লাভ গেমস্ - পর্ব ১৫

লাভ গেমস্ - পর্ব ১৫

লাভ গেমস্

লেখকঃ Sanjida Afrin Shetu

পর্বঃ ১৫

(পরদিন)
চারপাশে ঘোর অন্ধকার,মাথাটা প্রচণ্ড ভারি ভারি লাগছে শোয়েবের,যন্ত্রণায় মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে।হাতদুটো উঠিয়ে মাথাটা খুব শক্ত করে চেপে ধরতে ইচ্ছে করছে কিন্তু ঠিক কি কারণে যেন হাত দুটোও তুলতে পারছে না।কেন যেন মনে হাচ্ছে হাত-পা কোনটারই কোন অস্তিত্ব নেই,ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে তাকালো শোয়েব।হঠাৎ আলোর ঝটকায় আবার চোখ বন্ধ করে ফেলল,তারপর আবার আস্তে আস্তে চোখ মেলল আর চোখ মেলতেই চমকে উঠল।
ডান হাত-পা দুটোই ব্যাণ্ডেজ করা,কিছুতেই নাড়ানো যাচ্ছে না মনে হচ্ছে কোন এনেস্থেসিয়া দেয়া হয়েছে।কপালের ডানদিকেই মনে হচ্ছে একটু কেটে গেছে তাই গজ টেপ লাগিয়ে দেয়া আছে হয়ত দুই-একটা সেলাইও দেয়া হয়েছে।চারপাশে একবার চোখ বোলাতেই পুরো ব্যপারটা ক্লিয়ার হয়ে গেল ওর কাছে,ও এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে।কিন্তু এসব কি করে হল?
খুব দ্রুত মনে করার চেষ্টা করছে শোয়েব,সকালে ঘুম থেকে উঠতে বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল তাই এক রকম দৌঁড়ঝাঁপ করেই রেডি হয়ে নিল।আসলে কয়েকদিন হল বাবার অফিসে জয়েন্ট করেছে শোয়েব আর এরই মধ্যে এমন দেরি করলে বাবা আর আস্ত রাখবে না তাই এমন তাড়াহুড়ো।কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি,সবেমাত্র সিঁড়ির কয়েকটা ধাপ নেমেছে ওমনিই পা হড়কে নিচে পড়ে গেল।তারপর আর কিছুই মনে নেই... হঠাৎই কারো ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ শুনে চিন্তায় ছেদ পড়ল শোয়েবের,পায়ের দিকে চোখ পড়তেই মেজাজটা আবার বিগড়ে গেল।ওর পায়ের পাশে বসে সোমা মুখে কাপড় দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,ওকে চোখ মেলে তাকাতে দেখেই মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল...
সোমা: তোমার জ্ঞান ফিরে এসেছে!আমি এক্ষুণি বাবাকে ডেকে নিয়ে আসছি,বাবা যে কি খুশি হবে না...😇
(শোয়েবের ইচ্ছে করছিল সোমাকে কষে দুইটা থাপ্পড় লগিয়ে দিতে কিন্তু অনেক শরীর মন কোনটাই ঠিক নেই তাই কিছু বলতেও ইচ্ছে করল না,অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিল)
(রাত ১২টা)
হসপিটালের ৩১২ নং রুমটায় একটা চেয়ারে বসে থাকতে থাকতে চোখটা একটু লেগে এসেছিল সোমার,রুমের দেয়াল ঘড়িটায় রাত ১২টার ঘণ্টা বাজতেই চমকে উঠে নড়ে চড়ে বসল।শোয়েবের দিকে একবার তাকিয়ে দেখল সে এখনও গভীর ঘুমে মগ্ন,আপনা-আপনি একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসল ওর মুখ দিয়ে।ঘুমন্ত অবস্থায় ওই মুখটা কি নিষ্পাপই না মনে হচ্ছে,কে বলবে ওই নিষ্পাপ চেহারার আড়ালে এমন একটা পশু লুকিয়ে আছে!একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোমা মনে মনে বলল...
"তুমি এমন কেন শোয়েব?আমিতো তোমাকে মন থেকেই ভালোবেসেছিলাম কিন্তু তুমি...
সে যাই হোক তুমি বিশ্বাস কর তোমার সাথে এমন করার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও ছিল না,তোমাকে এই অবস্থায় দেখতে আমার যে কি কষ্ট হচ্ছে তোমাকে বোঝাতে পারব না কিন্তু তোমাকে অমানুষ থেকে মানুষ করতে হলে এটুকুতো আমাকে করতেই হবে।জানি কষ্ট হবে তবুও তোমার ভেতরের ঐ মানুষটাকে মারার জন্য যা যা করা লাগবে সবই আমি করব..."
আজ শোয়েবকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে,ওকে ওর রুমেই রাখা হয়েছে আর বাবার নির্দেষে ওর যাবতীয় দায়-দ্বায়িত্ব এসে পড়েছে সোমার ঘাড়ে।বাবাকে খেতে দিয়ে শোয়েবের জন্যে খাবার রেডি করে নিজের রুমে আসল সোমা,প্লেটে খাবার মেখে ওর মুখের সামনে ধরতেই শোয়েব ক্ষেপে গেল...
শোয়েব: হাউ ডেয়ার ইউ...
সোমা: কিহ্
শোয়েব: আমাকে খাইয়ে দেয়ার কথা ভাবলে কি করে?
সোমা: (একটু হেসে)তা আমি না খাইয়ে দিলে তোমাকে খাওয়াবেটা কে শুনি
শোয়েব: তোমার হাতে খাওয়ার চেয়ে না খেয়ে মরে যাওয়াও ভাল
সোমা: তাই নাকি?ঠিক আছে তাহলে না খেয়েই মর,তাতে আমার কি...
শোয়েব: যাও যাও আমি একাই পারব আমার দেখভাল করতে...
সোমা: ঠিক আছে চেষ্টা করে দেখতে পারো,এই তোমার খাবার রইল আমি গেলাম...
সোমা বেরিয়ে গেল,শোয়েব অনেক কষ্টে চামচটা হাতে ধরতে পারলেও ওটা দিয়ে এক ফোঁটাও খাবার মুখে তুলতে পারল না।হাতের ব্যথায় চামচটাও হাত থেকে পড়ে গেল,তখনই সোমা রুমে ঢুকল।শোয়েবের হাত থেকে এক ঝটকায় খাবারের প্লেটটা সরিয়ে নিল তারপর নিজ হাতে মেখে আবারও শোয়েবের মুখের সামনে ধরল।শোয়েব নাক মুখ কুঁচকে মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিল..
সোমা: (রেগে গিয়ে)অনেক হয়েছে, আর না।এবার চুপচাপ খেয়ে নাও বলছি নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে😠
শোয়েব: বললামতো খাব না,কেন এত ন্যাকামি করছ?
সোমা: ন্যাকামি আমি করছি নাকি তুমি?শুনুন মি.শোয়েব আমি আপনার বাবা না যে আপনার সব জেদ,সব অন্যায় আবদার মুখ বুজে সহ্য করে নিব।চুপচাপ খাবারটা খেয়ে নাও বলছি নাহলে...
শোয়েব: নাহলে?কি করবে শুনি...
সোমা: নাহলে তোমার এই যে ভাঙ্গা হাত-পা দেখছো না,ওটার উপরেই বাঁশ দিয়ে বাড়ি দিব আর আমি যে চাইলেই তা করতে পারি সেটা তুমি খুব ভাল করেই জানো।সো আর কোন ঝামেলা না করে চুপচাপ মুখ খোল আমার হাতে তোমার মত অতটা সময় নেই সো হারি আপ...
(শোয়েব আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ সোমার হাতে খেতে লাগল আর সোমা মুচকি হেসে ওকে খাইয়ে দিতে লাগল...)
(খাওয়া শেষে সোমা ঔষধ খাওয়াতে গেলে শোয়েব বাঁধা দিয়ে বলল)
শোয়েব: এত নাটক কেন করছ জানতে পারি?
সোমা: (চমকে উঠে)নাটক!😮
শোয়েব: কি ভেবেছো,আমি কিছুই বুঝতে পারব না?
সোমা: (অবাক হয়ে)কি বুঝবে?
শোয়েব: এসব নাটক করলে ভেবেছো আমি বুঝতেও পারব না যে আমার এই অবস্থার জন্যে তুমিই দায়ী😡
সোমা: ওহ্ তাহলে বুঝেই যখন ফেলেছো আর লুকিয়ে কি লাভ?ঠিক ই ধরেছো আমিই করেছি এসব...
শোয়েব: কিন্তু কেন?
সোমা: তুমি সেদিন কিচেনে আমার কোমড় ভাঙ্গার ব্যবস্থা করেছিলে না?তাই আমি তোমার হাত-পা সবকিছু ভাঙ্গার ব্যবস্থা করে দিয়েছি😉 
শোয়েব: ইউ...😡
সোমা: রাগ দেখিয়ে লাভ নেই,আমি ওসবে ভয় পাই না তুমি জানো
শোয়েব: এই মেয়ে তুমি আমাকে মেরে ফেলতে চাও?তাতো হবে না,আমাকে মারতে চাইলে তোমাকেও কিন্তু মরার জন্য রেডি থাকতে হবে😡
সোমা: মারার ইচ্ছে থাকলেতো আরও উপর থেকে পড়ার ব্যবস্থা করতাম,অর্ধেক সিঁড়ি নেমে আসার পর পড়ার ব্যবস্থা করতাম না
শোয়েব: মানে?
সোমা: মানেটা খুব পরিষ্কার,এত সহজে তোমাকে মরতে দিব না মাই ডিয়ার হাজবেন্ড।আগে তোমার সব পাপের শাস্তি দিব তারপর বাঁকি কাজ করব...
শোয়েব: বাঁকি কাজ?আবার কি করবে তুমি?
সোমা: সেটা সময় হলেই জানতে পারবে।আপতত মুখটা খোল ঔষধটা খাইয়ে দিই
(শোয়েব মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিল।সোমা জোর করে ওর মুখটা টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিল তারপর চোখ রাঙিয়ে বলল)
সোমা: নিজের স্বামীকে খুন করে অকালে বিধবা হওয়ার বোন ইচ্ছেই আমার নেই তাই বলছি চুপচাপ ঔষধটা খেয়ে নাও...
(শোয়েব আর কি করবে চুপচাপ সোমার কথামত কাজ করতে লাগল)
(কয়েকদিন পর)
আজ থেকে সোমা অফিসে জয়েন্ট করেছে,শোয়েব অসুস্থ থাকায় ওর জায়গাতেই কাজ করবে।অফিসে পৌঁছতেই বাবা ওকে উনার রুমে ডেকে পাঠাল...
সোমা: বাবা আসব?
বাবা: হ্যাঁ বৌমা,এসো
সোমা: আমাকে ডেকেছিলেন যে,কিছু বলবেন?
বাবা: এই ফাইলটা ধরো
সোমা: এতে কি আছে বাবা?
বাবা: আমাকে একটা ডিলের কাজে কিছুদিনের জন্য নিউইয়র্ক যেতে হবে।শোয়েব যেহেতু পারবে না তাই আমার অবর্তমানে এখানকার যাবতীয় দায়-দ্বায়িত্ব তোমাকেই সামলাতে হবে...
সোমা: কিন্তু বাবা,আমি কি এত বড় দ্বায়িত্ব নিতে পারব?
বাকা: তোমার উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে বৌমা।আমি জানি তুমি ঠিক পারবে সবকিছু ম্যানেজ করে নিতে,আমার ঐ অমানুষ ছেলেটাকে যে মেয়ে এত ভালোভাবে সামলাচ্ছে তার কাছে তো এসব কিছুই না...
সোমা: (বাবাকে সালাম করে)দোয়া করবেন বাবা,আমি যেন আমার উপর দেয়া সব দ্বায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারি
বাবা: অবশ্যই বৌমা,আর একটা কথা তুমি আজ একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যাও।সন্ধ্যায় শোয়েবের বন্ধুরা আসবে ওকে দেখতে,তোমাদের বিয়ের পরে এই 
প্রথম ওরা আসছে এ বাড়িতে তাই ওদের যেন কোন অসম্মান না হয় সেদিকে খেয়াল রেখো
(শোয়েবের বন্ধুদদের কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে গেল,মনে মনে বলল ঐ মানুষরুপী জানোয়ারগুলোকে অাপ্যায়ন করতে হবে!আমার সামর্থ্য থাকলে তো ওদেরকে খুন করে ফেলতাম।অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল...)
সোমা: আচ্ছা বাবা,তাই হবে
(সন্ধ্যা বেলায়)
বাড়িটাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,শোয়েবের বন্ধুরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।সোমা ফ্রেশ হয়ে একটা মেরুন রঙের শাড়ি আর তার সাথে মানানসই হালকা সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলল তারপর শোয়েবের কাছে গিয়ে ওর ড্রেস চেঞ্জ করে দিয়ে ওকেও রেডি করে দিল।এই কাজটা শোয়েবের এ্যাক্সিডেন্টটার পর থেকে সোমাই করছে,শুরুতে শোয়েব আপত্তি করলেও সোমার জেদের কাছে পরাজিত হয়ে চুপচাপ ওর কথামতই সবকিছু করতে বাধ্য হয়েছে।এই মেয়েটাকে দেখে মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে শোয়েবের,ওকে এত ঘৃণা করে,সবসময় ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করে অথচ এখন এত সেবা-যত্ন করছে!এই মেয়েটার মনের মধ্যে যে কি চলছে কিছুই বুঝতে পারছে না ও...
শোয়েবকে রেডি করে ওকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ওকে নিয়ে বেরিয়ে আসল সোমা,ওর বন্ধুরা সবাই অলরেডি চলে এসেছে,শোয়েবকে আসতে দেখেই সবাই ওর দিকে ছুটে আসল।সোমা ওদেরকে হাই হ্যালো করেই সোমা সরে পড়ল
পিয়াল: হাই ব্রো,হাউ আর ইউ?
শোয়েব: ফার্স্ট ক্লাস
জিসান: হাত-পা ভেঙ্গে বসে আছিস আর বলছিস ফার্স্ট ক্লাস!
(ওদের কথা শুনে শোয়েব বেশ শব্দ করে হাসল)
রিকি: আবে ইয়ার,বুঝছিস না কেন,হাত-পা ভেঙ্গেতো ওর লাভই হয়েছে।
জিসান: কিভাবে?
রিকি: খুব ইজি,নতুন বিয়ে করেছে আর এই অসুস্থতার অজুহাতে সুন্দরী বৌয়ের সেবা-যত্ন আর আদর-সোহাগ উপভোগ করছে।রোমান্স করার উত্তম একটা সুযোগ পেয়েছে বুঝছিস না?
শোয়েব: কি যা-তা বলছিস বলতো...
জিম: কিসের যা-তা দোস্ত,ও তো ঠিকই বলেছে,আমরা তো নিজ চোখেই দেখতে পাচ্ছি ভাবী আর তোর রোমান্স...
শোয়েব: রোমান্স মাই ফুট...
পিয়াল: তুই স্বীকার কর আর না কর আমরা কিন্তু নিজ চোখেই সব দেখতে পাচ্ছি
(ওরা কথা বলছিল তখনই সোমা আসল ওখানে)
সোমা: এই শুনছ তোমার ঔষধ খাওয়ার টাইম হয়ে গেছে তো...
শোয়েব: ওহ্ হ্যাঁ
সোমা: তুমি ওদের সাথে কথা বল,আমি নিয়ে আসছি...
(সোমা চলে যেতেই সবাই একজন আরেকজনের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করল)
রিকি: তবে তোরা যাই বলিস,মালটা কিন্তু সেই...
শোয়েব: (দাঁতে দাঁত চেপে)শাট আপ রিকি...
জিম: তুই এমন রেগে যাচ্ছিস কেন?ও তো ঠিকই বলেছে,সোমার মত একটা খাসা মাল পেলে না...
(শোয়েব আর রাগ কনট্রোল করতে না পেরে হুইল চেয়ার থেকে উঠে রিকির কলার চেপে ধরল)
শোয়েব: হাউ ডেয়ার ইউ,সোমার সম্পর্কে আর একটা বাজে কথা বললে না...😡
রিশান: নাহলে কি করবি?
শোয়েব: তুই?তোকে এখানে কে আসতে বলেছে?
জিসান: আমরাই বলেছি,ওকে দেখাতে চেয়েছি তুই তোর চ্যালেঞ্জে জিতে গেছিস কিন্তু এখনতো দেখছি...
রিশান: বাহ্ শোয়েব বাহ্,মানতেই হবে তুই আসলেই একটা খিলাড়ি বস।যা বলেছিলি করে দেখিয়েছিস,বলেছিলি ঐ মেয়েকে বিয়ে করে লিগালি ওকে বিছানায় নিয়ে ভোগ করবি এন্ড ইউ হ্যাভ ডান দিস।সেল্যুট বস...এখন আরেকটা কাজ কর,আমাদেরও একটু সুযোগ দে...আমরাও একটু মালটার সাথে মজ-মাস্তি করি...
(শোয়েব রেগে গিয়ে রিশানের গালে কষে একটা থাপ্পড় দিল তারপর ওর কলার চেপে ধরে বলল)
শোয়েব: হাউ ডেয়ার ইউ টু টক এবাউট মাই ওয়াইফ লাইক দিস।খবরদার ওর ব্যাপারে আর একটা আজে বাজে কথা বললে ঐ জিহ্বা আমি টেনে ছিড়ে ফেলব আই স্যয়ার...
(তখনই সোমা ঔষধ নিয়ে ওখানে আসল।ওদেরকে এভাবে দেখে সোমা বিচলিত হয়ে বলল...)
সোমা: এই তোমরা কি করছ এসব?শোয়েব হোয়াট আর ইউ ডুইং?এত উত্তেজিত হওয়া তোমার স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর।এই তুমি চুপচাপ বসে পড় তো আর হা কর আমি ঔষধ খাইয়ে দিচ্ছি...
শোয়েব: আচ্ছা ঠিক আছে তুমি এখন যাও আমরা বন্ধুরা মিলে কিছু কথা বলব
সোমা: আর ইউ শিওর?আবার কোন ঝামেলা করবে না তো?
শোয়েব: না করব না,তুমি এখন যাও তো...
(সোমা চলে যেতেই রিশান আবার বলতে শুরু করল)
রিশাল: আরে বাহ্,আমাদের জংলি শেরতো দেখছি বৌয়ের কাছে একেবারেই ভেজা বিড়াল হয়ে গেছে😜
শোয়েব: রিশান...😡
পিয়াল: ওর উপর রাগ দেখালেই কি সত্যিটা ঢেকে রাখতে পারবি?আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি যে ইউ আর ইন লাভ উইথ সোমা...
শোয়েব: লাভ মাই ফুট,ওর মত মেয়েকে ভালোবাসার চেয়ে আমি মরে যাওয়াও বেশি পছন্দ করব...
রিশান: তাই নাকি?ঠিক আছে লেটস সি,আই নো শোয়েব ইউ আর এ লুজার এন্ড লুজার বলেই তুই ঐ গাঁইয়া মেয়েটার প্রেমে পড়েছিস...
শোয়েব: শাট আপ রিশান
জিসান: ওকে চুপ করিয়ে কোন লাভ হবে না শোয়েব,আমরা সবাই দেখেছি ওর নামে কোন বাজে কথা শুনলেই তুই যেভাবে ক্ষেপে যাচ্ছিস তাতেই প্রমাণ হয় তুই ঐ মেয়ের প্রেমে পড়েছিস...
শোয়েব: না...এটা সত্যি না...
পিয়াল: না হলেই ভাল,আর যদি সত্যি হয় তাহলে আই এ্যাম স্যরি তোকে আমরা যেমন গুরু হিসেবে দেখতাম সেই জায়গাটা হারাবি।
জিম: ঠিক বলেছিস,তোরা কি করবি জানিনা বাট কোন লুজারকে আমি অামাদের লিডার মানতে পারব না...
সবাই চলে গেছে অনেক্ষণ হয়ে গেল,শোয়েব ওর রুমে শুয়ে আছে।সোমা কিছু্ক্ষণ আগেই ওর ড্রেস চেঞ্জ করে ওকে শুইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকেছে নিজে ফ্রেশ হওয়ার জন্যে।
কিন্তু ওর কিছুতেই ঘুম আসছে না,বার বার শুধু বন্ধুদের বলা কথাগুলো কানে বাজছে।মনের মাঝে হাজারও প্রশ্ন উকি দিচ্ছে...
"আচ্ছা ওরা যা বলছিল তা কি?আমি কি সত্যিই সোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি?না না,এসব আমি কি ভাবছি?সোমার মত একটা মেয়েকে আমি...না এ কিছুতেই সম্ভব না।এই পৃথিবীতে যদি ও একমাত্র মেয়েও হয় তবুও আমি ওর প্রেমে পড়ব না,এটা কখনই সম্ভব না..."

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ