লাভ গেমস্
লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu
পর্বঃ ০৮
নারিকেল গাছটার নিচে দুইটা পুতুল একা একাই হাঁটাহাঁটি করছে আর সেটা দেখে একটা ছোট্ট বাচ্চা আনন্দে লাফাচ্ছে আর হাততালি দিচ্ছে।একটু ভাল করে খেয়াল করতেই ওরা দেখল পুতুল দুটো আসলে একা একা নড়াচড়া করছে না,গাছের আড়াল থেকে একজোড়া হাত সরু সুতার মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ণ্ত্রণ করছে।ওরা বিস্ফারিত চোখে দেখল হাত জোড়া সোমার।ওরা আর একমুহূর্তও দেরি না করে ওর দিকে ছুটে গেল।
ফারিয়া: তুত..তুই এটা কিভাবে করলি!
জেরিন: আমরাতো নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছি না
সোমা: আ..আসলে পুতুলনাচ আমার খুব পছন্দ তাই যেখানেই হত ছুটে যেতাম দেখার জন্যে।ওদের থেকেই একটু একটু করে শিখেছি আরকি
লোপা: ওয়াও সোমা,ইউ আর জাস্ট অসাম।আমার ডিসিশন ফাইনাল হয়ে গেছে,আমরা কম্পিটিশনে পুতুলনাচটাই দেখাব আর তারসাথে হালকা একটু ডান্স
সোমা: কিন্তু...
লোপা: কোন কিন্তু না,কম্পিটিশনে সিজাদের টিম পাওয়ার ফাইভ গার্লসও পার্টিসিপেট করছে এন্ড ওরা কিন্তু খুব স্ট্রং কম্পিটিটর,ব্যাক টু ব্যাক উইনার তাই ওদের হারাতে হলে ইউনিক কিছু করতেই হবে এন্ড বিলিভ মি দিস আইডিয়া ইজ ইউনিক
(লোপার যুক্তির কাছে হার মেনে ওরা আর কোন প্রটেস্ট করল না)
ফারিয়া: কিন্তু আমাদেরতো এখনও একজন মেম্বার কম আছে
লোপা: সেটা আমি দেখব
জেরিন: তার মানে কি তুমি পারফর্ম করবে?
লোপা: তোমাকে এসব ব্যাপার নিয়ে ভাবতে হবে না জাস্ট কনসেনট্রেট অন ইয়োর প্র্যাকটিস
ফারিয়া: ওকে...
(পরদিন)
ক্লাস শেষে ওরা সবাই লোপার বাসায় এসেছে,ভার্সিটির কমনরুমে প্র্যাকটিস করার পারমিশিন দেবে আরও কয়েকদিন পরে তাই আপাতত কয়েকদিন লোপাদের বাসায়ই প্র্যাকটিস করবে ওরা।ওরা অনেক্ষণ ধরে লোপার রুমে বসে আছে,ওদের গ্রুপের আরেকজন মেম্বারের জন্যে ওয়েট করছে কিন্তু কে সে ওরা কেউই জানেনা।ওরা এখানে এসেছে অনেক্ষণ হয়ে গেছে কিন্তা তার আসার কোন নামই নেই!ফারিয়াতো রাগে ফুঁসছে,যেন পেলেই তাকে আস্ত খেয়ে ফেলবে।আরও বেশ কিছু্ক্ষণ পরে হন্তদন্ত হয়ে জাফির লোপার রুমে ঢুকল
জাফির: স্যরি দোস্ত,অনেক দেরি হয়ে গেল আসলে আম্মু একটা কাজ দিয়েছিল ওটা শেষ করতে করতেই...
ফারিয়া: ইউ!😮
জাফির: আ...আপনি?
সোমা: তোরা কি একে অপরকে চিনিস?
ফারিয়া: এই যে আপনি,সেদিন না খুব ইনোসেন্ট সাজছিলেন,তাহলে আজকে এসবের মানে কি?আমাদের ফলো করে এখানে এসেছেন না?😡
জাফির: আমি কেন আপনাদের ফলো করতে যাব?😟
ফারিয়া: (রেগে গিয়ে)তবে কি আমরা আপনাকে ফলো করছি?
জাফির: করতেওতো পারেন,আমিতো আর আপনাদের মনের কথা জানিনা😨
ফারিয়া: (তেড়ে গিয়ে)ইউ ইডিয়ট...
জেরিন: আহ্ ফারিয়া হচ্ছে টা কি?উনাকে কিছু বলার সুযোগ তো দে,উনি হয়ত কোন কাজে এসেছেন...
জাফির: হুম
ফারিয়া: কাজ মাই ফুট,উনার একটাই কাজ মেয়েদের ফলো করা আর ওদের সামনে ইনোসেন্ট ভাব ধরে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করা।এই যে কান খুলে শুনে রাখুন,আমার সামনে ওসব নাটক চলবে না,নাটক করতে চাইলে অন্য জায়গায় গিয়ে করেন,আমার সামনে করতে আসলে একটা ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিব বলে দিলাম
সোমা: তুই আমার কথাটা একটু শোন প্লিজ
ফারিয়া: কি শুনব হুহ,আমিতো একটা জিনিস বুঝতে পারছি না তোরা দুজন এই ক্যারেক্টারলেস ছেলেটার পক্ষপাত কেন করছিস?
জাফির: কিহ্!আমি ক্যারেক্টারলেস!এই যে মিস মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ
সোমা: এহ্ মাইন্ড ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ মাি ফুট,আপনি খালি ক্যারেক্টারলেসই না আপনি একটা ভেজা বেড়াল😫
জাফির: কিহ্😖
সোমা: ঠিকইতো বলেছি,উপরে উপরে এমন ভাব ধরেন যেন ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারেন না অথচ তলে তলে...
জাফির: শাট আপ,এতক্ষণ অনেক উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন আমি কিচ্ছু বলিনি কিন্তু এবার আর ছাড়ব না
ফারিয়া: কি করবেন আপনি?
জাফির: সেটা বলব না করেই দেখাব
ফারিয়া: এহ্ করেই দেখাবে,ওই মিয়া আমার নামও ফারিয়া বুঝছেন,আপনাকে আমি এমনি এমনি ছেড়ে দিব এটা ভুলেও ভাববেন না,আমাে সাথে লাগতে আসলে আমিও বুঝিয়ে দিব ফারিয়া কি জিনিস
জাফিয়া: আর আপনার আমি এমন হাল করব আপনি নিজেই নিজেরে চিনতে পারবেন না,বাপরে বাপ কি ঝগড়াটে মেয়েরে বাবা!এই রকম দজ্জাল মহিলা আমি জীবনেও দেখিনি
ফারিয়া: (রেগে গিয়ে)কি বললেন আপনি?আমি ঝগড়াটে!
জাফির: ঝগড়াটে নয়তো কি?কোনকিছু না জেনেই আমার সাথে শুধু শুধু ঝগড়া করছেন!
ফারিয়া: এই মি.পেয়েছেনটা কি আপনি?সেই কখন থেকে আমাকে ঝগড়ুটে ঝগড়ুটে বলে যাচ্ছেন!আমি ঝগড়া করছি নাকি আপনি?আমি যদি ঝগড়ুটে হই তাহলে আপনি কি?আপনি তাহলে,আপনি তাহলে একটা লেজকাটা বানর
জাফির: হোয়াট!
ফারিয়া: হুম শুধু বানরই না আপনি একটা শিম্পাঞ্জী আর একটা উল্লুক আর আর...
জাফির: স্টপ আই সে,ইউ স্টুপিড গার্ল...
ফারিয়া: ওই ওই আমি স্টুপিড না!মুখ সামলে কথা বলবেন
জাফির: আমি মুখ সামলাবো কেন,সামলাতে হলে আপনি সামলান...
ফারিয়া: ইউ ইডিয়ট,ননসেন্স,বড়লোক বাপের ইর্ম্পোর্টেট বান্দর...
জাফির: ইউ...আপনি একটা শাকচুন্নি,শঁওড়া গাছের পেত্নী,জংলী বিল্লি আর আর...
(ফারিয়া এবার রেগে মেগে জাফিরের দিকে তেড়ে আসল,ঘটনা রীতিমত চুলোচুলির পর্যায়ে চলে গেল।লোপা এতক্ষণ কিচেনে ওদের জন্য নাস্তা বানাচ্ছিল,ট্রে হাতে রুমে ঢুকতেই ওদের এই অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে গেল)
লোপা: আরে আরে আরে,তোমরা কি করছ এসব!
সোমা: দেখ না লোপা,এরা কারো কোন কথাই শুনছে না,সেই তখন থেকে শুধু ঝগড়াই করে যাচ্ছে!
ফারিয়া: ঝগড়া আমি না,ওই লেজকাটা বান্দরটা শুরু করেছে
জাফির: আমি না ওই শাকচুন্নিটা শুরু করেছে
ফারিয়া: শাট আপ
জাফির: ইউ শাট আপ
লোপা: হেই হেই তোমরা এমন ঝগড়া করলে একসাথে কাজ করবে কিভাবে?
ফারিয়া: কাজ আর এর সাথে!অসম্ভব😒
জাফির: ও রাজি হলেও আমি রাজি না,ওর সাথে কাজ করার থেকে কচু গাছের সাথে গলায় দড়ি দেয়াও ঢেড় ভাল😏
ফারিয়া: ইউ...
সোমা: এই তোরা একটু চুপ করবি?উফ!সেই কখন থেকে ঝগড়া করে যাচ্ছিস এই তোরা কিভাবে পারিস বলতো আর জাফু তুই তুইতো কখনই কারো সাথে ঝগড়া করিস না তাহলে এখন কিভাবে...
জাফির: আমি আবার কখন ঝগড়া করলাম,ঝগড়াতো ঐ ম্যাডাম শুরু করেছে
ফারিয়া: আমি আবার কখন...
সোমা: ফর গডস সেক তোরা একটু চুপ করবি...
জেরিন: জাফু...মানে...এই সোমা,জাফু মানে জাফির তাইনা?তোর বেস্ট ফ্রেণ্ড...
সোমা: হুম
লোপা: আর হ্যাঁ,ও হচ্ছে তোমাদের টিমের নতুন মেম্বার...
ফারিয়া: হোয়াট!
জেরিন: ওয়াও নাইস টু মিট ইউ জাফির
জাফির: নাইস টু মিট ইউ টু
ফারিয়া: ইম্পসিবল এই ইম্পোর্টেট মাংকিটার সাথে আমি কিছুতেই পারফর্ম করব না
জাফির: ও করলেও আমি করব না
সোমা: শাট আপ,তোরা ঝগড়া করতে থাক আমি গেলাম
লোপা: আরে আরে সোমা,এক মিনিট এক মিনিট।এই যে তোমরা দুজন চুপচাপ প্র্যাক্টিস শুরু কর,আর একটা কথাও বলবে না...
জাফির: কিন্তু লোপা আমিতো কিছুই পারিনা
লোপা: সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না,আমি আর সোমাতো আছিই সেজন্য
(ওদের কথা শুনে ফারিয়া মুখ বেঁকিয়ে চলে গেল)
লোপা: (মনে মনে)হায় খোদা,এদের দুজনকে একসাথে কিভাবে ম্যানেজ করব?আমারতো ভাবতেই ভয় লাগছে😟
(কয়েকদিন পরে)
গত কয়েকদিন ওরা লোপার বাসাতেই প্র্যাক্টিস করেছে কিন্তু আজ থেকে সবাই কমনরুমেই প্র্যাক্টিস শুরু করবে।এই কয়দিনে ফারিয়া আর জাফিরের সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে,আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছে।ওরা কমনরুমে ঢুকতেই চোখ কপালে উঠে গেল,সিজাদের টিম পাওয়ার ফাইভ গার্লসের একটা পারফর্মেন্স চলছে।পারফর্মেন্স এতটাই হাই ক্লাস ছিল যে সবার চোখ কপালে উঠে গেল,কর্ণারের একটা চেয়ারের দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠল সোমা।শোয়েব আর ওর ফ্রেণ্ডরা ওদিকটায় বসে সিজাদের পারফর্মেন্স দেখছে আর একটু পর পর সিটি দিচ্ছে।ওদিক থেকে চোখ ফিরিয়ে ওরা নিজেদের পারফর্মেন্স শুরু করল,প্রথমে ফারিয়া আর জেরিন কিছুক্ষণ ডান্স করল,কেউ সেদিকে খেয়ালও করল না।একটু পরেই সোমা আর জাফির পর্দার আড়াল থেকে পুতুলনাচ শুরু করল আর কেউ খেয়াল না করলেও সোমার গান শুনে শোয়েব ঠিকই মুখ তুলে তাকালো।মুচকি একটা হাসি দিয়ে সিজার দিকে ঘুরে দাঁড়াল সিজা ওর সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে ওর গায়ের সাথে ঘেঁষে দাঁড়ালো।শোয়েব মুচকি হেসে সিজার চুলের মাঝে নাক ডুবিয়ে দিল।সোমা সেদিকে তাকিয়ে কটমট করে তাকালো তারপর মনে মনে বলল...
সোমমা: ছি!সবার সামনে এভাবে...লজ্জা শরম দেখছি কিছুই নেই...
(পরদিন কমনরুমে)
প্র্যাক্টিস শেষে সোমা একটা ওয়ালপেপারে কালার করছে,শোয়েব
সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওর পেছনে এসে দাঁড়ালো,সোমা একমনে ছবি এঁকে যাচ্ছিল তাই খেয়ালই করেনি যে শোয়েব ওর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে।আঁকা শেষ করে সোমা উঠে দাঁড়াতেই ওর হাতের রঙ্গের কৌটো উল্টে শোয়েবের টি শার্টে লেগে গেল,সোমা ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে বলল...
সোমা: স্যরি স্যরি স্যরি আ..আমি আসলে খেয়ালই করিনি যে আপনি...
শোয়েব: ইট'স ওকে ইট'স ওকে আই উইল ম্যানেজ...
সোমা: (রুমাল এগিয়ে দিয়ে)প্লিজ এটা দিয়ে পরিষ্কার করে নিন...
শোয়েব: লাগবে না,বললামতো ইট'স ওকে,ইউ গািজ প্লজ কন্টিনিউ আই উইল ম্যাসেজ ইট...
(শোয়েব চলে গেল,সিজা আর ওর বান্ধবীরা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সোমার দিকে কটমট করে তাকালো)
(পরদিন সকালে)
কম্পিটিশনের আর মাত্র দুদিন বাঁকি আছে,সবাই ফাইনাল রিহার্সেলের জন্য ওয়েট করছে,আজকে সবাই স্টেজেই প্র্যাক্টিস করবে তাই একে একে পারফর্ম করবে।এখন সিজাদের টিম পারফর্ম করছে আর একটু পরেই সোমারা পারফর্ম করতে পারবে।সোমা ওর পুতুলটা হাতে ধরে দাড়িয়ে আছে,হঠাৎই কেউ ওটার উপর কফি ফেলে দিল।সোমা তাকিয়ে দেখল সিজা আর ওর টিম হাসতে হাসতে চলে গেল,পুতুলটার অবস্থা দেখে সোমার খুব কান্না পাচ্ছে,ফারিয়াতো পারলে ছুটে গিয়ে ওদেরকে পিটিয়ে আসে।অডিয়েন্স সারি থেকে শোয়েব আর জিসান পুরো ঘটনা দেখে দুজন দুজনের মুখ চাওয়া চাওয়া করল তারপর কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব করে বেরিয়ে গেল।
(বিকেলে)
সোমা পুতুলের জামাটা হাতে নিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে,এয়ার ফ্লো দিয়ে শুকানোর চেষ্টা করছে।তখনই শোয়েব চুপিচুপি ওর পেছনে এসে দাঁড়ালো
শোয়েব: হ্যালো মিস সোমা
সোমা: ওহ্ হাই
শোয়েব: মন খারাপ?
সোমা: একটু
শোয়েব: (একটা খাম বাড়িয়ে দিয়ে)দিস ইজ ফর ইউ
সোমা: কিন্তু...
শোয়েব: কোন কিন্তু না,জাস্ট টেক ইট এন্ড স্মাইল...
সোমা:ওকে
(শোয়েব চলে গেল,সোমা খামটা খুলে দেখলা একটা ছোট্ট পার্চমেন্টে লেখা,
"All the best I know if you want you can rock the floor.Just go for it..."
(কম্পিটিশনের দিন)
একের পর এক টপ লেভেলের পারফর্মেন্স চলছে,সবার পারফর্মেন্স দেখে সোমার গলা শুকিয়ে গেছে।কিছু্ক্ষণ পরেই ওদের টিমের নাম এ্যানাউন্স করল,সোমা ভয়ে ভয়ে দর্শকদের দিকে তাকালো।প্রথম সারিতেই শোয়েব বসে আছে,ও তাকাতেই অল দ্য বেস্ট করল,সোমা সব ভয় ভুলে মুচকি হেসে জাফিরকে নিয়ে ব্যাকস্টেজে চলে গেল আর ফারিয়া আর জেরিন স্টেজে উঠে গেল।মাইক্রোফোনটা মুখের সামনে সেট করেই সোমা গাইতে শুরু করল আর গানের সাথে সাথে ফারু আর জেরু পারফর্মেন্স শুরু করল...
তুনে পায়েল হে ঝানকায়ি
আবতো আজা তু হারযায়ি
ও হো হো ও হো হো।।
মেইনে মেইনে পায়েল হে ঝানকায়ি
আবতো আজা তু হারযায়ি
মেরি শাঁসোমে তু হে বাছা
ও সাজনা আজা না আব তারছা।।
গান চলছে আর সেই সাথে ওদের পুতুলনাচ,সোমা এর আগেই এটা করেছে কিন্তু জাফির একেবারেই নতুন কিন্তু ওদের পারফরমেন্স দেখে কেউই সেটা বুঝতে পারবে না,সোমার সাথে তাল মিলিয়ে বেশ ভালোই করছে জাফির।দর্শকরাও বেশ এনজয় করছে মনে হচ্ছে,পারফরমেন্স শেষ করে ওরা নিচে নামতেই শোয়েব ওর দিকে এগিয়ে আসল,সোমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল...
শোয়েব: ওয়েল ডান,আই হোপ রেজাল্টটা তোমাদের ফেভারেই আসবে
সোমা: থ্যাঙ্কস
(সিজাকে দূরে দাঁড়িয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সোমা তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে নিল)
সোমা: আ..আমি এখন আসছি
শোয়েব: ওকে...বাই...
(সিজার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)
শোয়েব: (মনে মনে)ইউজলেস ওম্যান,এদের সবথেকে বড় উইকনেস যে জেলাসি সেটা কিছুতেই বোঝে না...
হ্যাঁ আপনাদের ধারণা একেবারেই ঠিক,কম্পিটিশনে সোমাদের দলটাই জিতেছে,ওরা যখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওরা সবাই নাচতে লাগল।সোমা রাজি হচ্ছিল না কিন্তু সবার জোরাজুরিতে সবার সাথে নাচতে বাধ্য হল।শোয়েব এক কর্ণারে দাঁড়িয়ে সিজাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল,সোমা মন খারাপ করে বিচারকদের নামে অবজেকশন করছিল।কিন্তু শোয়েবের সেসব দিকে কোন খেয়ালই নেই,ওর চোখ আটকে গেছে সোমার দিকে,মেয়েটা যে এত সুন্দর নাচতে পারে সেটা আগে কখনও খেয়ালই করা হয়নি...
সোমা ওর দিকে তাকাতেই মুচকি একটা হাসি দিয়ে কনগ্রাচুলেট করল,সিজা সেদিকে তাকিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেল....
(রাতে হোস্টেল রুমে)
ফারিয়া: ইয়ার জেরু,কেউ একজন যে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে খেয়াল করেছিস?
জেরিন: কে?কার কথা বলছিস?
(ফারিয়া সোমার দিকে ইশারা করল)
জেরিন: ও হ্যাঁ,ঠিকই বলেছিস।সে তো আমাদের সোমা ম্যাডামকে ছাড়া কাউকে চোখেই দেখছে না
সোমা: এই তোরা এসব কি বলছিস বলতো...
ফারিয়া: ঠিকইতো বলছি,শোয়েব ভাইয়াতো এখন সবসময়ই তোর আশেপাশেই ঘুরঘুর করে।সিচা ম্যাডাম সারাদিন এত ট্রাই করে ওর এ্যাটেনশন গ্রো করার কিন্তু বেচারি যাই করুক কোন লাভ হয় না
সোমা: সেটাতো উনি এমনিই...
জেরিন: হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা সবই বুঝি
সোমা: তোরা না....
ফারিয়া: তুই যাই বলিস না কেন,এই ছেলে তোর প্রেমে পড়েছে,একদিন দেখবি ও তোর জীবনটাই বদলে দেবে...
ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে আসল সোমা,তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল...
সোমা: তুই ঠিকই বলেছিলি ফারিয়া,এই ছেলে সত্যিই আজকে আমার জীবনটা পুরোপুরিই বদলে দিয়েছে।শুধু বদলে দিয়েছে বললে ভুল হবে,একেবারে তছনছ করে দিয়েছে...
0 মন্তব্যসমূহ