লাভ গেমস্ - পর্ব ০৩

লাভ গেমস্ - পর্ব ০৩

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ০৩

.
সোমা পানির বোতলটা নিয়েই এক নিঃশ্বাসে পুরো পানিটা ঢক্ ঢক্ করে খেয়ে ফেলল তারপর খালি বোতলটা ছেলেটার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল...
সোমা: থ্যাঙ্কস 
(ছেলেটা বোতলটা হাতে ধরেই মুচকি একটা হাসি দিল তারপর আরেকটা হাত সোমার দিকে হ্যাণ্ডশেক করার ভঙ্গিতে বলল...)
-হাই,আমি জাফির।তুমি?
সোমা: আ...আমি সো...সোমা
জাফির: সোমা?নাইস নেম,নাইস টু মিট ইউ সোমা...
(সোমা ওর হাতটা বাড়িয়ে ছেলেটার বাড়িয়ে দেয়া হাতটা ধরে উঠে দাঁড়ালো তারপর বলল...)
সোমা: নাইস টু মিট ইউ টু...
জাফির: এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে মনে হয় সিটে গিয়ে বসা উচিত,পরের ক্লাসের টাইম হয়ে গেছে...
সোমা: (অবাক হয়ে)আ..আপনি না মানে তু..ত..তুমিও...
জাফির: (একটু হেসে)আরে ইয়ার,আমিও ইকোনোমিক্স ফার্স্ট ইয়ার।মানে তোর ফ্রেণ্ড,সো আর ঢং করে তুমি বা আপনি বলতে হবে না ডিরেক্ট তুই করে বলবি বুঝেছিস?
সোমা: হুম
জাফির: এখন তাহলে চল...
ওরা সিটে গিয়ে বসতেই ক্লাসে স্যার চলে আসল,ক্লাসের পুরো সময় কেউ কারো সাথে একটু টু শব্দ পর্যন্ত করল না।ক্লাস শেষ হতেই জাফির সোমার কাছে এসে ওকে বাইরে নিয়ে গেল।
জারিফ: আচ্ছা সোমা,শোয়েব ভাইয়া তোর সাথে এমন কেন করল রে?তুই কি উনার সাথে কোন বেয়াদপি করেছিস?
সোমা: শোয়েব ভাইয়া!এটা আবার কে?
জাফির: তোকে যারা র্যাগ দিয়েছে তাদের লিডার বলতে পারিস।ঐ যে ফর্সা,সুন্দর,হ্যাণ্ডসাম মত দেখতে ছেলেটা
সোমা: বুঝেছি,ঐ বেয়াদপ লোকটা
জাফির: এই চুপ চুপ,কেউ শুনলে আর তোকে আস্ত রাখবে না
সোমা: বললেই হল!এখানে রুলস বলে একটা জিনিস আছে না?
জারিফ: কিসের রুলস?এখানে শোয়েব ভাইয়া যেটা বলবে সেটাই রুলস
সোমা: মা..ম..মানে?
জাফির: উনার বাবা ভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট,প্রতিবছর ভার্সিটির ডোনেশন ফান্ডের প্রায় ছিক্সটি পার্সেন্ট উনি বিয়ার করেন তাই ভাইয়া যা বলেন তাই করতে হয় সবাইকে।উনার সব অন্যায় অথোরিটি দেখেও তাই না দেখার ভান করে
সোমা: তুই এত কথা জানলি কি করে?
জাফির: এখানকার প্রায় সবাই জানে,তুই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছিস তাই জানিস না
সোমা: আর তুই তখন ক্লাসে না থেকে লাইব্রেরিতে কেন গিয়েছিলি?
জাফির: আসলে শোয়েব ভাইয়া আমার বড় ভাই জিসানের ফ্রেণ্ড,বেস্ট ফ্রেণ্ডও বলতে পারিস তাই উনার ব্যাপারে সবই আমার জানা।ঐ পিরিয়ডে যে উনারা সবার র্যাগিং করতে আসবেন তাও জানতাম,ইনফ্যাক্ট ভাইয়াই আমাকে এসব থেকে দূরে থাকতে বলেছিলেন তাই চুপচাপ লাইব্রেরিতে গিয়ে ঢুকেছিলাম
সোমা: তোর ভাইয়াও কি উনারই মত?
জাফির: হুম,ভাইয়াটাও ওদের সাথে থেকে থেকে ওদের মতই হয়ে গেছে,লেট নাইট পার্টি নাইট ক্লাব আড্ডা লংড্রাইভ ড্রিংকিং করে করেই সময় কাটায়,হাজার চেষ্টা করেও ওকে ফেরানো যাচ্ছে না...
সোমা: হুম বুঝলাম,এখন চল ক্লাসে যাই
জাফির: কিসের ক্লাস,আজকে আর কোন ক্লাস হবে নাতো
সোমা: সত্যি?
জাফির: হুম,তাই আজ চল কোথাও বসে আড্ডা দেই আমাদের ফ্রেণ্ডশিপের ফার্স্ট ডে বলে কথা.  
সোমা: আজকে না রে,নতুন এসেছি এখানে তাই অনেক কাজ জমে আছে।অন্য একদিন...
জাফির: আচ্ছা ঠিক আছে,এখন কই যাবি?
সোমা: কই আবার হোস্টেলে
জাফির: আচ্ছা যা তাহলে,কাল দেখা হবে...
হোস্টেলের দিকে একটু এগিয়ে যেতেই একটা দৃশ্যে চোখ আটকে গেল,দুটো ছেলেকে ঘিরে কয়েকজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।ছেলে দুটো কান ধরে উঠবস করছে আরছে আর দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলো দাঁত বের করে হাসছে।সকালের ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল সোমার,ছুটে চলে গেল ওদিকে।
সোমা: এসব কি হচ্ছে?আপনারা ওদের সাথে এমন করছেন কেন?
-এখানে কি হচ্ছে তুমি বুঝতে পারছ না তাইনা খুকি?
সোমা: কি বুঝব আমি?আর এটা কোন ধরণের ভাষা?
-কোন ধরণের ভাষা সেটা তোমাকে না বুঝলেও চলবে,তুমি তোমার রাস্তা মাপো নাহলে ওদের সাথে যা হচ্ছে তোমার সাথেও তাই করতে বাধ্য হব...
সোমা: মগের মুল্লুক পেয়েছেন নাকি যে যা চাইবেন তাই করবেন!
-মগের মুল্লুক না,এটা শোয়েবের বাবার মুল্লুক
(শোয়েব নামটা শুনতেই মাথায় রক্ত উঠে গেল সোমার)
সোমা: তা শোয়েবের বাবা কি আপনাদেরও বাবা নাকি?
-জ্বি না,আমাদের বাবা না তবে বাবার মত,তাইনা রে পিয়াল?
পিয়াল: হুম এক্কেবারে গডফাদারো বলতে পারো
সোমা: তা আপনাদের সেই গডফাদারের গুণধর পুত্রটি কোথায়?
পিয়াল: এই মেয়ে তুমি এভাবে কথা বলছ কেন?জানো তুমি কার সম্পর্কে কথা বলছ?
সোমা: আমি জানি আমি কার সম্পর্কে কথা বলছি,আমি এমন একজনের সম্পর্কে কথা বলছি যে কিনা নিতান্তই একটা বেয়াদপ,বেয়াড়া,অসভ্য,অভদ্র আর বাপের পাওয়ার আর টাকার গরম দেখানো অসভ্য একটা ছেলে
পিয়াল: এই রিকি,মালটাকে মনে হচ্ছে সািজ করতে হবে।খুব বড় বড় কথা বলছে
রিকি: হুম চলতো এটাকে ক্লাব হাউজে নিয়ে যাই...
সোমা: এই যে আপনারা মাল কাকে বললেন?অসভ্য,ছোটলোক মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তাও জানেন না!
রিকি: সেসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না বেবি,ক্লাব হাউজে একবার চলো তারপর শোয়েবই সব বুঝিয়ে দেবে
সোমা: আমি কোথাও যাচ্ছি না,আপনাদের যা বলার এখানেই বলুন
পিয়াল: কি করব না করব সেটা আমাদের ব্যাপার।এই রিকি চলতো,মনে হচ্ছে সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না...
রিকি: হুম,তাইতো দেখছি...
(এই বলেই পিয়াল আর রিকি সোমাকে একরকম টানতে টানতে ক্লাব হাউজের দিকে নিয়ে যেতে লাগল)
সোমা: একি,আপনারা আমার হাত দিচ্ছেন কেন?ছাড়ুন বলছি,দেখুন ভালই ভালই আমার হাতটা ছেড়ে দিন নাহলে কিন্তু আমি চিৎকার করে লোক জড় করতে বাধ্য হব
রিকি: তোমার যা ইচ্ছা করতে পার কিন্তু কেউ আসবে বলে মনে হয় না,সবাই জানে আমরা শোয়েবের বন্ধু তাই কেউ সাহস দেখাতে আসবে না
সোমা: শোয়েব শোয়েব শোয়েব,কে এই লোক?কোথাকার কোন রাজকুমার আমিও দেখতে চাই,জানতে চাই নিজেকে সে কি মনে করে
পিয়াব: দেখবে,জানবে সবই করবে,একটু শুধু ওয়েট কর।আমরা তোমাকে ওর কাছেই নিয়ে যাচ্ছি...
সোমা অনেক চেষ্টা করল হাত ছাড়ানোর কিন্তু পারল না,বেশ কয়েকবার হেল্পের জন্য চিৎকারও করল কিন্তু আশেপাশের মানুষগুলো একবার তাকিয়েই মুখ ফিরিয়ে নিল।ওরা সোমাকে ভার্সিটির ক্যান্টিনের পাশেই একটা রুমের সামনে নিয়ে গেল।ভেতরে ঢুকতেই দেখলে বেশ কিছু ছেলে মেয়ে যার যার মত আড্ডা দিতে ব্যস্ত যাদের মধ্যে অনেককেই আজ সকাল ক্লাসে দেখেছে ও।রুমটার একেবারে সামনের দিকে একটা ছেলে টেবিলের উপর বসে আছে আর তার পাশেই একটা মেয়ে খুব অন্তরঙ্গভাবেই
বসে আছে,সবার সামনে এভাবে কেউ থাকে!কথাটা মনে মনে ভেবেই লজ্জা পেয়ে গেল ও।হঠাৎ শুনল...
রিকি: দোস্ত এই মেয়েটাকে একটা উচিত শিক্ষা দিতে হবে
শোয়েব: কেন?কি করেছে ও?
পিয়াল: অনেক কিছুই বলেছে,তার সারমর্ম হচ্ছে ও তোকে মোটেও ভয় পায় না,আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছে আর তোর নামেও অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে...
(ওরা যে এতক্ষণ শোয়েবকে এত এত কথা বলছিল সেদিকে তার বিন্দুমাত্র খেয়াল ছিল বলে মনে হল না সোমার।এতক্ষণ সে তার পাশের মেয়েটার কাঁধে মাথা রেখে ওর চুল নিয়ে খেলা করায় ব্যস্তত ছিল।পিয়ালের কথা শুনে উঠে দাঁড়াল তারপর মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল...)
শোয়েব: সিজা ডার্লিং,একটু ওয়েট কর আমি এক্ষুণি আসছি...
সিজা: ঠিক আছে বাট তাড়াতাড়ি করবে কিন্তু...
(শোয়েব এবার আস্তে আস্তে সোমার কাছে এগিয়ে আসল,সোমাকে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মুচকি হেসে ওর কানের একদম কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে বলল...)
শোয়েব: তা ম্যাডাম,কি কি বলেছেন আমার নামে শুনি.. 
(পিয়াল আর রিকি কিছু একটা বলতে গেলে শোয়েব ইশারায় ওদেরকে থামতে বলল)
শোয়েব: যে বলেছে আমিতো তার মুখ থেকেই শুনব।কি ম্যাডাম এখন মুখে কথা নেই কেন?
(সোমাকে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শোয়েব আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে এসে ওর থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটা একটু উঁচু করে ধরল,সোমাতো ভয়ে চোখমুখ শক্ত করে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইল)
শোয়েব: কি হল বেবি,চুপ করে আছো কেন?কিছুতো বল...
(সোমা নির্বিকারভাবে একবার শোয়েবের দিকে তাকিয়েই আবার চোখ নামিয়ে নিল)
শোয়েব: এই শোন,মেয়েদের সাথে জোর-জবরদস্তি করাটানা আমার একদমই ভাল লাগে না তাই আমাকে আর বাধ্য কর না
সোমা:....
শোয়েব: (রেগে গিয়ে)এই মেয়ে,শুনতে পাচ্ছো না আমি কি বলছি?না পেলে বল আমি অন্য ব্যবস্থা করছি
(এই বলে শোয়েব সোমার আরও কাছে চলে গেল,সোমা অনেক শক্তি সঞ্চয় করে বলল)
সোমা: আ...আমি কি...ক..কিছু বলিনি...
রিকি: এই মেয়ে মিথ্যে বলছ কেন?
(শোয়েব ইশারা করাতে রিকি চুপ করে গেল)
শোয়েব: তা মিস সোমা,আপনার নাম সোমাই তো তাইনা?
সোমা: জ্বি...জ...জ্বি...
শোয়েব: আমি সবথেকে বেশি অপছন্দ করি মিথ্যে বলাকে আর তারচেয়েও বেশি অপছন্দ করি আমার ব্যাপারে কেউ বাজে কথা বললে,আমাকে খারাপ বললে...
সোমা:....
শোয়েব: আর তুমি আজকে দুটো কাজই করে ফেলেছ
সোমা: না মানে ভাইয়া আমি আসলে আজ সকালে...(শোয়েব ইশারা করাতে সোমা চুপ হয়ে গেল)
শোয়েব: তুমি আমার ব্যাপারে ঠিক কি কি বলেছো তার সবই আমি জানি তবুও আমি তোমার মুখ থেকেই শুনতে চাই...
সোমা:....
শোয়েব: দ্বিতীয়বার বলার সাহস যখন নেই তখন এসব কথা বল কেন?
সোমা: আ...আমি...
শোয়েব: এখন যদি আমি তোমার সাথে খারাপ কিছু করে বসি তাহলে কি হবে?
সোমা: (ভয় পেয়ে)খা..খারাপ কিক..কিছু!মাম...মানে?
শোয়েব: বুঝতে পারছো না না?আচ্ছা ঠিক আছে,তোমাকে তাহলে প্র্যাক্টিকালিই বুঝিয়ে দিচ্ছি..
(কথাটা বলেই শোয়েব সোমার দিকে আরো এগিয়ে গেল,সোমা ভয়ে ভয়ে পেছাতে লাগল শেষে যখন দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে গেল তখন আর কোন উপায় না দেখে জড়োসড়ো হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়াল।শোয়েব একটু হেসে সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিল তারপর সোমার গলার কাছে হাত দিয়ে এক ঝটকায় ওর ওড়নাটা টান দিয়ে খুলে ফেলল।মুহুর্তেই যেন সেমার মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল,সব ভয় কোথায় যেন পালিয়ে গেল আর সেই জায়গায় ভর করল অসীম সাহস আর এক রাশ ঘৃণা,হাতটা অটোমেটিক চলে গেল শোয়েবের গালের উপর।ঠাস করে একটা শব্দ হল আর পুরো রুমটার সবাই স্তব্ধ হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখল এর মাঝেই সোমা বলে উঠল...)
সোমা: ইউ স্কাউন্ড্রেল,আমি কেন তোর ব্যাপারে বলা কথাগুলো দ্বিতীয়বার আর বলতর চাইছিলাম না জানিস?আমি ভেবেছিলাম তোর ব্যাপারে আমি যা যা বলেছি সবকিছু পুরোপুরি ঠিক না,হয়ত রাগের বশে অনেক বেশিকিছু বলে ফেলেছি,কিন্তু না এখন দেখছি তোর সম্পর্কে আমি যা যা বলেছি সবই সত্যি,বরং একটু কমই বলেছি আরও বেশি কিছু বলা উচিত ছিল।মেয়ে দেখলেই মাথা খারাপ হয়ে যায় তাইনা?কেন মেয়েরা কি মানুষ না?যেই মা তোকে জন্ম দিয়েছেন তিনিওতো একজন নারী,তাই নারী জাতের সাথে এমন অসভ্যতামি করার আগে সেই জন্মদাত্রী মায়ের মুখটা চেখের সামনে একবারও কি ভেসে ওঠে না?
এই যে এই থাপ্পড়টা দিলাম তা ঐসব মেয়েদের পক্ষ থেকে যাদের সাথে এর আগে এমন অসভ্যতামি করেছিস।এরপর থেকে কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকানোর আগে এই থাপ্পড়টার কথা মনে করবি আর এতদিন কাদের সাথে পাঙ্গা নিয়েছিস আমি জানিনা,তবে এবার তুই আমার সাথে পাঙ্গা নিয়েছিস তাই সাবধান করে দিচ্ছি তোর এসব সাঙ্গপাঙ্গকে আমার থেকে একশ হাত দূরে সরে থাকতে বলবি নাহলে কিন্তু খুব পস্তাতে হবে...
(শোয়েবের হাতে থাকা সোমার ওড়নাটা একটানে নিজের হাতে নিয়ে গলায় পেঁচিয়ে নিয়েই হন্ হন্ করে দরজা দিয়ে বেড়িয়ে পড়ল সোমা।শোয়েব আর ওর বন্ধুরা অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,বেশ কিছুটা সময় লাগল কি হচ্ছে বুঝতে যখন বুঝতে পারল কয়েকজন ছুটে গিয়ে ওকে ধরতে চাইল কিন্তু শোয়েব ইশারায় ওদেরকে না করে দিল।ডানহাতটা গালে দিয়ে একবার হাত বুলাল তারপর দরজার দিকে তাকাতেই থমকে গেল,দেখল রিশান দাঁড়িয়ে আছে ওখানে,ওদের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে।রিশানের সাথে শোয়েবের সম্পর্কটা অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বীদের মত,সবসময় একজন আরেকজনকে টপকে যেতে চায়।একজন কোন কিছুতে পিছপা হলেই অপরজন সেই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে,বোঝাতে চাই নিজে কতটা স্ট্রং আর অপরজন কতটা উইক।শোয়েবকে তাকাতে দেখে বিশ্বজয়ী একটা হাসি দিয়ে রিশান এগিয়ে আসল ওদের দিকে।
রিশান: ছি!ছি!শুনলাম শোয়েব দ্য গ্রেট আজ একটা মেয়ের হাতে থাপ্পড় খেয়েছে
জিসান: That's none of your businesse,so stay away from it...
রিশান: হেই ইউ,তোমাকে এখানে কথা বলতে কে বলেছে?যখন দুজন বড় মানুষ কথা বলে তখন সাঙ্গপাঙ্গদের কথা বলতে হয় না এই কমন ম্যানারটুকু জান না?
রিকি: ইউ...
(শোয়েব হাতের ইশারা করায় সবাই চুপ করে গেল)
শোয়েব: তা মি.রিশান আপনি এখানে কি মনে করে?
রিশান: এসেছিলাম তো অন্য একটা দরকারে কিন্তু এখানে এসে যে এতবড় একটা গিফ্ট পাব ভাবতেও পারিনি(বলেই কিটকিটিয়ে গেসে উঠল রিশান)
শোয়েব: তোর কাজ কি শেষ নাকি আরও কিছু বাঁকি আছে?
রিশান: শেষ কি বলছিস,সবেতো শুরু!এখানে যা যা হয়েছে সবাইকে বলকে হবে না?আমি ভাবছি সবাই যখন জানবে যেই শোয়েবকে সবাই এত ভয় পায়,সে ফার্স্ট ইয়ারের একটা মেয়ের হাতে এভাবে...
শোয়েব: শোন রিশান,ঐ মেয়েকে আমি যেতে দিয়েছি বলে যেতে পেরেছে,আমি যদি চাইতাম না তাহলে আজকে এখানেই ওর সঙ্গে যা ইচ্ছে তাই করতে পারতাম...
রিশান: তাহলে করিসনি কেন?
শোয়েব: ভেবে দেখলাম জোর করে তো অনেককিছুই করা যায়,একটু আপসে কিছু করতে পারলে তবেই না আসল মজা...
রিশান: তুই কি বলতে চাইছিস?
শোয়েব: বলতে চাইছি,হাই সোসাইটির ওসব ড্রামা কুইন শেমলেস মেয়েদের সাথেতো অনেকি হল এবার একটু অন্য কোয়ালিটির মাল যাচাই করলে কেমন হয়?
রিশান: মানে?
শোয়েব: মানে এতদিন যেসব মেয়েদের সাথে এনজয় করেছি তারাতো সব দাঁতভাঙ্গা শোপিস,এবারে একটা আসল নাগিনী পেয়েছে যার বিষদাঁতও আছে আবার ছোবলও দিতে জানে।আমাদের কাজ হল ওর ঐ বিষদাঁত ভেঙ্গে ওকে নিজের কে নেয়া।অনেকতো হল ভেজা বেড়ালদের সাথে খেলা,এবার একটু বাঘিনীর সান্নিধ্যে এসে দেখি কেমন লাগে...
রিশান: (হেসে)তোকে দিয়ে এসব হবে না,দেখলি না আজকে কি অবস্থাটা করল?
শোয়েব: এই থাপ্পড়ের হিসাব যদি আমি গুণে গুণে না নিয়েছি তাহলে আমিও আমার নাম বদলে ফেলব,আর কখনই ভার্সিটিতে আসব না।আমি বেট ধরছি যেই ওড়নাতে হাত দেয়ার জন্য ও আমার গালে থাপ্পড় মেরেছে,সেই ওড়নাটাই ও নিজ হাতে আমার সামনে খুলে ফেলে দিয়ে নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ করবে...
রিশান: তাই নাকি?ঠিক আছে তুই যদি কাজটা করতে পারিস তাহলে তোর পুরো মাসের যাবতীয় বিল আমি পরিশোধ করব আর সেই সাথে আর কখনই তোর পথে এসে দাঁড়াব না আর যদি কাজটা আমি পারি...
শোয়েব: তাহলে আমিও তোর যাবতীয় কস্ট বিয়ার করব আর ভার্সিটি ছেড়ে দিব
রিশান: ওকে দেন ইট'স এ বেট,ডিল?
শোয়েব: ইয়া,ডিল...

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ