লাভ গেমস্ - পর্ব ২৬

লাভ গেমস্ - পর্ব ২৬

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ২৬

আরহাম: হ্যালো ম্যাডাম,এখন কেমন লাগছে?Are you okey now?
সোমা: ও আপনি?কখন এলেন?
আরহাম: এইতো মাত্রই এলাম আর এসেই শুনলাম আপনি নাকি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন?
সোমা: আসলে এই দুদিনের ধকল আর লং জার্নি সব মিলিয়ে...
আরহাম: হুম বুঝলাম।আচ্ছা আপনি তাহলে এখন রেস্ট করুন,সবকিছু পরে শুনব কেমন?
সোমা: আচ্ছা...
কি অবাক হচ্ছেন?ভাবছেন আরহাম আবার সোমার কাছে কিভাবে আসলো তাইতো?আচ্ছে তাহলে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করেই দিচ্ছি,আসলে আরহাম সোমার কাছে আসেনি বরং সোমায় আরহামের কাছে মানে ইতালি চলে গেছে।আজ সকালের দিকেই ইতালি পৌঁছেছে সোমা আর পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।আসলে এই দুদিনের স্ট্রেস আর নিতে পারেনি মেয়েটা,সোমা যখন আরহামের বাসায় পৌঁছল আরহাম তখন অফিসে ছিল।সোমার যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেজন্য এয়ারপোর্টে একজনকে পাঠিয়ে দিয়েছিল,একটু আগে ফিরেই সোমার সাথে দেখা করল আর তাদের কথোপকথনতো সবাই জানেনই তাইনা...?
এবারে একটু শোয়েবের দিকে নজর দেয়া যাক...
রুমের মধ্যে আপাতত অস্থির হয়ে পায়চারী করছে শোয়েব,ওর সামনেই বেডের উপর বসে আছে সিজা।বেশ কিছু্ক্ষণ ধরে শোয়েবের এসব কাণ্ড কারখানা দেখছে ও আর পুরো ঘটনাটাই ওর কাছে জাস্ট একটা বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছুি মনে হচ্ছে না।এতক্ষণ হয়ে গেল তবুও শোয়েব ওর সাথে একটা কথাও বলেনি,শেষমেষ সিজা নিজেই কথা বলার ডিসিশন নিল।কিছু একটা বলতে যাবে তখনই শোয়েবের একটা ফোন আসলো আর ও খুব অস্থির হয়ে ফোনটা রিসিভ করল...
শোয়েব: How could you be so irresponsible!আমি কোন কথা শুনতে চাই না,যেভাবেই হোক আর যেখান থেকেই হোক সোমাকে আমার চাই ই চাই...
(ওপাশ থেকে বলল ঠিক বোঝা গেল না)
শোয়েব: I don't wanna hear any explanation again.যা বলেছি চুপচাপ কর,যেভাবেই হোক সোমাকে খুঁজে বের কর otherwise we don't need such unprofessional people....
(শোয়েব ফোন রেখে দিল)
সিজা: What is this jaan?তুমি আবার ঐ সোমার পেছনে লাগলে কেন?
শোয়েব: মানে?
সিজা: মানে ও যখন চলেই গেছে শুধু শুধু আবার নিজেদের মধ্যে নিয়ে আসার কি দরকার?
শোয়েব: দরকার আছে...
সিজা: কিসের দরকার শুনি
শোয়েব: বাবা আজ কালকের মধ্যেই চলে আসবে আর এসে যদি সোমাকে না দেখে তাহলে সব গড়বড় হয়ে যাবে
সিজা: কেন গড়বড় কেন হবে?
শোয়েব: বাবা আগেই ওর নামে প্রপার্টির একটা বড় অংশ লিখে দিয়েছে আর যাওয়ার আগে পাওয়ার অফ এ্যাটর্নিও দিয়ে গেছেন,এখন যদি এসে দেখেন...
সিজা: হোয়াট!তারমানে ঐ গাঁইয়াটার নামেই এখন তোমাদের...
শোয়েব: হুম...
সিজা: আই কান্ট বিলিভ দিস
শোয়েব: বিলিভ না হলেও এটাই সত্যি
সিজা: সে যাই হোক আজ কিন্তু আমি অনেক অনেক খুশি
শোয়েব: কেন?
সিজা: কারণ...ঐ থার্ডপার্সন টা আমাদের দুজনের মধ্যে থেকে সরে গেছে তাই আমরা চাইলেই এখন বিয়ে করে নিতে পারি তাইনা?
শোয়েব: ব্যাপারটা অতটা ইজি হবে না সিজা...
সিজা: কিন্তু কেন?একটা সত্যি কথা বলবে শোয়েব?
শোয়েব: কি?
সিজা: Are you in love with her?
শোয়েব: (কিছু একটা ভাবতে লাগল)
সিজা: কি হল চুপ করে আছো কেন?আমার কথার জবাব দাও...তুমি কি ঐ গাঁইয়াটাকে ভালোবাসো?
শোয়েব: (চমকে উঠে)না মানে...সোমাকে!প্রশ্নই ওঠে না,ঐ মেয়েকে আমি ভালোবাসবো!!!This is totally impossible...
সিজা: (খুশি হয়ে)I knew it..I knew it.তুমিতো আমাকে ভালোবাসো তাই ঐ মেয়েকে ভালোবাসার প্রশ্নই আসেনা...
(শোয়েব শুকনো একটা হাসি দিল)
সিজা: শোন বাবু,আমরা না এবার খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নিব যাতে আমাদের মাঝে আর কেউই আসার কোন সুযোগ না পায় ওকে?
শোয়েব: ওটা এই মুহুর্তে সম্ভব নয়...
সিজা: (চিৎকার করে)কিন্তু কেন?
শোয়েব: কারণ তার আগে ওকে ডিভোর্স দিতে হবে...
সিজা: হ্যাঁ তো দিবা...
শোয়েব: তুমি বুঝতে পারছো না, ব্যাপারটা এতটাও ইজি না
সিজা: প্রবলেমটা কি তাইতো আমি বুঝছিনা...
শোয়েব: প্রবলেমটা হচ্ছে ঐ এগ্রিমেন্টটা...
সিজা: এগ্রিমেন্ট!কিসের এগ্রিমেন্ট?
শোয়েব: সোমা আর আমার বিয়েটা টিকেই ছিল একটা এগ্রিমেন্টের উপর...
সিজা: হোয়াট!কি ছিল সেই এগ্রিমেন্টে?
(শোয়েব সিজাকে পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিল,সব শুনে সিজার মুখে একটা অদ্ভূত রকমের হাসি ফুটে উঠল)
শোয়েব: কি ব্যাপার,এভাবে হাসছো কেন?
সিজা: হাসছি কারণ তুমি এতটা বোকা তাই..
শোয়েব: মানে?আমি আবার বোকামির কি করলাম?
সিজা: এগ্রিমেন্টটাতে স্পষ্ট করে লেখা ছিল যে তুমি ওকে ছাড়তে পারবে না কিন্তু ও নিজেই যদি তোমাকে ছেড়ে যায় তাহলে...
শোয়েব: তারমানেতো আমি এখন ওকে...
সিজা: হুম...
শোয়েব: (আনন্দে আত্মহারা হয়ে)সিজা সিজা সিজা...আমার যে কি খুশি লাগছে...থ্যাংক ইউ সুইটহার্ট থ্যাংক ইউ সো মাচ...
সিজা: Anything for you baby.শোন আমার একটা লয়্যার ফ্রেণ্ড আছে না,আমি আজকেই ওর সাথে এই ব্যাপারে কথা বলছি তুমি কোন চিন্তা কর না প্লিজ...
শোয়েব: ওকে ডিয়ার...
সিজা চলে গেল,শোয়েব আবারও নিজের রুমে ফিরে গেল।কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে,মনে হচ্ছে সব থেকেও যেন কিছু একটা নেই,সব সময় কেমন একটা শূন্যতা বিরাজ করছে চারপাশে,দম বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে।এই রুমটা যেটাতে সোমা থাকতো সেটাতেই সবচেয়ে বেশি প্রবলেম হচ্ছে শোয়েবের,আর এক মুহূর্তও দাঁড়িয়ে না থেকে চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ও।সোজা গিয়ে ড্রয়িংরুমের সোফাতে শুয়ে পড়ল,নাহ্ ঐ রুমগুলোতে আর ফেরত যাবে না,গেলেই কেমন দমবন্ধ হয়ে আসতে চাইছে।তার থেকে এখানে থাকাই ভাল,ঘুমাবে বলে দুচোখ বন্ধ করে ফেলল শোয়েব কিন্তু খানিক বাদেই আবারও চোখ মেলে তাকালো।ঘুমানোটাও মনে হয় সম্ভব হবে না,চোখ বন্ধ করলেই সোমার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।হুট করেই ফোফা ছেড়ে উঠে বসল শোয়েব,তারপর ফোনটা হাতে নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল তারপর সোজা গিয়ে বসল একটা কফিশপে।ওয়েটারকে কিছু একটা অর্ডার দিল আর তারসাথে আরো একটা কিছু বলল,ঠিক কি বলল ঠিক বোঝা গেল না...
ইতালির স্থানীয় সময় এখন রাত্রি ১০টা।
মাত্র কিছু্ক্ষণ আহেই সোমা ঘুম থেকে উঠেছে,এর মধ্যেই আরহাম তিন তিনবার ওকে ডিনার করার জন্য ডেকে গেছে কিন্তু সোমা নানান অযুহাতে ওকে ফেরত পাঠিয়েছে কিন্তু এবার আসলে হয়ত আর ফেরত পাঠানো যাবে না।বিছানা ছেড়ে উঠে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে নিল তারপর আবারও বিছানায় এসে বসে পড়ল।বাসার কথা খুব মনে পড়ছে ওর,এভাবে এই ভীনদেশে এসে দেশের কথা,দেশে থাকা প্রিয় মানুষগুলোর কথা আরো বেশি করে মনে পড়ছে।সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে শোয়েবকে,ছেলেটা আগে যেমনই থাকুক না কেন এই একমাসে অনেকটাই বদলে গেছে।উপর উপর যতটাই ডোন্ট কেয়ার ভাব নিক আসলে কিন্তু এখন সবারই কেয়ার নেয়,আর প্রচণ্ড রকমের ছেলেমানুষি আছে ওর মধ্যে।সোমা ভাবতেও পারছে না ওর এভাবে চলে আসাতে ওর মনের অবস্থাটা কি হয়েছে,এই একমাসে যে শোয়েব ওর প্রতি অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে,ওকে ছাড়া সবকিছু কিভাবে ম্যানেজ করবে ও...?কিন্তু কি করবে?এ ছাড়া যে আর কোন উপায়ও ছিল না!যেভাবেই হোক আর যে কারণেই হোক শোয়েব ওর সাথে যা করেছে কাজটা মোটেও ঠিক করেনি।সোমা চাইলেই ওকে শাস্তি দিততে পারতো কিন্তু তাতে হয়ত প্রোমা আর তুহিনের লাইফ রিস্ক হয়ে যেত যেটা ও কিছুতেই করতে পারবে না।সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে কালকেই বাবা দেশে ফিরবেন,ফিরে যদি এসব শোনেন তাহলে উনি কি ভাববেন ওর সম্পর্কে!
ভাবতে ভাবতেই কান্না চলে আসলো ওর,কিছু না ভেবেই বাড়ির নাম্বারে কল করে বসল,অনেক্ষণ রিং হওয়ার পরও কেউ ধরল না দেখে টেনশনটা আরো বেড়ে গেল।ফোনটা নামিয়ে রেখে নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগল...
কফিশপের এই টেবিলটাতে অনেক্ষণ ধরেই বসে আছে শোয়েব,একটার পর একটা কফির অর্ডার দিচ্ছে আর একটু পর পর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।এই নিয়ে পাঁচ কাপ কফি শেষ করল কিন্তু তবুও চেয়ার থেকে উঠার কোন নামই নেই,হঠাৎ রাস্তার অপজিটে চোখ পড়তেই মুখে হাসি ফুটে উঠল ওর,আরো দুকাপ কফির অর্ডার দিয়ে চুপচাপ বসে রইল।ছেলেদুটো সোজা ওর টেবিলে এসে বসে পড়ল,ইতোমধ্যেই কফি চলে আসলো,ওরা কফি খেতে খেতেই শোয়েবের সাথে টুকটাক কিছু কথা চালিয়ে যেতে লাগল।শোয়েব ওদেরকে কিছু একটা বুঝিয়ে দিল তারপর ওদের মধ্যে একজনের ফোন নিয়ে একটা নাম্বারে ডায়াল করল,কিছু্ক্ষণ কথা বলেই ফোনটা নামিয়ে রাখলো তারপর সোজা বাড়ির পথে হাঁটা ধরল...
ওর সাথের ছেলে দুটো আরও কিছু্ক্ষণ ওখানে বসেই টুকটাক কিছু কথা চালিয়ে গেল,ওয়েটারদের সাথেও কিছু কথা বলল আর তারপর চুপচাপ উঠে দুজন দুদিকে হাঁটা ধরল...
(বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা)
শোয়েব ড্রয়িংরুমের সোফাটাতে গভীর ঘুমে মগ্ন,সারারাত নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে শেষরাতের দিকে উঠে এখানে চলে এসেছে আর তারপর থেকেই এমন মরার মত ঘুমাচ্ছে।কাজের লোকগুলো কিছুই বুঝতে পারছে এ বাড়িতে কি হচ্ছে না হচ্ছে শুধু এটুকু বুঝছে যে কোন একটা ঝামেলা হয়েছে।ভয়ে ভয়ে শোয়েবকেও সোমার কথা জিজ্ঞেস করতে পারছে না তাই কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে যে যার মত কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে...
বাবা: বৌমা...বৌমা...
(হঠাৎ বাবার কণ্ঠ শুনে একরকম লাফ দিয়েই উঠে বসল শোয়েব)
শোয়েব: বাবা তুমি!!!
বাবা: হ্যাঁ আমি,এই তোর কি মাথায় কোন সমস্যা হয়েছে নাকি?
শোয়েব: হঠাৎ এ কথা বলছ কেন?
বাবা: এই গাধা,বাড়িতে এতগুলো রুম থাকতে এই সোফায় ঘুমাচ্ছিস কেন?
শোয়েব: আসলে বাবা রুমে ঘুম আসছিল না তাই...
বাবা: কেন?রুমে ঘুম আসবে না কেন?আচ্ছা বুঝেছি তুই আবারও বৌমার সাথে ঝগড়া করেছিস,এই তুই মানুষ হবি কবে বলতো....
শোয়েব: সত্যি বলছি বাবা,আমি কিছুই করিনি
বাবা: আচ্ছা বৌমা কোথায় রে?ওকেতো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না...বৌমা...বৌমা...
শোয়েব: বাবা,আমার কথাটা একটু শোন প্লিজ...
বাবা: কোন কথা না,বৌমা...কোথায় তুমি?ও বৌমা...
(হঠাৎ)
সিজা: ওকে আর ডেকে কোন লাভ নেই আঙ্কেল...
বাবা: (চমকে উঠে)তুমি!
সিজা: জ্বি আঙ্কেল আমি
বাবা: শোয়েব,এই মেয়ে এখানে কি করছে?ও এখানে এসেছে কেন?এক্ষুণি চলে যেতে বল ওকে...
শোয়েব: বাবা একটু শান্ত হও প্লিজ...
সিজা: আহ্ শোয়েব,তুমি একটু থামোতো।আমি উনাকে সব বুঝিয়ে বলছি
শোয়েব: স্টপ ইট সিজা,তুমি এসবের কিছুই বলবে না...
সিজা: শাট আপ শোয়েব,আমি কি করব না করব সেটা আমি বুঝব।ইউ শুড নট ইন্টারফেয়ার ইন ইট...
বাবা: এসব কি হচ্ছে?এই মেয়ে তোমাকে যেতে বললাম না?বেরিয়ে যাও এ বাড়ি থেকে এক্ষুণি...আর তুই এভাবে বসে আছিস কেন?যা বৌমাকে ডেকে নিয়ে আয়...
সিজা: সোমা আর কখনই আসবে না আঙ্কেল,ও চলে গেছে...
বাবা: (চমকে উঠে)চলে গেছে মানে!কোথায় চলে গেছে?এই শোয়েব ও এসব কি বলছে?
শোয়েব: সিজা স্টপ ইট...
সিজা: লিসেন আঙ্কেল,আপনার সাধের বৌমা তার নতুন প্রেমিকের হাত ধরে চলে গেছে...
(কথাটা শুনে বাবা আর স্থির থাকতে পারলেন না,বেশ জোরেই সিজাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বসলেন)
বাবা: জাস্ট শাট আপ,এই মেয়ে তোমার সাহসতো কম না!কোন সাহসে তুমি আমার বৌমার ব্যাপারে এসব আজে বাজে কথা বললে!আর আমাদের ফ্যামিলি ইস্যু নিয়ে কথা বলার অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে?
সিজা: (গালে হাত দিয়ে)How dare you old man!
শোয়েব: সিজা স্টপ ইট
সিজা: কেন?আমি কেন চুপ করব?পুরো ব্যাপারটা উনারও জানা উচিত।কান খুলে শুনে রাখুন,সোমা চলে গেছে আর আমরা খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে করছি...
বাবা: হোয়াট!!!
সিজা: এতেই এতটা অবাক হয়ে গেলেন!শোয়েব আমিতো এসেছিলাম তোমাকে একটা গুড নিউজ দিতে
শোয়েব: কি গুড নিউজ?
সিজা: আমি লয়্যারের সাথে কথা বলেছি,উনি বলেছেন তোমার ঐ সো কল্ড ওয়াইফকে ডিভোর্স দিতে এখন আর কোন বাঁধা নেই...
বাবা: হোয়াট!ব্যাপারটা তাহলে ডিভোর্স পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে!শোয়েব এসব কি শুনছি...
শোয়েব: বাবা আমি তোমাকে পরে সব বুঝিয়ে বলব,এখন প্লিজ একটু রেস্ট নাও
বাবা: কোন রেস্ট টেস্ট নিতে পারব না আগে তুই আমাকে বল এক্স্যাক্টলি কি ঘটেছে...
সিজা: আপনি তো মহা মূর্খ একটা লোক দেখছি!কতবার বলব সোমা চলে গেছে সবকিছু ছেড়ে...
বাবা: এই মেয়ে,তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করেছে?আমি আমার ছেলের সাথে কথা বলছি আর এরমধ্যে কোন আউটসাইডারের ইন্টারফেয়ারেন্স আমি পছন্দ করি না।ইউ মে গো নাও...
সিজা: (শোয়েবের দিকে তাকিয়ে)বাবু...তুমি উনাকে কিছুই বলবে না?
শোয়েব: সিজা তুমি এখন যাও,আমি বাবাকে সব বুঝিয়ে বলছি...
সিজা: (অবাক হয়ে)শোয়েব...
শোয়েব: প্লিজ...
(সিজা রাগে গজ গজ করতে করতে বেরিয়ে গেল)
শোয়েব: বাবা,বাবা একটাবার আমার কথাটা একটু শোন প্লিজ...
বাবা: কি শুনব?তুই কি শোনার মত কিছু বাঁকি রেখেছিস?
শোয়েব: বাবা প্লিজ...ব্যাপারটা এক্সপ্লেইন করার একটা সুযোগ দাও আমাকে...
বাবা: কোন সুযোগ পাবিনা তুই,তোর মা মারা যাওয়ার পর কিছু না বলে বলে বেয়াড়া হয়ে গিয়েছিলি জানতাম কিন্তু তাি বলে যে এমন অমানুষ তৈরি হয়েছিস জানতাম না...
শোয়েব: বাবা...!
বাবা: বৌমা আসার পর মনে হয়েছিল এ বাড়িতে আবারও তোর মায়ের ছায়া হয়ে কেউ এসেছে আর তাকেও তুই...
শোয়েব: ঐ চরিত্রহীনা মেয়েকে তুমি মায়ের সাথে তুলনা করছো!
বাবা: মুখ সামলে কথা বল বলছি,বৌমার সম্পর্কে আর একটাও বাজে কথা শুনতে চাইনা আমি...
শোয়েব: না চাইলেও তোমাকে শুনতে হবে,ও কার সাথে চলে গেছে জানো?ছেলেটার নাম আরহাম,ইতালিতে থাকে।টাকা-পয়সার লোভে ও সবকিছু ছেড়ে ঐ ছেলের সাথে চলে গেছে...
(বাবা এবার রাগ সামলাতে না পেরে শোয়েবকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বসল)
বাবা: চুপ,একদম চুপ..তোর ঐ মমুখ দিয়ে আমার বৌমার সম্পর্কে আর একটাও বাজে কথা বলবিনা...
শোয়েব: (রেগে গিয়ে)কি বৌমা বৌমা করছ সেই কখন থেকে!তোমার ঐ বৌমা কি করেছে আমার সাথে দেখতে চাও...?
বাবা: কি দেখাবি তুই?দেখার আর কিি বা বাঁকি আছে?
শোয়েব: অনেক কিছুই বাঁকি আছে,ঐ মেয়েটা তোমার সামনে ভালমানুষ সাজার নাটক করত আর তোমার অগোচরে আমার সাথে শুধু টর্চার করত...
বাবা: কি যা-তা বলছিস!
শোয়েব: এসব ও কেন করত জানো?
বাবা: কেন?
শোয়েব: তোমার সম্পত্তির লোভে,তুমি ওকে পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি দিয়ে যাওয়ার পর ও ঠিক কি কি করেছে দেখতে চাও?
বাবা: কি দেখাবি দেখা...
শোয়েব: ঠিক আছে চল আমার সাথে তোমাকে আজ ওর যাবতীয় অপকর্মের রেকর্ড দেখাবো চল...


Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ