্ট?
শোয়েব: আমাদের ডিভোর্স এগ্রিমেন্ট
সোমা: তুমি বোধহয় এগ্রিমেন্টের কথাটা ভুলে যাচ্ছো
শোয়েব: ভুলে আমি না তুমি যাচ্ছো।ঐ এগ্রিমেন্টে লেখা ছিল আমি তোমাকে ছাড়তে পারব না কিন্তু এখন যেহেতু তুমিই আমাকে ছেড়ে এসেছো তখন...
সোমা: হোয়াট!
শোয়েব: এবার তুমি নিজের জালেই ফেসে গেছো সোমা,সো চুপচাপ সাইন করে দাও বলছি...
সোমা: দিব না কি করবে?
শোয়েব: সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুলটা কিভাবে বাঁকা করতে হয় আমার জানা আছে
সোমা: কি করবে হুম?তুমি কি করতে পারো আমার জানা আছে...
শোয়েব: দেখতে চাও আমি কি করতে পারি?
সোমা: পারলে দেখাও...
শোয়েব: ওকে দেন,জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ...
কথাটা বলেই শোয়েব গায়ের ব্লেজার আর শার্টটা খুলে দূরে ছুড়ে মারল তারপর আস্তে আস্তে আস্তে সোমার দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।সোমা যতই পিছিয়ে যাচ্ছে শোয়েব ততই এগিয়ে যাচ্ছে ওর দিকে।পেছাতে পেছাতে একসময় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেল সোমার,আর পেছনে সরার মত কোন স্কোপ নেই কিন্তু শোয়েব এখনও ওর দিকে এগিয়েই যাচ্ছে।এগোতে এগোতে এমন অবস্থা হয়েছে যে দুজনের মধ্যে আর বিন্দুমাত্রও ব্যবধান নেই,দুজন দুজনের নিঃশ্বাসের শব্দও শুনতে পাচ্ছে।শোয়েব নিজের ঠোঁটটা সোমার ঠোঁটের দিকে আরো একটু এগিয়ে নিতেই সোমা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল।শোয়েব একবার ওর দিকে তাকিয়েই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল...
শোয়েবের হঠাৎ এমন অদ্ভূত ব্যবহারে সোমা কনফিউজড হয়ে আড়চোখে একবার ওর দিকে তাকালো।সোমাকে চোখ মেলতে দেখে শোয়েব আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা না করে ওর ঠোঁট জোড়ার দখল নিয়ে নিল।সোমা কিছু্ক্ষণ এলোপাথাড়ি ভাবে হাত-পা ছুড়ল,শোয়েবকে কিল ঘুষি দিল তারপর এক সময় ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিল...
সোমার যখন একেবারে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা ঠিক তখনই শোয়েব ওকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।সোমা কয়েকবার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলল যেন জীবন ফিরে পেয়েছে এভাবে তারপর শোয়েবের কলার চেপে ধরে বলল...
সোমা: হাউ ডেয়ার ইউ টু ডু দিস টু মি?
শোয়েব: (সোমার গলা জড়িয়ে ধরে)মাই ডিয়ার ওয়াইফ ইয়েতো বাস শুরুয়াত হে আগে আগে দেখো হোতাহে কিয়া...
সোমা: ও রিয়েলি?
শোয়েব: ইয়া ম্যাডাম,এটাতো জাস্ট শোডাউন ছিল গোডাউনে আরো অনেক কিছুই বাঁকি আছে...
সোমা: ইউ নো হোয়াট তোমার বিরুদ্ধে আমি হেরাসমেন্টের কেস করতে পারি
শোয়েব: হ্যারাসমেন্ট!ঠিক আছে কেস যখন করবেই তখন আরেকটু হ্যারাস করেই ফেলি...
সোমা: মানে?
শোয়েব: মানে...হল এটা
(শোয়েব সোমাকে কোলে তুলে নিল)
সোমা: আরে আরে হচ্ছেটা কি?শোয়েব ছাড় বলছি আমাকে খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু...
শোয়েব: খারাপ হলে হোক কিন্তু হ্যারাসমেন্ট কাকে বলে কয় প্রকার আর কি কি তা আজকে তোমায় শিখিয়েই ছাড়ব...
সোমা: শাট আপ শোয়েব ছাড় বলছি আমাকে...
(শোয়েব সোমাকে সোজা বিছানায় নিয়ে গিয়ে কোল থেকে নামালো তারপর দরজা বন্ধ করে ওর দিকে এগিয়ে যেতে লাগল)
সোমা: শোয়েব ভাল হচ্ছে না কিন্তু...আমি কিন্তু এবার চিৎকার করব..
শোয়েব: করতে চাইলে কর...আমি কি বাঁধা দিচ্ছি নাকি?
সোমা: শোয়েব ওয়েট ভাল হচ্ছে না কিন্তু...
শোয়েব: কি ভাল হচ্ছে না সোনা?
শোয়েব একেবারে সোমার কাছে চলে এসেছে,সোমা ভয়ে চোখদুটো বন্ধ করে ফেলল।কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই দেখতে ইচ্ছে করছে না,সাহসেও কুলোচ্ছে না তাই চোখ বন্ধ করেই জড়োসড়ো হয়ে বসার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না তার আগেই কেউ ওর হাত ধরে ফেলল তারপর আস্তে আস্তে পা বেয়ে উপরে উঠতে লাগল...
0 মন্তব্যসমূহ