.
# বিশেষ_করে_SSC_H
SC_পরীক্ষার্থীদ
ের_পড়ার_অনুরোধ_রইলো !
..
মাথায় চুকচুকে করে তেল দেয়া ও বাম
পার্শ্বে চুল ফাক করে সিথি করা সাদাসিদা
ভদ্র ছেলেটার নাম ফারহান।
যাকে কলেজে কম বেশি সবাই চিনে।
কলেজের মুখ বরাবরি এই ফারহানের জন্য
উজ্জল।যেমনি সে একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট
তেমনি তার নম্র ব্যবহার।
তবে এই ফারহানের পোষাক আষাক দেখে
অনেক সুন্দরি মেয়েদের কাছে সে ক্ষ্যাত
নামে পরিচিত।
.
এই ফারহান কে আবার অনেকেই চিনেই না।
কারণ সে ঠিক সময়ে কলেজে আসে আর
টিফিন টাইমে যাষ্ট টিফিনটা নিয়েই আবার
পড়তে বসে। তাই অনেকের কাছে সে আবার
অপরিচিতও।
তাই তার তেমন বন্ধু বা মেয়ে বন্ধুও নেই।
.
ফারহান এইবার এইচএসসি পরিক্ষা দিবে।তার
মায়ের অনেক বড় আশা এইচএসসি পরিক্ষায়
ভালো একটা স্কোলার্শিপ নিয়ে
মেডিকেলে পড়বে। আর গরীব ও অসহায়
মানুষদের ফ্রি চিকিৎসা দিবে। তাই মায়ের
স্বপ্নের কথা ভেবে পড়া শুনাতে খুব মন দিয়ে
পড়তে থাকে।
.
ফারহানের পরিক্ষার বাকি আর ৫ মাস।খুব
ভালো ভাবেই সব কিছুই চলছিলো।এমন সময় এক
বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারে ফেসবুকে নাকি
অনেক ভালো ভালো কলেজের টিচারদের
সাজেসন্স পাওয়া যায়। তাই ফারহান তার
আম্মুকে একথা বুঝিয়ে বললে, তিনি জমানো
টাকা এবং ধার করে কিছু টাকা সংগ্রহ করে
তার ছেলেকে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড
এন্ড্রয়েড ফোন কিনে দেয়।
.
তার পরেরদিন সকালে কলেজে এসে তার এক
পরিচিত বন্ধুর কাছে থেকে একটি ফেসবুকের
আইডি খুলে নেয়।তার বন্ধু কয়েকটা সাজেসন্স
গ্রুপে জয়েন দিয়ে দেয় এবং সাথে কয়েকটা
রেডিও পেজে ও লাইক দিয়ে দেয় যাতে গল্প
টল্প পড়তে পারে এবং সকল বিষয়ে একটু একটু
ধারনা দিয়ে দেয় কিভাবে কি করতে হবে।
.
সব কিছু ভালো ভাবেই চলতে ছিলো।
সাজেসন্স গ্রুপ গুলা থেকে খুব ভালো ভালো
কিছু সংগ্রহ করে অধ্যায়ন করতে থাকে।
একদিন অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফারহান একটি
বিষয়ে সাজেসন্স লিখে গ্রুপে পোষ্ট দেয়!
সেই পোষ্টায় কম সময়ে অনেক লাইক কমেন্ট
আসতে থাকে।মনে মনে ফারহান অনেক খুশি।
.
সেই দিনের মত ফারহান ফেসবুক থেকে বের
হয়ে পড়তে বসে।পরেরদিন সকালে আর
ফেসবুকে না ঢুকে কলেজ থেকে এসে একদম
বিকালে ঢুকে।
ঢুকে দেখে একটা মেয়ে অনেক গুলা মেসেজ
করেছে! তার মধ্যে কয়েকটা মেসেজ এমন
ছিলো- ভাইয়া আপনি তো অনেক
ব্রিলিয়ান্ট,আপনি আমার অনেক উপকার
করেছেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
এসব মেসেজ সিন করতেই হঠাৎ মেয়েটি আবার
মেসেজ করলো-
.
_হাই, ভাইয়া?
_হ্যালো, জ্বি বলেন?
_ভাইয়া আপনি যে সাজেসন্স গুলা
দিয়েছিলেন তা আমার টেষ্ট পরিক্ষায় ৮৫%
কমন পরেছিলো। আপনাকে অন্নেক অন্নেক
ধন্যবাদ।
_হুম ওয়েলকাম।তবে এতোটা কারো উপকারে
আসবে তা ভাবিনি!
_ভাইয়া আমি কি আপনার ফ্রেন্ড হতে পারি?
_আপনি আমার ফ্রেন্ড হবেন?হা হা হা
_হাসলেন যে? ফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্যতা বুঝি
আমার নেই ভাইয়া?
_হাসলাম এই জন্যে যে আপনিই প্রথম আমার
মেয়ে বন্ধু হতে চাইতেছেন। এর আগে কোনো
মেয়ে হতে চাইনি তো তাই।
_তাই নাকি? এতো ব্রিলিয়ান্ট একটা
স্টুডেন্টের আবার মেয়ে বন্ধু নেই! অনেক
মজার ব্যপার তো!
_হ্যা তাই হয়তো।
_কি তাই হয়তো?
_ঐ যে বল্লেন মজার ব্যপার তো!
_ও আচ্ছা! তো আমি আপনাকে ফ্রেন্ড
রিকুয়েষ্ট দিচ্ছি এক্সেপ্ট করেন কেমন?
_আচ্ছা ঠিক আছে! আজ তাহলে আসি।বাই টা
টা .
মেয়েটার সাথে কথা বলতে বলতে দেখে ১১
টা বেজে গেছে!
টাইমটা একদমি খেয়াল করেনি! সেদিন একটু
পড়েই ঘুমিয়ে পরে।
এবং মেয়েটাকে নিয়ে নানা কথা ভাবতে
থাকে।আর মনে মনে ফারহান খুব খুশি।কারণ
তার একটি মেয়ে বন্ধু হয়েছে।
.
এখন ফারহানের প্রতিদিন মেয়েটার সাথে
নিয়মিত কথা হয়। সকল সময়ে মেয়েটির সাথে
চ্যাটিং এ সে ব্যস্ত সময় কাটাইতেছে!
কোচিং এ গিয়েও সামনে বসা ছাত্রটা এখন
শেষের বেঞ্চের দিকে বসে, মেয়েটার সাথে
চ্যাট করে।ব্যাপারটা অনেক টিচারের
চোখেও পড়েছে কিন্তু ভালো ছাত্র বলে কেউ
কিছুই বলেনি!
.
ফারহানের এমন পরিবর্তন দেখে, আব্দুল্লাহ
বললো-
.
_দেখ ফারহান , তুই অনেক ভালো ছাত্র।তোর
কাছে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অনেকেই
পথ চেয়ে আছে।আর তোর কাছে আমরা বন্ধু
গুলাও চাই তোর মায়ের স্বপ্নটা পূরণ কর।
_তো আমি আবার কি করলাম?! লেখা পড়া তো
করতেছি।যে লেখা পড়া করতেছি তাতেই সেই
রকম রেজাল্ট হবে।আর তাছাড়াও আমার সব
জিনিসি পড়াই আছে
_যতই পড়া থাক তবুও! আর তুই যে অপরিচিত
একটি মেয়ের সাথে কথা বলে সময় নষ্ট
করতেছিস তার জন্যে আফসোস করতে হবে!!
_যা তো জ্ঞান দিতে হবেনা।তুই যা নিজের
লেখা পড়া কর ঠিকমত!
.
আব্দুল্লাহ সেদিন মন খারাপ করে ফারহানের
কাছে থেকে আসলেও সে জানে এর শেষ
পরিণিতি কি! তার অনেক খারাপ
লাগতেছিলো ফারহানের জন্য। এমন একটা
অভাবি সংসারে বেড়ে ওঠা ফুলটা অকালেই
ঝরে যাবে!
.
এই দিকে ফারহান রাত দিন ব্যস্ত সময়
কাটাইতেছে ফেসবুকের সেই মেয়েটির সাথে।
ফাইনাল পরিক্ষার আর বাকি ২ দিন।সবাই পড়া
শুনায় ব্যস্ত আর ফারহান ব্যস্ত চ্যাটিং নিয়ে।
এমন অবস্থা ফারহানের দেখে তার মূর্খ মাও
কিছু বললে, ফারহান নানা কথা বলে
রাগারাগি করে।
তাই ফারহানের মা ও কিছু বলেনা খালি
কান্না করে! .
ফারহানের পরিক্ষা শুরু হয়েছে।এখনো তার
পড়া শুনায় ঠিকমত মন নেই। কোনো রকমে বইটা
পড়েই সেই মেয়ের সাথে চ্যাটিং করে
ঘুমিয়ে যায়! এই অবস্থায় সকালে উঠেই
পরিক্ষা দিতে যায় ফারহান । সবাই পরিক্ষার
ভালো ভাবেই দিচ্ছিলো কিন্তু ফারহানের
কেন জানি মন মত প্রশ্ন গুলো আসেনি। সে বন্ধু
আব্দুল্লাহ কে বলে প্রশ্নটা এতো কঠিন করার
কি দরকার এক্সামিনারের?!
আব্দুল্লাহ খালি ফারহানের মুখের দিকে
তাকিয়ে হতাশার নিঃশ্বাস ফেলে।
কারণ প্রশ্ন গুলো মোটেও কঠিন হয়নি। .
ফারহানের পরিক্ষা শেষ অনেকদিন আগেই।
আজ রেজাল্ট দিবে তার।তার মা মানুষের
বাড়িতে কাজ করে কিছু টাকা জোগাড়
করেছে। তার ছেলে ফারহানের রেজাল্ট হলে
সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবে।আর টিচারেরাও
অনেক আশা নিয়ে আছে ফারহানের উত্তম
রেজাল্টের। সময় এখন বেলা ২ টা।রেজাল্ট
পাবলিসড হয়েছে। ফারহান খুব তারাতারি
রেডি হয়ে কলেজে গেলো। কিন্তু কলেজে
গিয়ে দেখলো ফারহানের রেজাল্ট তো
পাশের লিষ্টে নেই! চারদিকে কেমন যেনো
অন্ধকার নেমে আসলো ফারহানের ।সে যেনো
চারপাশে কিছুই দেখতে পাইতেছেনা।ব্যপা
রটা খেয়াল করে দেখলো আব্দুল্লাহ ।সে
নিজে গিয়ে দেখলো রেজাল্টশিট।
আবার একরাশ হতাশা তার চোখে পরলো! হ্যা
ফারহান সত্যিই ফেল করেছে।তাও আবার তিন
সাবজেক্টে।
.
ফারহান অনেক রাতে বাসায় ফিরলো।তার মা
এখনো পথ চেয়ে আছে ভালো একটা
রেজাল্টের আশায়।
বাসায় ঢুকার সাথে সাথেই-
.
_বাপ অনেক ভালো রেজাল্ট হয়েছে নাহ?
ঘরে মিষ্টি এনে রাখছি যা তোর বন্ধুদের
খাইয়ে দিয়ে আয়?
_না, মা! আমি তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে
পারিনি।আমি ফেল করেছি! (কান্না জড়িত
কন্ঠ)
_না....
.
কথাটি বলেই ফারহানের মা অজ্ঞান হয়ে
যায়। অনেকখন পরে ফারহানের মায়ের জ্ঞান
ফিরেছে।এখন তিনি ঘুমাইতেছে।এই ফাকে
ফেসবুকের সেই মেয়েটিকে মেসেজ করলো
ফারহান -
.
_কি করো?
_এই তো আমার বফ এর সাথে কথা বলতাছি!
তোমার রেজাল্ট খবর কি?
_আমি ফেল করেছি! আর তোমার বফ আছে
আগে তো বলোনি!!
_আমি জানতাম তুমি ফেল করেছো!আর বফ
আজকেই বানিয়েছি একটা ব্রিলিয়ান্ট
ছাত্রকে কে!
_তুমি আমার কথা একবারো ভাবলেনা?
_প্রয়োজন ছিলোনা।ভালো থেকো।আর ফেল
করা একটা ছাত্রের সাথে আমার কথা বলার
প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা!
.
তারপর আর কথা বলার সুযোগ না দিয়েই
মেয়েটি ব্লক মেরে দেয়ে ফারহান কে।
সব কিছুই যেনো আজ শেষ ফারহানের ।তার
আফসোস করা ছারা আর কিছুই করার
ছিলোনা!
.
# অনুরোধ : তাই পরিক্ষার্থীদের কাছে আমার
অনুরোধ ফেবুতে অযথা কারো সাথে চ্যাটিং
করে সময় নষ্ট না করে পড়া শুনায় মন দিন। আর
সবার স্বপ্ন কে পূরণ করুন। তবেই আমার
লেখাটা সার্থক।
★আর সবাই খেয়াল রাখবেন ফেসবুকে যেন
আজাইরা কাজে সময় ব্যায় না হয়। মনে
রাখবেন: প্রতিটি লাইক, কমেন্ট, শেয়ার,
পোস্ট, মেসেজ, সার্চ Etc সবকিছুরই হিসাব
দেওয়া লাগবে! কারণ,
আল্লাহ রাব্বুল-আলামিন বলেছেন “কেউ অণু
পরিমাণ সৎকর্ম করলে (শেষ বিচারের দিন) তা
দেখতে পাবে,এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম
করলে তাও দেখতে পাবে।
.
.....
.
স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো ড. আ ফ ম
খালিদ হুসাইন হাফি. এর কিছু মূল্যবান উপদেশ
================================
০১.প্রতিদিন ১০ ঘন্টা পড়ালেখা করাকে ফরজ
বানিয়ে নিন।
০২. জীবন অতি মূল্যবান, সময় অতি সল্প। এ সল্প
সময়েই বিরাট কর্ম ও কীর্তি রেখে যেতে
হবে।
০৩. প্রতিটি নিঃশ্বাস বহু মূল্যবান,প্রতিট
ি সেকেন্ড বহু মূল্যবান।
০৪. মোবাইলের ব্যবহার সীমিত করে দিন।
আপনি যদি সবসময় মোবাইল খোলা রাখেন
মানুষ আপনাকে সবসময় ব্যবহার করবে।
০৫.আপনাকে তো টিকে থাকতে হবে। অনেক
কিছু অধ্যয়ন করতে হবে। আপনার সময় কোথায়!
০৫.আমি যে কোন জায়গায় গেলে সবসময়
ল্যাপটপ ও বই নেই। আমি ০১ পৃষ্ঠা পড়তে
পারলে মন্দ কী! আমরা গাড়িতে চড়ে বিভিন্ন
জায়গায় যাই। সেই সময়টাকেও আমরা বই পড়ে
মূল্যায়ন করতে পারি। তারপর নাপিতের
দোকানে চুল কাটাতে যাই। সেখানে প্রায়
সময় দীর্ঘ লাইন থাকে, সেই সময়টাতে আমরা
হাতে ছোট্ট একটি পুস্তিকা নিয়ে পড়তে
পারি।
০৬.যত পড়বেন তত আপনার জ্ঞানের ভান্ডার
সমৃদ্ধ হবে। লেখার বিষয় তৈরি হবে। সবসময়
মনে রাখতে হবে জীবন অতি মূল্যবান, সময়
অতি স্বল্প।
০৭. বাংলা-আরবি-ইংরেজি এ তিন ভাষায়
সর্বোচচ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
০৮.দুর্বল চিত্ত ও চরিত্রের অধিকারীদের
দিয়ে মহৎ কাজ হয় না।
০৯.পৃথিবীর কোন যোগ্য মানুষ বেকার নেই।
পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ ও যোগ্য ব্যক্তিরই মূল্যায়ন
হয়।
সুতরাং নিজেকে মূল্যবান হিসেবে গড়ে তুলুন।
# collected
#অধিকার_নেই গল্পের সব পার্ট
অধিকার নেই পার্ট:01
অধিকার নেই পার্ট:02
অধিকার নেই পার্ট,03
অধিকার নেই পার্ট,04
অধিকার নেই পার্ট,05
অধিকার নেই পার্ট,06
অধিকার নেই পার্ট,07(সমাপ্তি)
0 মন্তব্যসমূহ