লাভ গেমস্ - পর্ব ১২

লাভ গেমস্ - পর্ব ১২

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ১২

শোয়েব: তাই নাকি?ঠিক আছে দেখা যাক...
শোয়েব সোমার দিকে এক পা বাড়াতেই সোমার হাতটা চলে গেল কোমড়ের কাছে,চোখের পলকেই শাড়ির আড়াল থেকে একটা চকচকে ধারালো চাকু বেরিয়ে এলো।আচমকা এমন ঘটনায় শোয়েব এতটাই চমকে গেছে যে মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না।সোমা চাকুটা শোয়েবের দিকে তাক করে বলল...
সোমা: খবরদার!আর এক-পা ও সামনে এগোবার চেষ্টা করবে না,তাহলে আমি...
শোয়েব: (হেসে সোমার দিকে এগোতে এগোতে)কি করবে?আমাকে মেরে ফেলবে?পারলে চেষ্টা করে দেখতে পার...
সোমা: নাহ্ তোমাকে আমি কিছুই করব না,আর একপা ও সামনে এগোলে আমি...(চাকুটা ঘুরিয়ে নিজের গলার কাছে রেখে)আমি নিজেকেই শেষ করে ফেলব...
শোয়েব থমকে দাঁড়ালো,সোমার চোখের দিকে তাকিয়ে ও চমকে গেছে।মেয়েটার চোখে অন্যরকম একটা দৃঢ়তা আছে,ওই চোখই বলে দিচ্ছে ও মুখে যা বলছে সেটা করে দেখাতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করবে না।
শোয়েব: কি করছ সোমা,চাকুটা আমাকে দাও আই প্রোমিস আমি তোমাকে হাতও লাগাব না
সোমা: (তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে)প্রোমিস!হা হা হা প্রোমিস কথাটার মানে জানো?তোমার মুখে প্রোমিস কথাটা মানায় না মি.শোয়েব কারণ তুমি প্রোমিস কর তা ভাঙ্গার জন্যে।তাই সারা পৃথিবীর সব মানুষকে বিশ্বাস করলেও তোমাকে বিশ্বাস করা যায় না...
শোয়েব: সোমা আমার কথাটা একবার শোন প্লিজ...
সোমা: হা হা হা কি ভেবেছো,আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমাকে ভোগ করবে তারপর তোমার বন্ধুদের সামনে নিজের হারানো রেপুটেশন উদ্ধার করবে?প্রমাণ করবে যে ইউ আর নট এ লুজার,ইউ আর এ রিয়েল প্লে বয় তাইনা?আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না বুঝেছো?
শোয়েব: সোমা,সোমা আমি তেমন কিছুই করব না প্লিজ চাকুটা ফেলে দাও...বিলিভ মি আগে আমি যাই করি না কেন এখন তো আমি তোমার হাজবেন্ড তাইনা?আর তুমি আমার একমাত্র ওয়াইফ তাই তোমার সাথে কি আমি অমন কিছু করতে পারি তুমিই বল...
সোমা: Step back...
শোয়েব: What?
সোমা: I said step back,একদম কাছে আসার চেষ্টা করবে না
শোয়েব: (একটু পিছিয়ে গিয়ে)ওকে ওকে,রিল্যাক্স...সি আই এ্যাম গোয়িং ব্যাক...
সোমা: হুইস্কির বোতলটা আমাকে দাও
শোয়েব: কি!😯
সোমা: যা বলেছি তা কর,হুইস্কির বোতলটা দাও আর তার সাথে ঐ পানির জগটাও
শোয়েব: Are you out of your mind?হুইস্কি,পানির জগ এসব দিয়ে কি করবে?
সোমা: কথা না বাড়িয়ে যা বলছি কর,আগে হুইস্কির বোতলটা দাও বলছি নাহলে...
শোয়েব: ওকে ওকে,ওয়েট দিচ্ছি দিচ্ছি...
(শোয়েব সোমার দিকে হুইস্কির বোতলটা এগিয়ে দিল,সোমা কাঁপা কাঁপা হাতে বোতলটা নিল।গলার সামনে এক হাতে চাকুটা ধরে রেখেই আরেক হাতে বোতলটা নিয়েই নিজের মাথায় আঘাত করে বসল।মাথা ফেটে দর দর করে রক্ত পড়ছে কিন্তু সোমার মুখে বিশ্বজয়ের হাসি,শোয়েব অবাক হয়ে সেদিয়ে তাকিয়ে আছে)
শোয়েব: হোয়াট আর ইউ ডুইং ডেম ইট...
সোমা: জগটা দাও..
শোয়েব: হোয়াট!😮
সোমা: (চিৎকার করে)I said give me the jog and stay away from me...
শোয়েব কাঁপা কাঁপা হাতে সোমার দিকে জগটা এগিয়ে দিল,সোমা জগটা হাতে নিয়েই দরজা খুলে বেরিয়ে গেল।শোয়েব মূর্তির মত দাঁড়িয়ে রইল রুমের মধ্যেই।
এদিকে সোমা সিঁড়ির কাছে গিয়েই হাতের জগটা বেশ জোরেই ভেঙ্গে ফেলল তারপর ভাঙ্গা টুকরো গুলো দিয়ে শরীরের বেশ কয়েকটা জায়গায় হালকা ক্ষত সৃষ্টি করল তারপর বিকট শব্দে চিৎকার করে কপালটা দেয়ালের সাথে একবার বাড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেল।তারপর সিঁড়ির নিচে নিথর হয়ে মরার মত শুয়ে পড়ল...
সোমার চিৎকার শুনে শোয়েব,শোয়েবের বাবাসহ বাড়ির সব কাজের লোক বেরিয়ে আসল।সবাই সোমাকে এই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ছুটে চলে আসল ওর দিকে...
বাবা: বৌমা!তোমার এই অবস্থা হল কি করে?আমার ছেলেটা কি তোমাকে কিছু করেছে?
শোয়েব: আমি কিছুই করিনি বাবা
বাবা: তুই চুপ কর,বৌমা তুমি বল...
সোমা: (অনেক কষ্টে)না বাবা,ও কিছু করেনি।আ..আমি আ..আসলে ঐ পা..পানির জ..জগ
কথা শেষ করতে পারল না সোমা,তার আগেই অজ্ঞান হয়ে গেল।অভিনয় না সত্যি সত্যিই অজ্ঞান হয়ে গেল,আসলে সকাল থেকে ওর উপর দিয়ে যা গেছে আর এখনকার এসব ঘটনা সব মিলিয়ে আর এত ধকল সহ্য হয়নি...
বাবা: বৌমা,বৌমা কথা বল,এই শোয়েব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছিস ওকে হসপিটালে নিতে হবে তো,গাড়ি বের কর...
শোয়েব গাড়ি বের করে এসে দেখল ততক্ষণে সোমার জ্ঞান ফিরে এসেছে,বাবার জোরাজুরিতে ওকে কোলে তুলে নিয়েই গাড়ির দিকে এগোতে লাগল।সোমার দিকে তাকাতেই ও এক চোখ টিপে বিশ্বজয়ের হাসি দিল আর তাতে শোয়েব আরও জ্বলে পুড়ে যেতে লাগল।মনে মনে বলল...
শোয়েব: এ আমি কোন সোমাকে দেখছি?এই সোমাকেতো আমি চিনিনা!ওকে দেখেতো মনে হচ্ছে ওর মাথায় খুন চেপে গেছে,ওকে এখন কোন কিছু থেকে আটকানো যাবে না,ও যা বলবে সব করতে পারবে।She is getting so dangerous for me...
.
(সকাল ৬টা)
চোখ মেলে তাকালো প্রোমা,ঘুমটা ভালই হয়েছে ওর।আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসতেই কাল রাতের সব কথা মনে পড়ল,তুহিনের কাল রাতের ব্যবহারের কথা মনে পড়তেই মনটা খুশিতে ভরে উঠল ওর।কিন্তু তুহিনকে যখন সোফায় শুয়ে থাকতে দেখল তখন এক নিমেষেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল।চুপচাপ উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল,ফ্রেশ হয়ে এসে দেখল তুহিন অলরেডি নিচে চলে গেছে।মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল প্রোমার,সোজা নিচে নেমে গেল ও...
সবার জন্যে নাস্তা রেডি করে টেবিল সাজিয়ে ওয়েট করতে লাগল।বাবা একটু পরেই চলে এলো কিন্তু তুহিনের কোন দেখা নেই,অনেক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন ও এল না তখন কিছু না খেয়েই নিজের রুমে চলে আসল প্রোমা...
(হসপিটালে)
এখানে নিয়ে আসার পরই ঘুমের ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল সোমাকে,ঘুম ভাঙল দুপুরের পর।চোখ মেলে তাকাতেই শোয়েবের মুখটা দেখতে পেল,মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল ওর,অনেক কষ্টে নিজেকে কনট্রোল করে বলল...
সোমা: তুমি!তুমি এখানে কি করছ?
শোয়েব: কি আর করব?স্ত্রীর সেবা যত্ন করছি...
সোমা: নাটক বন্ধ কর আর আসল উদ্দেশ্য বল,আমি জানি তুমি এমনি এমনি এভাবে আমার পাশে বসে থাকার বান্দা না...
শোয়েব: ঠিক ই ধরেছ,আমি এখানে শখ করে আসিনি।বাবার জোরাজুরিতে আর...
সোমা: আর কি?
শোয়েব: ফরগেট ইট সোমা,কাল রাতে তো চালাকি করে বেঁচে গেছো কিন্তু আজ...আজ কি করবে?আজ তোমার কোন চালাকিই চলবে না...
সোমা: (অট্টহাসি হেসে)আজকের ব্যবস্থাতো আমি অনেক আগেই করে রেখেছি,আমার ভয়তো ছিল কালকের রাতটা নিয়ে।সেটা যখন ভালই ভালই পার করতে পেরেছি আর কোন ভয় নেই...
শোয়েব: কি ব্যবস্থা করে রেখেছো?
সোমা: সেটা সময় হলেই জানতে পারবে...
শোয়েব: (রেগে মেগে)ইউ...
(ঠিক তখনই সোমার কেবিনে জাফির ঢুকল)
জাফির: স্যরি ফর দ্য ডিস্টার্ব ভাইয়া বাট আই নিড টু মিট সোমা সো...
শোয়েব: ইট'স ওকে,ইউ গাইজ টক টু ইচ আদার আমি একটু আসছি...
(শোয়েব চলে গেল,জাফির কিছু বলতে যাবে তখনই সোমা ওকে ইশারায় নিষেধ করে দিল)
সোমা: জাফু....তোকে এত্তগুলো মিস করেছি জানিস?
জাফির: আমিও তোকে অনেক মিস করেছি কিন্তু...
সোমা: এখন বলতে পারিস,শোয়েব চলে গেছে...
জাফির: তারমানে এতক্ষণ...
সোমা: দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিল
জাফির: ওহ্ এখন বল তোর এই অবস্থা কি করে হল?শোয়েব ভাইয়া কিছু করেনিতো?
সোমা: (হেসে)ওকে সেই সুযোগ দিলেতো...
জাফির: তারমানে...
সোমা: আমি নিজেই এসব...
জাফির: (রেগে মেগে)কিহ্!তুই...এই তোর মাথার ঠিক আছেতো?
সোমা: আমার মাথা ঠিকই আছে
জাফির: তাহলে এসব...
সোমা: এসব না করলে যে ও আমাকে...
জাফির: তাই বলে...নিজের এত বড় ক্ষতি!😡
সোমা: তো কি করব?তোকে না বলেছিলাম সবকিছু একদম টাইমলি আমার হাতে পৌঁছে দিবি,দিসনি কেন আগে তাই বল...
জাফির: আমি কি করব?সবকিছু রেডি করতে করতেই রাত হয়ে গিয়েছিল তারপর ওখানে গিয়ে দেখলাম তোরা অলরেডি ওখান থেকে চলে এসেছিস।আর শোয়েব ভাইয়াদের বাড়িতেতো সারাক্ষণই উনি তোর সাথেই ছিলেন তাই আর রিস্ক নেইনি।ধরা পড়লে যে তোর সব প্ল্যানই মাটি হয়ে যেত তাই...
সোমা: হুম বুঝলাম,আমার সামনেও তাই এটা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না
জাফির: তাই বলে...বলছি যে অন্য কোন উপায় কি বের করা যেত না?
সোমা: হয়ত যেত কিন্তু ঐ মুহূর্তে আমার মাথায় ওটা ছাড়া আর কোন কিছুই আসছিল না
জাফির: হুম বুঝলাম
সোমা: আচ্ছা এখন ওসব বাদ দে,আগে যেটা আনতে বলেছিলাম সেটা বের করতো
জাফির: (একটা প্যাকেট সোমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে)এই নে,ধর তোর জিনিস...
সোমা: ওয়েলডান দোস্ত,আজ এটা দিয়েই ওই প্লেবয় টাকে শায়েস্তা করব...
.
তুহিন বাসায় ফিরল সন্ধ্যার পর,প্রোমা তখন বালিশে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরটা আর চলছে না,ক্লান্তিতে তুহিন যে রুমে এসেছে সেটাও খেয়াল করেনি।
তুহিন: এই অবেলায় শুয়ে আছো যে,শরীর খারাপ নাকি?
প্রোমা: (চমকে উঠে) আ..আপনি কখন এলেন?
তুহিন: এটা আমার প্রশ্নের উত্তর না..
প্রোমা: হ্যাঁ মানে ওই একটু শরীরটা খারাপ লাগছিল আরকি...
তুহিন: কেন?কি হয়েছে?
প্রোমা: তেমন কিছুই না,ঐ একটু...আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন,আমি খাবার রেডি করছি
(প্রোমা একটু এগোতেই মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল,তুহিন ছুটে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরল তারপর বিছানায় শুইয়ে দিয়েই বাবাকে ডাকতে লাগল।কয়েকবার চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দিতেই ওর জ্ঞান ফিরে এলো)
বাবা: কিরে খোকা কি হয়েছে?
তুহিন: দেখ না বাবা প্রোমা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল
বাবা: হবে না!সারদিন তো কিছুই খায়নি...
তুহিন: কি!এসব তুমি কি বলছ বাবা?
বাবা: ঠিকইতো বলছি,কতবার করে বললাম খেয়ে নিতে কিন্তু মেয়েটা কিছুতেই শুনল না।বার বার বলছিল কিছুই খেতে ইচ্ছে করছে না
তুহিন: হুম বুঝেছি।এই পারুল যা তো,তোর ভাবির জন্যে খাবার নিয়ে আয়(কাজের মেয়ের দিকে তাকিয়ে)
পারুল: জ্বি ভাইজান
পারুল খাবার দিয়ে গেল,বাবা সহ বাঁকিরা সবাই বেরিয়ে গেল
তুহিন: এই মেয়ে,সারাদিন কিছু খাও নি কেন?
প্রোমা: এমনি
তুহিন: ভনিতা না করে বলে ফেল
প্রোমা: না মানে আপনি খেয়েছেন কিনা তাই...
তুহিন: হোয়াট!এই মেয়ে আমার চিন্তা করতে তোমাকে কে বলেছে?
প্রোমা: কেউ বলেনি আমি এমনিই...
তুহিন: শোন প্রোমা,ডোন্ট ট্রাই টু এ্যাক্ট লাইক এ টিপিকাল ওয়াইফ।বিয়ের আগে যেমন ছিলে তেমনই থাকার চেষ্টা কর,আমার জন্যে নিজেকে বদলানোর কোন দরকার নেই...
প্রোমা: কিন্তু...
তুহিন: দেখ প্রোমা,আমাদের বিয়েটা কোন সিচুয়েশনে হয়েছে সবইতো তুমি জানো।আমার জগৎটাকে আমি সাজিয়েছিলাম সোমাকে ঘিরে কিন্তু এক মুহূর্তেই সবকিছু বদলে গেল,এখন এত তাড়াতাড়ি সোমার জায়গায় তোমাকে বসানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়...তুমি একটু বোঝার চেষ্টা কর প্লিজ...
প্রোমা: হুম😞
তুহিন: এখন ওসব বাদ দাওতো আর হা কর
প্রোমা: আমি একাই খেতে পারব তো...
তুহিন: আমি জানি তুমি পারবে কিন্তু তবুও আজ আমি নিজ হাতে তোমাকে খাইয়ে দিব।এবার কথা না বাড়িয়ে হা কর তো নাহলে দেখবে আমি কতটা খারাপ...
প্রোমা আর কি করবে বাধ্য মেয়ের মত তুহিনের হাতে খেতে লাগল...
.
(রাত ১১ টা)
কিছু্ক্ষণ আগেই সোমাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে,এখন ও চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছে।শোয়েব রুমে ঢুকল,আস্তে আস্তে সোমার দিকে এগিয়ে গেল...
সোমা: তা মিসেস সোমা,আপনার সব জারিজুরি শেষতো?আজ রাতের জন্যে আপনার প্ল্যান কি?
সোমা: (হেসে)ভাবছি আর এমন টেম্পোরারি ব্যবস্থা করে কি হবে?এবার পার্মানেন্টলিই একটা ব্যবস্থা করতে হবে...
শোয়েব: মানে?
সোমা: নিজেকে খুব চালাক ভাব তাইনা?
শোয়েব: এতে এত ভাবাভাবির কি আছে?আই এ্যাম ক্লেভার...
সোমা: আই নো দ্যাট তবে প্রয়োজনের তুলনায় নিজেকে একটু বেশিই চালাক ভাব আর অন্যদের একেবারেই বোকা কিন্তু একটা জিনিস বোধহয় ভুলে গেছ,শত্রুকে কখনও আন্ডার এস্টিমেট করতে নেই তাহলে বিশাল বড় বোকামির পরিচয় পাওয়া যায়...
শোয়েব: হোয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট?
সোমা: আচ্ছা শোয়েব,আমার বিয়েটা কবে আর কোথায় হচ্ছে এসব আপনাকে কে বলেছিল?
শোয়েব: জিসান আবার কে?
সোমা: আর জিসানকে কে বলেছিল?
শোয়েব: মে বি জাফির...
সোমা: রাইট,এবার বলুনতো আমার রুমে গিয়ে আমাকে কিডন্যাপ করার ব্যাপারে আপনাকে কে হেল্প করেছিল?
শোয়েব: ফারিয়া আর জেরিন...
সোমা: তো তোমার কি একবারও মনে হয়নি,যারা তোমার নামটাও শিনতে পারে না তারা হঠাৎ এভাবে তোমার হেল্প কেন করবে?
শোয়েব: মানে?
সোমা: মানে মি.শোয়েব,তোমার মনে হচ্ছিল তুমি আমাকে জোর করে বিয়ে করেছ কিন্তু আসল ব্যাপারটা কি জানো বিয়েটা তুমি আমাকে না,আমি তোমাকে করেছি,তুমি ভেবেছো তুমি আমাকে ফাঁদে ফেলেছো কিন্তু আসলে ফাঁদে আমি না তুমিই ধরা পড়েছো...
শোয়েব: হোয়াট!😡
সোমা: এতেই এত আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছো!বাঁকিটা শুনলেতো...
শোয়েব: কি!তোমার এত বড় সাহস!আমাকে ট্র্যাপে ফেলবে তুমি?এর শাস্তিতো তুমি পাবেই😡
সোমা: 😄😄
শোয়েব: (সোমার গলা চেপে ধরে)ইউ ব্লাডি...বল এসব কেন করেছিস?
সোমা: (এক ঝটকায় শোয়েবের হাতটা সরিয়ে দিয়ে)রিল্যাক্স মি.শোয়েব আস্তে আস্তে সবই জানতে পারবে,জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ...
শোয়েব: আমি এখনই সব জানতে চাই,জাস্ট সে ইট ইউ...
সোমা: ওকে বলছি,সেদিন রিশানকে ভিডিওটা দিতে যাওয়ার পর ঠিক কি হয়েছিল মনে আছে?
শোয়েব: ভিডিও!ভিডিওটার কথা তুমি জানলে কিভাবে?
সোমা: আমি সব জানি এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দাও...
শোয়েব: আমি রিশানকে ভিডিওটা দিলাম,ওরা ওপেন করে দেখল তারপর সবার সামনে আমাকে অনেক অপমান করল,লুজার বলে ঘোষণা করল।বেট হেরে যাওয়ায় শর্ত মোতাবেক সবকিছু করলাম আর তারপর ওদের ইনসাল্টের জবাবে তোমাকে বিয়ে করার চ্যালেঞ্জ করলাম এইতো
সোমা: হুম তো তখন কি কারো ফোন এসেছিল?
শোয়েব: হ্যাঁ ঐ জিসানের ফোনে...এক মিনিট এক মিনিট তার মানে কি তুমি...
সোমা: হ্যাঁ তোমাদের সব কথাই শুনে ফেলেছিলাম আর তারপরই...
শোয়েব: (রেগে গিয়ে)আমার সাথে গেম খেলবে!এত শখ তোমার?ঠিক আছে আজই তোমার এমন অবস্থা করব যে আবার গেম খেলার কথা চিন্তাও করতে পারবে না....
সোমা: ওয়েট ওয়েট ভুলেও সে চেষ্টা করতে যেও না,তাহলে কিন্তু বিরাট বিপদে পড়বে...
শোয়েব: কিসের বিপদ?
সোমা: (জাফিরের দেয়া প্যাকেটটা এগিয়ে ধরে)এটা দেখ তাহলেই বুঝতে পারবে
শোয়েব: কি এটা?
সোমা: বের করে দেখ তাহলেই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে...
(সোমার কথা শুনে শোয়েব ভয়ে ভয়ে প্যাকেটটা খুলল,এই মেয়েকে আর কোন ভরসা নেই।যখন যা ইচ্ছে করতে পারে)
শোয়েব: এটাতো একটা...
সোমা: এগ্রিমেন্ট পেপার..
শোয়েব: কিসের এগ্রিমেন্ট?
সোমা: খুলে পড় তাহলেই বুঝতে পারবে
(শোয়েব পেপারটা ঝটপট খুলে পড়তে লাগল,পড়ে চোখ কপালে তুলে বলল)
শোয়েব: এখানেতো লেখা আছে...
সোমা: যে বিয়ের তিন বছরের মধ্যে তুমি আমাকে ডিভোর্স দিতে পারবে না,দিলে তোমার প্রোপার্টির সিক্সটি পারসেন্টের মালিক হব আমি
শোয়েব: আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দিব না,তার আগেই তোকে আমি...
সোমা: ভুলেই সেই কাজ করতে যেও না,পরের পাতার লেখাটা পড়
শোয়েব: ওখানে আবার কোন ঘোল পাকিয়েছিস?
সোমা: (হেসে)ওখানে লেখা আছে,তোমার কাছে থাকলে আমার জীবন সংশয় ঘটতে পারে।আপনি যদি আমার কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করেন বা জোরপূর্বক আমার সাথে ফিজিক্যালি...তাহলে আইনের আওতায় আপনার বিচার করা হবে আর আগের নিয়মটাও বলবৎ থাকবে
শোয়েব: ইউ...😡
সোমা: একটা এফ আই আরও করা আছে তোমার বিরুদ্ধে।আর আমাকে যদি খুন করার চিন্তা করে থাকো সেটাও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল
শোয়েব: কেন?
সোমা: তাহলে ওই সিক্সটি পারসেন্ট প্রোপার্টির পুরোটাই অরফ্যানেজ আর ওল্ডএজ হোমের নামে চলে যাবে
শোয়েব: আমি এসবের কিছুই মানি না,আই উইল টিচ ইউ এ লেসন ফর দিস আই স্যয়ার...😡
সোমা: তুমি না মানলেও আইন মানবে ভাল করে দেখ এগ্রিমেন্টে তোমার সাইনও আছে...😏
(শোয়েব বিস্ফারিত চোখে দেখল এগ্রিমেন্টে বেশ স্পস্ট করে ওর সাইন করা আছে)
শোয়েব: কিন্তু আমিতো এমন কোন পেপারে সাইন করিনি
সোমা: করেছো
শোয়েব: না করিনি,আমি জানি আমি এমন কোন পেপারে সাইন করিনি।তুই নিশ্চয় কোন চিটিং করেছিস😡
সোমা: হ্যাঁ করেছি কিন্তু সেটা শুধু তুমি আর আমিই জানি আর কেউই এই কথা বিশ্বাস করবে না😉
শোয়েব: আমি প্রমাণ করে দিব এই সািন আমি না অন্য কেউ করেছে
সোমা: সেটা তুমি পারবে না কারণ সাইনটা তুমিই করেছো
শোয়েব: আমি বিশ্বাস করিনা
সোমা: তোমার বিশ্বাস অবিশ্বাসে কারো কোন যায় আসে না,আইন প্রমাণ চায় আর সেটা আমার কাছে আছে
শোয়েব: আবার কি প্রমাণ?
সোমা: কাল রাতে তুমি আমাকে কি কি বলেছো সবকিছুর রেকর্ডিং আছে আমার কাছে
শোয়েব: তাহলেতো কার তোমার মাথাটা কিভাবে ফেটেছে সেটাও আছে?
সোমা: আচ্ছা শোয়েব,আমাকে কি তুমি এতটাই বোকা পেয়েছো?
শোয়েব: মানে?
সোমা: মানে রেকর্ডিংয়ে সবই ছিল তবে এখন নেই,আমার জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু রেখে বাঁকিটা....
শোয়েব: ইউ...😡😡
সোমা: শোয়েব শোয়েব শোয়েব..Control yourself my dear husband just wait and see আগে আগে হোতাহে কিয়া....

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ